আজঃ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

লেবাননে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

লেবাননে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। লেবাননের রাজধানীর বৈরুতের  রফিক হারিরি হাসপাতালে রফিকুল ইসলাম  দীর্ঘ ৩৪ দিন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রয়েছে।

জানা যায়, ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনজন দীর্ঘদিন ধরে লেবানন প্রবাসী। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ভাই রফিকুল ইসলামকেও তারা লেবাননে নিয়ে আসেন। বৈরুতের মাল্লা এলাকার একটি মেসে রফিকুল কয়েকজন বাংলাদেশিসহ একসঙ্গে থাকতেন।

২৮ ডিসেম্বর তিনি আরও দুই বাংলাদেশি রাতে মোটরসাইকেলে দাওড়া থেকে নিজ রুমে ফিরছিলেন। বৈরুত বন্দরের ব্যস্ততম সড়কে পৌঁছলে হঠাৎ মোটরসাইকেলটি রাস্তার খাদে পড়ে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

রফিকুল ছাড়া অন্য দুই বাংলাদেশিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে দুর্ঘটনায় রফিকুল ইসলাম মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তার অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। তাই বৈরুত দূতাবাসের চেষ্টায় তাকে রফিক হারিরি হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

নিহত রফিকুলের বড় ভাই লেবানন প্রবাসী নুরুল আলম বাংলাদেশ দূতাবাসের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন তার ভাইয়ের মরদেহ যাবতীয় কার্যাবলী শেষ করে দ্রুত দেশে পরিবারের নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা করে।


আরও খবর



টেইলর সুইফট ইফেক্টে আক্রান্ত সিঙ্গাপুর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

বৃহস্পতি তুঙ্গে বুঝি একেই বলে। ক্যারিয়ারের দারুণ সময় কাটাচ্ছেন সংগীতশিল্পী টেইলর সুইফট। মাত্র কয়েক দিন আগেই মার্কিন গায়িকা টেইলর সুইফট ৬৬তম গ্র্যামিতে চতুর্থবারের মতো অ্যালবাম অব দ্য ইয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন। টেইলরের টোকিও কনসার্ট ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল জাপানের সংগীতপ্রেমীদের মাঝে। টোকিওর রাস্তাঘাট টেইলরের ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা ভরিয়ে তুলেছিলেন পোস্টারে এবং রঙিন সব ব্যানারে।

এবার সে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে সিঙ্গাপুরেও। ৫ ও ৮ মার্চ সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে টেইলর সুইফটের কনসার্ট। আর সে উপলক্ষে সিঙ্গাপুরের কনসার্টের আগে হোটেল, বিমানের ফ্লাইট বেশিরভাগ বুক হয়ে গেছে। সংগীতপ্রেমীরা এর নাম দিয়েছেন সুইফট ইফেক্ট। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এনডিটিভির রিপোর্ট থেকে জানা যায়, দুটি কনসার্ট উপলক্ষে প্রায় ৩ লাখ সুইফটভক্ত জড়ো হয়েছে সিঙ্গাপুর শহরে।

যার ফলে বেশিরভাগ হোটেল বুকিং হয়ে গেছে, নয়তো বেশি ভাড়ায় নিতে হচ্ছে সংগীতপ্রেমীদের। ম্যানিলা থেকে সিঙ্গাপুরে সুইফটের কনসার্ট দেখতে আসা ইনগ্রিড ডেলগাডো বলেন, ‌কনসার্টের জন্য এখানকার হোটেলের বেশিরভাগ কক্ষই আগে থেকে বুকিং হয়ে গেছে। আমাকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে একটি কক্ষ ভাড়া নিতে।

সিঙ্গাপুরের ফুলারটন হোটেল, ফেয়ারমন্ট হোটেল এএফপিকে জানিয়েছে, কনসার্টের সময় কক্ষের চাহিদা বেড়েছে। এত বেশি পর্যটককে সার্ভিস দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরে অনুষ্ঠিত টেইলর সুইফটের কনসার্ট দর্শক সমাগমের দিক থেকে আগের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছিল। সেবার বলা হয়েছিল, সর্বকালের সর্ববৃহৎ সংগীতের আয়োজন ছিল সেটি।

নিউজ ট্যাগ: টেইলর সুইফট

আরও খবর



ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে আগামী সপ্তাহে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসবে আগামী সপ্তাহে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সাপ্লাই চেইন মজবুত ও শক্তিশালী করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সাপ্লাই চেইনের কোথাও যেন কোনো ঘাটতি না থাকে, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহেই ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাজার পরিচালনা কমিটির সহোযোগিতা না থাকলে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়। শিগগিরই বাজারের সকল ব্যবসায়ীকে নিয়ে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হবে।

এসময় তিনি জানান, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে ছোলা ও চিনির সরবরাহ আছে। কৃষিপণ্য বাজারে আসার আগে হাতবদলসহ সর্বক্ষেত্রে তদারকি বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় শুধুমাত্র রমজান মাসে নয়, সারা বছরই অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম।


আরও খবর
দেশে এলো এক হাজার টন আলু

বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪




শ্রীলংকাকে হারিয়ে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

নাজমুল হোসেন শান্তর হাফসেঞ্চুরি হতে তখন দরকার ৩ রান, জয়ের জন্য প্রয়োজন ২। অধিনায়ক দলকে জয় এনে দিলেন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে। নিজের ফিফটিও হলো, বাংলাদেশও মাতলো জয়োল্লাসে।

প্রথম ম্যাচে অসাধ্য সাধনের কাছে এসেও পারেনি বাংলাদেশ। বাঁচামরার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালো স্বাগতিকরা। শ্রীলঙ্কাকে রীতিমত নাকাল করে দাপুটে এক জয় তুলে নিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ (বুধবার) বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেট আর ১১ বল হাতে রেখে। তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে টাইগাররা।

রান তাড়ায় ভালো শুরু করেন সৌম্য সরকার আর লিটন দাস। লিটনকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখালেও সৌম্য অবশ্য শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন। বারকয়েক বেঁচে যান আউট থেকে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তো আম্পায়ার আউট দিয়েই বসেছিলেন।

বিনুরা ফার্নান্দোর শর্ট লেংথের বলে পুল করেছিলেন সৌম্য। বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। শ্রীলঙ্কার আবেদনে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার গাজী সোহেল আঙুল তুলে দেন। সৌম্য সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিয়ে নেন। আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা যায়।

কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার মাসুদুর রহমান নটআউট ঘোষণা করেন সৌম্যকে। বল আর ব্যাটের মধ্যে যথেষ্ট ফাঁক ছিল দাবি করেন আম্পায়ার। স্পাইকও বল ব্যাট পেরিয়ে যাওয়ার পর এসেছে, জানানো হয়। যে আউট নিয়ে মাঠে অনেকটা সময় খেলা বন্ধ করে রেখেছিলেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা।

ওপেনিং জুটিতে আসে ৪১ বলে ৬৮ রান। সৌম্য সুযোগ পেয়ে যে খুব কাজে লাগাতে পেরেছেন, তা না। ১৪ রানে জীবন পেয়েছিলেন, এরপর ২২ বলে ২৬ করে পাথিরানার বলে ম্যাথিউসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। পাথিরানা নিজের পরের ওভারে এসে তুলে নেন লিটনকেও। ২৪ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় লিটনের ব্যাট থেকে আসে ৩৬।

সেখান থেকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ম্যাচ বের করে নিয়ে আসেন তাওহিদ হৃদয় আর নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫৫ বলে তারা অবিচ্ছিন্ন থাকেন ৮৭ রানে। শান্ত ৩৮ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় করেন ৫৩, হৃদয়ের ব্যাট থেকে ২৫ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় আসে ৩২ রান।

এর আগে শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানে আটকে রাখে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শরিফুল ইসলাম বোলিং ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শুরু করেন মেইডেন দিয়ে। প্রথম ওভারে এক রানও নিতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।

দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদও সেই চাপ ধরে রাখেন। ৫ রান দিয়ে তুলে নেন আভিষ্কা ফার্নান্ডোর উইকেট। ৭ বলে ০ করা ফার্নান্ডো ঝুঁকি নিতে গিয়ে বল তুলে দিয়েছিলেন আকাশে, তাসকিন নিজেই নেন ক্যাচ। ১ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

তবে শুরুর সেই চাপ ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তাসকিন দেন ১৭ রান, পঞ্চম ওভারে শেখ মেহেদি ৯। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান বল হাতে নিয়ে বিলিয়ে দেন ১৫ রান। ফলে প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটেই ৪৯ রান তুলে ফেলে লঙ্কানরা।

দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ বলে ৬৬ রান যোগ করেন কুশল মেন্ডিস আর কামিন্দু মেন্ডিস। অবশেষে সৌম্য সরকারকে বোলিংয়ে এনে এই জুটিটি ভাঙেন অধিনায়ক। ২২ বলে ৩৬ করে কুশল মেন্ডিস ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষককে।

কামিন্দু মেন্ডিস মারমুখী হয়ে উঠছিলেন ক্রমেই। দারুণ বোলিং করা রিশাদ হোসেনকে মেরেছিলেন ছক্কা। তবে পরের বলেই সঙ্গীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটের ফাঁদে পড়তে হয় তাকে। ২৭ বলে করেন ৩৭। এরপর সাদিরা সামারাবিক্রমাকে আটকে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১১ বলে ৭ করে মোস্তাফিজের কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আসেন সাদিরা।

১৪তম ওভারে জোড়া ছক্কা খেয়ে চারিথ আসালাঙ্কাকে বোল্ড করেন শেখ মেহেদি। আসালাঙ্কা ১৪ বলেই দুইশ স্ট্রাইকরেটে করেন ২৮। ১১২ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

শেষদিকে ৩৬ বলে ৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে লঙ্কানদের লড়াকু পুঁজি এনে দেন দাসুন শানাকা আর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। শানাকা ১৮ বলে ২০ আর ম্যাথিউস ২১ বলে করেন ৩২ রান।

শরিফুল উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচ করেন। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন শেখ মেহেদি। ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন এই অফস্পিনার। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৪২ এবং তাসকিন ৩৮ রান দিয়ে নেন একটি করে উইকেট। সৌম্য সরকার ১ ওভারে ৫ রানে নেন এক উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা: ১৬৫/৫, ২০ ওভার (কামিন্দু মেন্ডিস ৩৭, কুশল মেন্ডিস ৩৬, ম্যাথিউজ ৩২*; তাসকিন ১/৩৮, মেহেদী হাসান ১/৩৯, সৌম্য ১/৫)।

বাংলাদেশ: ১৭০/২, ১৮.১ ওভার (নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৩*, লিটন ৩৬, তাওহিদ হৃদয় ৩২*, সৌম্য ২৬; মাথিসা পাতিরানা ২/২৮)।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




‘কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে অন্যায় করেছি, আজ আমি অনার্স ফেল’

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ঠিক সে সময়ে উঠে এল আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অবন্তিকার মতো শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাবের শিকার হন ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের ১৩তম আবর্তন ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

মিম জানান, দুই বছর আগে যৌন হয়রানি ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলে এখনো বিচার পাননি তিনি। উল্টো তাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেল করানো হয়েছে। এমনকি তার মা-বাবাকে অভিযোগ প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে ওই ছাত্রী বলেন, কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে অন্যায় করেছি বলে আমার মনে হয়। কারণ, আজকে আমি ফেল। আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে। কোনো মহিলা টিচারের অনুপস্থিতিতে আমাকে দরজা আটকে জোর জবরদস্তি করা করা হয়। আমি হয়ত তার মতো সাহসী হতে পারি নাই। তার জন্য হয়ত আমি মারা যাই নাই। কে জানে এর পর আমি বেঁচে থাকব কি না। আমাকে একঘরে করে দিয়েছে শিক্ষকেরা। আমাকে অনার্সের ভাইভায় ফেল করানো হয়েছে। প্রতিবাদের ফলাফলস্বরূপ আজকে আমি অনার্স ফেল। একজন শিক্ষক আমাকে ৪০ মার্কের ইনকোর্স পরীক্ষায় ডাবল শূন্য দিয়েছে। এটা তো খুন। এভাবে সমাজে একের পর এক মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে খুন করে ফেলা হচ্ছে।’

‘আমি যখন অভিযোগ দায়ের করি, তখন কোনো সেল ছিল না। কোনো সেল না থাকায় আমাকে সরাসরি উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে হয়েছিল। উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগ দায়ের করায় আমার ওপর অনেক ধরনের প্রেশার আসে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি তারা আমার গ্রামের বাড়িতে পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। আমার বাবা-মা অসুস্থ, তাদের ওপর প্রেশার করেছে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য। অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় আমাকে বিভাগের রুমে কোনো মহিলা টিচারের অনুপস্থিতিতে দরজা আটকে জোর জবরদস্তি করা হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সাংবাদিক সমিতি আছে সেখানে ওই টিচার ক্ষমতাবলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেছে আমার প্রসঙ্গে যেন কোনো নিউজ না আসে।’

ওই ছাত্রী আরও বলেন, আমি যে এত স্বাভাবিকভাবে কথা বলার চেষ্টা করছি- আমি ভেতর থেকে এতটা স্বাভাবিক না। আমার একটা অভিযোগ দায়ের করার কারণে ওইটা যেন অপরাধ হয়ে উঠেছে। আমার ক্লাসমেটরা আমার সঙ্গে মিশতে ভয় পায়। আমি দুই বছর যাবৎ কারও সঙ্গে মিশতে পারি না। আমাকে একা করে ফেলা হয়েছে। ওই শিক্ষক ডিপার্টমেন্ট বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াই। উনাকে কোনো লিভে পাঠানো হয় নাই। আমাকে এইট সেমিস্টারে ফেল করানো হয়েছে। আমার এসাইমেন্ট টিচাররা নিতে চাই না। আমাকে সেভেন সেমিস্টারে ফেল করানো হয়েছে। আমাকে অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ভাইভায় ফেল করানো হয়েছে।’

‘আমি আজীবন পড়াশোনা ব্যতীত কিছুই করিনি। আমি ননপলিটিক্যাল ছাত্রী। আমি কোনো অর্গানাইজেশনে জড়িত না। সেখান থেকে আমার জন্য সহজ ছিল না প্রতিবাদ করার। আমার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণে আমি প্রতিবাদ করেছি। সেই  প্রতিবাদের ফলাফল স্বরূপ আজকে আমি অনার্স ফেল। প্রতিবাদ করা আমার অন্যায় ছিল। আমার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আমি মিশতে পারি না। আমি যতই হাই ক্যালিভার আমি প্রকাশ করি- আমি  মার্কস পাই না। আমার কি তাহলে উচিত ছিল ওই শিক্ষকের কুপ্রস্তাবে রাজি হওয়া। আমি রাজি না হয়ে অনেক বড় অন্যায় করেছি। আমি মার্কসিট পুণর্মূল্যায়নের আবেদন জানালেও তা করা হয়নি। এবার চেয়ারম্যান স্যার উনার দুইটা কোর্সে আমাকে ১০০ এর মধ্যে তিন দিয়েছেন। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি কতটুকু খারাপ মেধার অধিকারী হলে আমি তিন পাই। আমার প্রসঙ্গে আমি বুজতে পারি আমার মেরুদণ্ড কতটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমাকে কাউন্সিলিং নিতে হয়। আমিতো স্বাভাবিক না। আমার বিভাগে এমনকি ক্যাম্পাসে অনেক আছে- এই একটা কারণে কেউ প্রকাশ করে না।’

‘আজকে যে অবন্তিকা মারা গেল, দেড় বছর আগে থেকে যুদ্ধ করে আসছে- মেয়েটা যদি বিচার পেত তাহলে কি আজ মারা যেত? এটা তো খুন। এভাবে সমাজে একের পর এক মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের খুন করে ফেলা হচ্ছে। সে বিচার পেলে আজ এই ঘটনা ঘটত না।’

অভিযুক্ত কে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ছাত্রী বলেন, উনি ছিলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্মের একজন এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার। উনি সিনেমা নির্মাণ করেন, আবার আমার বিভাগের লেকচারার ছিলেন। এখনো উনি বহল আছেন। উনি আমাকে কাজের জন্য উনার অফিস রুমে ডেকে নিয়ে হ্যারাজ করেন। এটা নিয়ে আমি অনেকদিন ভুগেছি। যখন আমার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে- আমাকে প্রতিনিয়ত ফেল করানো হচ্ছে, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু বলা হচ্ছে। আমার বাবাকে বলা হচ্ছে-আপনার মেয়েকে বহিষ্কার করে দেব। নতুন করে যে কিমিটি করা হয়, এখন যিনি ভিসি আছেন তিনি ওই কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। ভিসি সাদেকা হালিম ম্যাডাম অনেক নারী বান্ধব।’

‘কিন্তু ম্যাডামের উপস্থিতি থাকা স্বত্বেও আমি এখন পর্যন্ত বিচার পেলাম না। কয়েক দফা রিপোর্ট আসা স্বত্বেও ওই আবু সাইদ ইমন যিনি শিক্ষক এবং উনাকে সাহায্যকারী আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান স্যার অধ্যাপক জুনাইদ হালিম এতগুলো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসার পরও উনারা সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছন। একজন শিক্ষক কতটা বেহায়া হলে নিজের দোষ ঢাকতে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যায়। সুপ্রিম কোর্ট থেকেও তারা হেরে গেছেন। তারা সিন্ডিকেটের প্রতিবেদন না মেনে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছেন। উনি ইমপ্রেস টেলিফিল্মের একজন এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার বলে ক্ষমতা বলে কি সকাল জায়গায় পার পেয়ে যাবেন।’

অন্যরা অভিযোগ না করার বিষয়ে ওই ছাত্রী বলেন, ফেল করার ভয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাইদ ইমনের বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীরা কোনো কথা বলেন। আমিতো ফেল করে গেছি। আমারতো স্টুডেন্ডশিপের কোনো ভয় নাই। আমি রাস্তা দিয়ে যখন চলাফেরা করি-তখন আততায়ীরা আমাকে ফেরে ফেলতে পারে। আমি সারাক্ষণ অনিরাপত্তায় ভুগি। আমার পরিবার অনিরাপত্তায় ভোগে। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে না বা প্রকাশ করছে না তারাও যে নিরাপদ না বিষয়টা তেমন না। একজন শিক্ষার্থী যখন যৌন হয়রানির অভিযোগ দেয়-তখন তার চরিত্র নিয়ে যেসব কথা বলা হয় তা প্রকাশ করা যায় না। আমার বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে যখনই কেউ কথা বলেন-তখনই আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলেন।’


আরও খবর



টেকনাফ থেকে আবারও ৮ জনকে অপহরণ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে আবারও ৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং বাদিবন্যা পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গল কাটতে ও গরু চরাতে গিয়ে তারা অপহৃত হন।

অপহৃতরা হলেন- টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচিপাড়া এলাকার বেলালের দুই ছেলে জুনাইদ (১২) ও মোহাম্মদ নূর (১০), একই এলাকার লেদুর ছেলে শাকিল (১৫), শহর আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫), নুরুল ইসলামের ছেলে আকতার (২৫), নাজির হোসেনের ছেলে ইসমাইল প্রকাশ সোনায়া (২৪), রৈক্ষং এলাকার কালা মিয়ার ছেলে ছৈয়দ হোছাইন বাবুল (৩৩) এবং একই এলাকার আকবরের ছেলে ফজল কাদের (৪৫)।

অপহরণ হওয়া শাকিলের বাবা লেদু মিয়া বলেন, প্রতিদিনের মতো আমার ছেলে শাকিল গরু চরাতে যায় হোয়াইক্যং বাদিবন্যা পাহাড়ে। দুপুরে অপহরণকারী আমাকে ফোন করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি গরিব মানুষ মাটি কেটে সংসার চালাই। টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে তারা। আমার ভাই ফরিদ আলমও অপহরণের শিকার। প্রশাসনের কাছে ভাই ও ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের দাবি জানাই। 

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, তিনি মুক্তিপণ দাবি করার বিষয়টি জানেন না।

এর আগে ২১ মার্চ ভোরে হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি হন পাঁচ কৃষক। পরে মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসেন তারা। ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে মাদরাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে (৬) অপহরণ করা হয়। তবে এখনও তাকে উদ্ধার করা যায়নি।

জানা যায়, গত এক বছরে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে ১০৩ জনকে অপহরণ করা হয়। তাদের মধ্যে ৫২ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা।

নিউজ ট্যাগ: টেকনাফ

আরও খবর