অভিনয়ে প্রথম সারির না হয়েও নাচ দিয়ে বলিউডের প্রভাবশালী তারকা হয়ে উঠেছেন নোরা ফাতেহি। গত কয়েক বছরে বলিউডের অন্যতম আলোচিত তারকা তিনি। বাটলা হাউজ, স্ট্রিট ড্যান্সার কিংবা ভারত ছবিতে তার নাচের পারফরম্যান্স তাকে বিপুল জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। মরক্কোর পরিবার থেকে আসা ও কানাডায় বেড়ে ওঠা নোরার ভারতজয় সহজ ছিল না। সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে শুনিয়েছেন তার শুরুর দিনের সংগ্রামের কথা। বিশেষত, বিভিন্ন জায়গায় অডিশন দিতে গিয়ে রীতিমতো অপমান সইতে হয়েছে তাকে।
ভারতের নাগরিক না হওয়ায় স্বভাবতই হিন্দি ভাষাজ্ঞান ছিল না নোরার। আর এতেই ভুগতে হয়েছিল। যেখানেই যেতেন অডিশন দিতে, সেখানেই নানা কটু মন্তব্য শুনতে হয়েছে। নোরার কথায়, আমি হিন্দি শিখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু অডিশনগুলো দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে উঠেছিল। মানসিকভাবে ওরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। নিজেকে বোকা মনে হচ্ছিল। অনেক কাস্টিং পরিচালক তাকে নিয়ে হাস্যরস করতেন, মুখের ওপর বিদ্রুপের হাসি হাসতেন। একটা বিশেষ ঘটনার কথা উল্লেখ করে নোরা বলেছেন সেটা তিনি জীবনে কখনো ভুলতে পারবেন না।
একজন কাস্টিং এজেন্ট একবার আমায় বলেছিলেন, আপনাকে এখানে দরকার নেই। আপনি চলে যান। এখন অনেক সমালোচনা, বিদ্রুপ সহজে মোকাবেলা করতে পারলেও পাঁচ বছর আগে বিনোদন জগতে নতুন মানুষ হিসেবে তার জন্য সেগুলো হজম করাটা খুব কঠিন ছিল। এখন এ রকম বিষয় আমি বন্ধুদের সঙ্গে হেসে উড়িয়ে দিতে পারি। কিন্তু তখন রিকশায় বসে কাঁদতাম।
পরিবারে আর্থিক সংকট থাকায় কৈশোরেই কর্মজীবনে প্রবেশ করতে হয়েছিল নোরাকে। ১৬ বছর বয়সে নিজের স্কুলের কাছে একটি শপিং মলে সেলসম্যানের কাজ করেছেন। এরপর বিভিন্ন সময় রেস্তোরাঁয় পরিচারিকা হিসেবে কাজ করেছেন। টেলিমার্কেটিংয়ে ছিলেন, এমনকি লটারির টিকিটও বিক্রি করেছেন। এরপর ভারতে এসে নৃত্য প্রতিভা দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন প্রথম সারির তারকাদের কাতারে।
নোরা এখন কাজ করছেন ড্যান্স দিওয়ানে জুনিয়রসের বিচারক হিসেবে। শিশু-কিশোরদের এ রিয়ালিটি শো বেশ জনপ্রিয়। এতে নোরার সঙ্গে বিচারক হিসেবে আরো আছেন নিতু কাপুর ও কোরিওগ্রাফার মার্জি পেসটোনজি।