ভাস্কর্য ইস্যুতে দেওয়া তার বক্তব্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অস্ত্রহাতে লড়াই করে পাওয়া বাংলাদেশের মৌল চাওয়াগুলোকে আরও একবার স্পষ্ট করেছে। একইভাবে এসপির বক্তব্যের বিরুদ্ধে
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু ও বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাতের বক্তব্যের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা মনে করছেন, এই পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলেছেন।
রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। বিশিষ্ট ১১ জনের পক্ষে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ। বিবৃতি দাতারা হলেন— সারোয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, আবদুস সেলিম, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ, হাসান আরিফ ও আহকামউল্লাহ।
বিবৃতিতে বলা হয়, কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু ও বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জেলার এসপি এসএম তানভীর আরাফাত একটি বক্তব্য দিয়েছেন। ইউটিইবে ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যটি আরও অনেকের মতো আমাদেরও শোনার সুযোগ হয়েছে। আমরা মনে করি এই পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলেছেন।
ভাস্কর্য ইস্যুতে দেওয়া তার বক্তব্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অস্ত্রহাতে লড়াই করে পাওয়া বাংলাদেশের মৌল চাওয়াগুলোকে আরও একবার স্পষ্ট করেছে। একইভাবে এসপির বক্তব্যের বিরুদ্ধে দেওয়া হেফাজতে ইসলামের বিবৃতি তাদের একাত্তরের চেতনাবিরোধী অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। রাজারবাগে ইতিহাস সৃষ্টিকরা সেই বিদ্রোহী চেতনাই কুষ্টিয়ার এসপির বক্তব্যে লক্ষ্য করেছি। তিনি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষে সচেতন এবং সুদৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন।
এসপির বক্তব্যের বিরোধীতাকারী এই অংশটিকে আমরা খুব ভালোভাবে চিনি। তারা একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি। বর্বর পাকিস্তানিদের প্রজন্ম। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয়ে সামনে আসে। কখনো জামায়াত-শিবির, কখনো হেফাজত। তারা আজও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এই কারণে তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এর পর আর তাদের কোন ছাড় দেওয়া যায় না।
এ কারণেই এসপি এই উগ্রবাদীদের চূড়ান্তভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন বলে আমরা মনে করি। অথচ আমরা দেখছি উগ্রবাদীরা সতর্ক না হয়ে উল্টো এসপির বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন। বিষেদগার করছেন, হুমকি দিচ্ছেন। এর কারণ আর কিছু নয়, ভাস্কর্য ভাঙচুর ও নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের গ্রেফতারের ইস্যুটি থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরানোর কৌশলী চেষ্টা মাত্র। এ অবস্থায় আমরা হুমিকদাতাদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানাই আমরা। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।