ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী
অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় লঞ্চটির দুই
মাস্টারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) নৌ-আদালতের (মেরিন
কোর্ট) বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ
করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
দেন।
তারা হলেন- লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো.
রিয়াজ সিকদার ও দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে নৌপরিবহন অধিদফতরের
প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে নৌপরিবহন অধিদফতরের প্রসিকিউটিং
অফিসার বেল্লাল হোসাইন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, অভিযুক্তরা তাদের কর্তব্যে চরম অবহেলা
করে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও কলঙ্কজনক নৌ-দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসামিরা যাত্রীদের
জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বিপদে লঞ্চ ছেড়ে পালিয়েছেন। তারা কোনো জীবন রক্ষাকারী
সরঞ্জাম ব্যবহার করেননি। অগ্নিকাণ্ডের পর জাহাজ তীরে না ভিড়িয়ে চালু রেখে চরম অবহেলা
প্রদর্শন করে এই ট্রাজেডি ঘটান। এই ঘটনায় ৪১টি তাজা প্রাণ পুড়ে ছাই হয়েছে। ন্যায় বিচার
শুধু করলেই হয় না, ন্যায় বিচার দেখিয়ে দিতে হয়। আমরা আসামিদের জামিনের ব্যাপারে জোর
আপত্তি করছি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী
মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি আসামিদের জামিন প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, জামিন পেলে আসামিরা
বিচারে অংশগ্রহণ করবে এবং পলাতক হবে না।
এর আগে, গত ২৬ ডিসেম্বর স্পেশাল মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের নৌ-আদালতে নৌ-অধিদফতরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান
স্পেশাল মেরিন আইনের ৫৬/৬৬ ও ৭০ ধারায় অভিযোগ এনে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত
মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে
ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার পর
আগুনে পুড়ে যায় অভিযান-১০। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। আহত হয়ে
৮০ জনের বেশি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।