কুরবানি একটি
গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান পুরুষ-নারীর ওপর কুরবানি ওয়াজিব। এটি ইসলামের মৌলিক
ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
আদম (আ.) থেকে
শুরু করে সব নবীর যুগেই কুরবানি পালিত হয়েছে।এটি ‘শাআইরে ইসলাম’ তথা ইসলামের প্রতীকী বিধানাবলির অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং এর মাধ্যমে
‘শাআইরে ইসলামের’বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া
গরিব-দুখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আমাদের আশপাশে অনেক প্রতিবেশী
রয়েছে। যারা অন্য ধর্মের। এক্ষেত্রে অনেকের মনে হয়তো প্রশ্ন দেখা দিতে পারে কুরবানির
মাংস অমুসলিমদের দেওয়া যাবে কি না? আসুন জেনে নেই এ বিষয়ে কুরআন-হাদীস কী বলে?
কোনো কোনো মুসলিমদের
ধারণা কুরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া যাবে না। এ ধারনা ঠিক না। কুরবানির মাংস অমুসলিমদের
দেওয়া যায়। এতে অসুবিধার কিছু নেই। বিশেষত অমুসলিম যদি প্রতিবেশী হয়। কারণ প্রতিবেশী
হিসেবে তার হক রয়েছে। সাহাবীগণ অমুসলিম প্রতিবেশীর হকের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখতেন।
আব্দুল্লাজ ইবনে
আমর (রা.) এর বাড়িতে একবার একটি বকরি (ছাগল) জবেহ করা হল। যখন তিনি বাড়িতে ফিরলেন জিজ্ঞস
করলেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে এ গোশত হাদিয়া (দান) পাঠিয়েছ? এভাবে দুবার
জিজ্ঞেস করলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (স.) কে বলতে শুনেছি।
প্রতিবেশীর অধিকার
প্রসঙ্গে জিবরাইল (আ.) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতেন। এমনকি আমার ধারনা হল যে হয়ত শীঘ্রই
প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৪৩)
সুতরাং অমুসলিমকে
কুরবানীর মাংসসহ অন্যান্য যে কোনো জিনিস দান করা যাবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
‘দ্বীনের ব্যাপারে
যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি
মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যাংবিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়নদের
ভালোবাসেন।
আল্লাহ কেবল তাদের
সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।
তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে সহায়তা করেছে। তাদের
সঙ্গে যারা বন্ধুত্ব করে তারা তো জালেম।’ (সূরা মুমতাহিনা ৬০:৮-৯)