কুমিল্লার হোমনা
উপজেলার হরিপুর গ্রামে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ৭১তম সুদ ও সার্ভিস
চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (৬ মার্চ) বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানের
আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত
ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশক ময়নাল হোসেন
চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া
গ্রুপের পরিচালক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল
কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. দেলোয়ার হোসেন সরকার, হোমনা পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট
নজরুল ইসলাম, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম মাইমূন কবির, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের
হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক
মো. মোশাররফ হোসেন, সিনিয়র অফিসার আমির হোসেন আনোয়ার, জুনিয়র অফিসার শাহজাহান, মোহাম্মদ
বাছির প্রমুখ।
প্রধান অতিথি
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের কোথাও
আছে কি না আমার জানা নেই। শুধু বসুন্ধরাই মানবতার কল্যাণে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত
এই ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। বসুন্ধরার লক্ষ্য এই ঋণ সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেরা অর্থনৈতিকভাবে
স্বাবলম্বী হবেন এবং ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলবেন। বসুন্ধরার ঋণ এবং
আপনাদের প্রচেষ্টায় একদিন আপনাদের অভাব মোচন হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতি
ময়নাল হোসেন চৌধুরীর বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সরাসরি তত্তাবধানে
সর্বপ্রথম ২০০৫ সাল থেকে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু
থেকে এখন পর্যন্ত এই ঋণের আওতায় প্রায় ৩০ হাজার হতদরিদ্র ও গরিব মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
এই ঋণ বিতরণ ও আদায়ের দিক দিয়ে বিশ্বের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। যার একটি টাকাও এখনো অনাদায়ী
থাকেনি। আমরা আপনাদের নিয়ে কাজ করছি, আরো কাজ করব। বসুন্ধরা সব সময় আপনাদের পাশে আছে।
বসুন্ধরা চাচ্ছে গ্রামের অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষগুলোর অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দিতে।’
তিনি আরো বলেন,
‘বসুন্ধরা
ফাউন্ডেশনের ঋণের টাকা কোনো অবৈধ কাজে বিনিয়োগ করা যাবে না। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের
কল্যাণে কাজ করে। দেশের অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিভিন্ন ক্রান্তিকালে সাহায্যের হাত
বাড়িয়ে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।’তিনি
আরো বলেন, ‘আজ ২০০ হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত লোকের প্রত্যেককে ১৫ হাজার টাকা করে
মোট ৩০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ পেয়ে
৩৩টি স্কিমের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে ঋণগ্রহীতারা।’
হোমনা নগরীরচর
কান্দাপাড়ার ঋণগ্রহীতা মার্জিয়া আক্তার (৩৫) বলেন, ‘আমি দেখতে বাউন্না (খুব খাটো), যার জন্য কোনো কাজ দেয় না। এই টেহা দিয়া
মেশিন কিন্না কাপড় সেলাইমু। রোজার মাসে বেশি সেলাই কইরা বেশি টেহা পামু। আল্লাহর কাছে
বসুন্ধরার মালিকের লাইগা দোয়া করি।’দরিচর গ্রামের ঋণগ্রহীতা রোজিনা আক্তার (৩০) বলেন, ‘এই টেহা নিয়া কৃষি কামে লাগামু।
এমন সময় টেহাডি পাইছি যখন ধানক্ষেতে সার ও পানি দিতাম পারমু। বেশি ধান হইলে ঘরে ভাতের
অভাব থাকবে না। আল্লাহর কাছে কমু টেহা যারা দিছে বসুন্ধরার মালিকদের তুমি ভালা রাইক্ষ
(রেখো)।’বাগমারা গ্রামের
ঋণগ্রহীতা অঞ্জনা দাস (৩০) বলেন, ‘আমার স্বামী কয়ডা কয়ডা (সামান্য কিছু) মাছ কিন্না বেচে। এই টেহাগুলি
লাইজ্জার কামে লাগবে। ভগবানের কছে বসুন্ধরা মালিকগ লাগি প্রার্থনা করি।’