মৌসুমি বায়ু
সক্রিয় থাকায় টানা ৬দিন ধরে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত
অব্যাহত রয়েছে। এতে করে টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। জরুরি প্রয়োজন
ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র
ও দুধকুমার সহ সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। জেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল সহ কিছু কাঁচা
পাকা সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অব্যাহত বর্ষণে বিপাকে পরেছেন রিকশা চালক, ভ্যান
চালক, ঘোড়ার গাড়ি চালক সহ খেটে-খাওয়া নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা। এসব শ্রেণি পেশার
অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে পলিথিন মুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহে বেরিয়েছেন। আজ রবিবার (২৪
সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাথায় পলিথিন মুড়িয়ে সকালেই ঘর থেকে বেরিয়েছেন চর কুড়িগ্রামের রিকশা চালক আইনুল মিয়া (৫৮)। দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শহরের পুরাতন থানা পাড়া এলাকায় বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালাতে দেখা যায় তাঁকে।
এসময় কথা হলে
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারনে কয়েকদিন থেকে ঠিকমতো রিকশা চালাতে পারছিনা। আজ সকালে রিকশা
নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। কিন্তু বৃষ্টি তো থামছেই না। বৃষ্টির কারনে রাস্তায় যাত্রীও
মিলছে না। কিন্তু আয় না হলে পরিবারকে খাওয়াবো কী? কিস্তির টাকা পরিশোধ করবো কিভাবে?
একই পরিস্থিতি
জেলা সদরের যাত্রাপুরের ঘোড়ার গাড়ি চালক আকবর মোল্লার। আকবর মোল্লা বলেন, বৃষ্টির কারনে
আয়-রোজগার প্রায় বন্ধের পথে। শহরে এসে কোথাও ভাড়া মিলছে না। তার মধ্যে জিনিসপত্রের
দাম বেশী হওয়ায় ঘোড়ার খাবার ও পরিবারের খাবারের যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
এদিকে টানা
বর্ষনে নদ-নদী সহ নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে পানি বেড়েছে। ফলে চর ও দ্বীপ চরের মানুষজনের
দুর্ভোগও বেড়েছে।
জেলা সদরের ডাকবাংলার চরের গৃহবধূ সাহিদা (৪৫) বলেন, টানা বৃষ্টির কারনে ধরলা নদীসহ ধরলার শাখা নদী গুলোর পানি বাড়ছে। এতে করে নৌকা সংকটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শিশুরা নৌকা যোগে ঝুকি নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় দুঃশ্চিন্তায় পরতে হচ্ছে।
তবে আজ রাত
থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। যা আগামী আরও দুই অব্যাহত থাকতে পারে বলে
জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
এ কর্মকর্তা
বলেন, জেলার উপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় টানা ৬দিন ধরে বৃষ্টিপাত চলমান রয়েছে। গতকাল
শনিবার বিকেল ৩টা থেকে আজ বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৫৯ মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ রাত থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। যা
আগামী আরও দুই দিন অব্যাহত থাকার পর বৃষ্টিপাতের মাত্রা কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।