লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরে যৌতুক না পেয়ে নির্যাতন করে ও গলা টিপে স্ত্রী আরজু বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী কামাল উদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বুধবার (৩০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিরাজুদ্দৌলাহ কুতুবী এ রায় ঘোষণা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আবুল বাশার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০০৯ সালের ২ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে কামাল উদ্দীন তার স্ত্রী আরজু বেগমকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যা করে। আদালতে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত কামাল উদ্দীন (৫৩) সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের বড় বল্লভপুর গ্রামের রুস্তম আলীর পুত্র। ভিকটিম আরজু বেগম পাশ্ববর্তী দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মৃত নজির আহম্মদ পাটওয়ারীর মেয়ে। হত্যা মামলার বাদি নিহত আরজু বেগমের ভাই জগলুর রহমান। তিনি ঘটনার পরদিন ৩ জানুয়ারী লক্ষ্মীপুর সদর থানায় কামাল উদ্দীনকে প্রধান আসামী করে মোট সাত জনের নামে মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১০ মার্চ মামলার প্রধান আসামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সদর থানা পুলিশ।
এজাহার সূত্র জানায়, কামাল উদ্দীন ও আরজু বেগমের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। আরজু বেগমের ভাইয়েরা প্রবাসে থাকে। তরা ঢাকায় জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। সেখান থেকে কিছু জমি আরজু বেগমের বোন রোজিনা আক্তারকে লিখে দেওয়া হয়। এনিয়ে আরজু বেগমের স্বামী কামাল উদ্দীন ক্ষিপ্ত ছিলো। সে প্রবাস থেকে দেশে এসে তার নামেও কিছু জমি লিখে দিতে স্ত্রী আরজু বেগমের উপর চাপ প্রয়োগ করেন। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাকে নির্যাতন করতো কামাল। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়। ২০০৯ সালের ২ জানুয়ারি রাতে আরজু বেগম তার ভাই জগলুর রহমানকে ফোন করে স্বামীর নির্যাতনের কথা জানায়। কামালের নামে জমি লিখে না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকির বিষয়টি ভাইকে অবহিত করে আরজু বেগম। পরদিন সকালে আরজুর মৃত্যুর খবর পান তার পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, কামাল উদ্দীন যৌতুক হিসেবে জমি না পেয়ে তার স্ত্রী আরজু বেগমকে পিটিয়ে এবং গলাটিপে হত্যা করে।