কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়াবাসীর
দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পুরণ করতেই ১৯৫ কোটি ৭৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২টি সড়কের
উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবাব (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকার
গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এই দু’টি সড়ক উদ্বোধন করেন। সারা দেশে ২ হাজার কিলোমিটার উন্নয়নকৃত মহাসড়কের
মধ্যে কুষ্টিয়ায় ৩৩.৯৮৫ কিলোমিটার সড়ক উদ্বোধন করেন।
কুষ্টিয়া সড়ক
ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম আজাদ খান জানান, সড়ক ২টির মধ্যে
আহলাদিপুর—রাজবাড়ী—পাংশা—কুমারখালী—কুষ্টিয়া(চৌড়হাস) (আর ৭১০) মহাসড়কটি কুষ্টিয়া হতে রাজবাড়ী হয়ে
ঢাকা যাতায়াতের অন্যতম সড়কপথ। আহলাদিপুর—রাজবাড়ী—পাংশা—খোকসা—কুমারখালী—কুষ্টিয়া চৌড়হাস) আঞ্চলিক মহাসড়কটি রাজবাড়ী জেলার আহলাদিপুর হতে
শুরু হয়ে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা ও কুমারখালী উপজেলা হয়ে কুষ্টিয়া চৌড়হাস নামক স্থানে
শেষ হয়েছে। মহাসড়কটি কুষ্টিয়া হতে ঢাকা যোগাযোগের অন্যতম সহজ মাধ্যম হওয়ায় মেহেরপুর
ও কুষ্টিয়া জেলা হতে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন এবং সকল আন্তঃজেলা বাসসহ প্রতিদিন প্রচুর
সংখ্যক যানবাহন চলাচল করায় মহাসড়কটি যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করছে। উক্ত সড়কটির কুষ্টিয়া অংশের ২৮.৫৫ মিলোমিটার ১৭৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত
হয়েছে। এই প্রকল্পে রাস্তা মজবুতিকরণ, প্রশস্তকরণ ও সার্ফিসিং সহ অন্যান্য কাজ করা
হয়েছে। এ ছাড়া চড়াইকোল—শিলাইদহ (আর ৭১৩) মহাসড়কের আলাউদ্দিন মোড় হতে শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের কুঠিবাড়ী পর্যন্ত ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫.৪৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
এই সড়কদিয়ে প্রচুর পরিমাণে দর্শনার্থী বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত
কুঠিবাড়ীতে ভীড় জমায়। সড়কটি নির্মাণ করায় দর্শনার্থীদের আকর্ষণ আরো বেড়ে গেছে।
এই প্রকল্পে রাস্তা মজবুতিকরণ, প্রশস্তকরণ ও সার্ফিসিং সহ অন্যান্য কাজ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,
প্রকল্পটি কুষ্টিয়া সন্নিহিত এলাকার দূর্ঘটনা হ্রাস ও যানযট নিরসনসহ নিরবচ্ছিন্ন সড়ক
নেটওয়ার্ক স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একই সাথে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে কুষ্টিয়াবাসীর দীর্ঘদীনের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি বর্তমান
গৃহীত মহাসড়ক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যোগ হলো সফলতার আরও একটি নতুন মাত্র।
এই প্রকল্পের
ডাব্লিউপি—০৭ প্যাকেজে ১৪.৯৪৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্বে ছিলেন ঠিকাদার
প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম বিল্ডার্স (প্রাঃ ) লিঃ ও জহিরুল লিঃ—জেভি। উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ৮ মার্চ
২০১৮ সালে ৯৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার কার্যাদেশ পেয়ে ২০২০ সালের ১১ মার্চ শেষ করেন। ডব্লিউপি—০৮ প্যাকেজে ৮৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা
ব্যয়ে ১৩.৬১০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পান আব্দুল মোনেম লিঃ — রানা বিল্ডার্স লিঃ, জহিরুল লিঃ—জেভি। তিনি ২০১৮ সালের ৫ই মার্চ
কার্যাদেশ পেয়ে ২০২০ সালের ২৯ মার্চ সড়ক নির্মাণ শেষ করেন। ডব্লিউপি—৯ প্যাকেজে ৫.৪৩৫ কিলোমিটার সড়ক
১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারী কার্যাদেশ নিয়ে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারী
সড়ক নির্মাণ শেষ করেন ঠিকাদার জহিরুল লিমিটেড।
উক্ত সড়ক ২টি
উদ্বোধন উপলক্ষে রাস্তার দু’পাশে ব্যানার, ফেসটুনসহ বিভিন্ন ধরণের রঙ্গিন কাপড় লাগিয়ে সাজিয়ে
তুলেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।