কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ি এলাকায় টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ও চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়াডের সবুজপাড়া এলাকায় হরিজন পল্লীতে আটদিন ধরে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে (গুচ্ছগ্রাম) জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন সুবিধাভোগীরা।
এতে করে জলবদ্ধতায় প্রকল্পে চলাচলের সড়ক তলিয়ে থাকায় শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বিশুদ্ধ পানির সকটে ভুগছেন। তারা বিশুদ্ধ পানিসহ প্রকল্পে চলাচলের সড়ক চলাচলের উপযোগী চান।
বুধবার (৩০ আগস্ট) সরেজমিনে উলিপুরের ধরণীবাড়ীর মুন্সিবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ও চিলমারীর থানাহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়াডের সবুজপাড়ায় হরিজন পল্লী আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের ভিতরে চলাচলের রাস্তায় প্রায় দেড় ফুট উচ্চতায় পানি জমে আছে। টানা কয়েকদিনের জলাবদ্ধতায় পানিতে শ্যাওলা জন্মাতে শুরু করেছে। নির্গমনের পথ না থাকায় নোংরা ও অর্ধপঁচা এসব পানি ও কাদা মাড়িয়ে চলাচল করছেন আশ্রয়ণের নারী-পুরুষ ও শিশুরা। ঘরের বারান্দার সামনে পানি, চারপাশে পানি। নোংরা এসব পানির মাঝেই বাস করছেন তারা।
উলিপুরের আশ্রয়ণের বাসিন্দা খুশি বেগম বলেন, ‘আমাদের থাকার জায়গা নাই জন্যে ঘর দিছে। এই ঘরে আমরা আছি। আমরা তো খাবার চাই নাই। একটু মাটি কাটি দিলে আমাদের উপকার হয়।’
আরেক বাসিন্দা মেনেকা রাণী বলেন, ‘আমাদের কারো এমন দুর্দশা নাই। এমন করি বাস করা যায়? চাইরপাশে পানি। একটু বৃষ্টি হইলে পানি জমি থাকে। আইজ না হইলেও ২১ দিন ধরি পানি। ঘর থাকি বের হওয়া যায় না। বাড়িত একটা প্রতিবন্ধী বাচ্চা। পানিত পড়ার ভয়ে সউগ সময় চিন্তায় থাকি। স্বামী ভাড়ায় অটো চালায়। সেটাও বারান্দা থাকি নামবার পাই না। কামাইয়ো বন্ধ।'
আরেক বাসিন্দা শ্রী রুমা রাণী বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের চারিদিকে পানি থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি, সব সময় ভয়ে থাকতে হচ্ছে।
চিলমারীর হরিজন পল্লী আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পানি বন্দি থাকলেও এখনো সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো খাদ্যে সহায়তা পাননি তারা।
এবিষয়ে চিলমারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাফিউল আলম বলেন, হরিজন সম্প্রদায়সহ পানিবন্দি মানুষদের তালিকা করা হচ্ছে। ২/১ দিনের মধ্যে তাদের মাঝে খাদ্যে সহায়তা প্রদান করা হবে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা বলেন, ‘মুন্সিবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পটি আমি যোগদান করার পূর্বে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্পে জলাবদ্ধতার বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। প্রকল্পে মাটি ভরাট ও সড়ক সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়েছে কি না সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখবো।’