আজঃ সোমবার ০৬ মে ২০২৪
শিরোনাম

কর্ণফুলী টানেল: ট্রাফিক জটিলতার আশঙ্কা

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ০৪ জুলাই ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেলের নির্মাণকাজ শেষের দিকে। তবে দেশের অহং, আবেগ ও আভিজাত্যের জৌলুস কর্ণফুলী টানেলের দুইপ্রান্তের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে জটিলতার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ টানেল চালুর ১০ বছর পর যানবাহন ব্যবস্থাপনার রূপরেখা কী হবে সে বিষয়টি এই সমীক্ষায় রাখা হয়নি। ফলে সেখানে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন। এমন পরিস্থিতিতে আইটার রিং রোড, কাটগড় সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এয়ারপোর্টমুখী সড়ক, পতেঙ্গা সৈকতমুখী সড়ক, কর্ণফুলী টানেলের প্রবেশ মুখ এই পাঁচ সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কথাও জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

জানা গেছে, কর্ণফুলী টানেল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে সতেরো হাজার গাড়ি চলাচল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবং প্রতি বছর এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সাত শতাংশ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালে গাড়ি চলাচলের দৈনিক সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৩৮ হাজারে। এই বিশাল যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা জানাতে পারছেন টানেল সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেতু কর্তৃপক্ষ, নির্মাণকারী সংস্থা চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল) ও অভি অরূপ অ্যান্ড পার্টনার্স হংকং লিমিটেড যৌথভাবে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা করেছিল। টানেল চালুর ১০ বছর পর যানবাহন ব্যবস্থাপনার রূপরেখা কী হবে সে বিষয়টি এই সমীক্ষায় রাখা হয়নি। কর্ণফুলী টানেল চালুর পর সেখান দিয়ে ৬৩ লাখ গাড়ি এবং কক্সবাজারের গভীর সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো চালুর হওয়ার পর ২০৩০ সাল থেকে বছরে এক কোটি ৩৯ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারে বলে ওই সমীক্ষায় ধারণা দেয়া হয়েছে। এসব গাড়ির মধ্যে ৫০ শতাংশই পণ্যবাহী গাড়ি।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী টানেলের মহানগরের অংশ থেকে পতেঙ্গা সৈকত রোড-আউটার রিং রোড হয়ে যানবাহন যাওয়ার কথা ফৌজদারহাটের দিকে। অন্যদিকে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-বিমানবন্দর সড়ক হয়ে মহানগরে প্রবেশ করবে যানবাহন। টানেলের বর্তমান ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী প্রকল্পের সংযোগ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যে নকশা করা হয়েছে তাতে সুফলের পরিবর্তে সংকট তৈরি আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। সূত্রমতে, ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। এরপর ট্যানেলের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে প্রথম টিউবটির খননকাজ শুরু হয়। গত বছরের ২ আগস্ট প্রথম টিউবের খননকাজ শেষ হয়। শুরু হয় আনোয়ারা প্রান্তে ২য় টিউব খননের কাজ। এরই মধ্যে গেল বছরের নভেম্বর মাসে ট্রাফিকিং ব্যবস্থার ত্রুটি ধরা পড়ে বড় বাজেটে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পে। প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এই ত্রুটি শনাক্ত করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ আপত্তি তুলে জানিয়েছিল নকশায় উত্তরপ্রান্তের প্রবেশ মুখে পাঁচটি সড়ক মিলিত হলেও ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো ধরনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ নেই। আইটার রিং রোড, কাটগড় সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এয়ারপোর্টমুখী সড়ক, পতেঙ্গা সৈকতমুখী সড়ক, কর্ণফুলী টানেলের প্রবেশ মুখ এই পাঁচ সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কথাও জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। বিষয়টা নজরে আসার পর প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে সিএমপি। এরই মধ্যে কিছু প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের। তারা সিএমপির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। কিন্তু নকশায় কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানাতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। টানেল ঘিরে যানজটের শঙ্কার কথা সেতু কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পর সিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু টানেলের উভয়প্রান্তে ট্রাফিক রুট নির্মাণ নিয়ে কমিটি করা হয়।

কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ ৮৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ করে ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধনের মাধ্যমে যান চলাচলের জন্য টানেলটি উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে বিশেষজ্ঞ দল কাজ শুরু করবে। এরইমধ্যে উভয়প্রান্তের ট্রাফিক রুট নির্মাণ নিয়ে গঠিত কমিটির বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে অ্যাপ্রোচ রোডসহ টানেলের আশপাশের রাস্তা এমনভাবে তৈরি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে, যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয়। সুপারিশের আওতায় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, চলতি মাসে কর্ণফুলী টানেলের দ্বিতীয় টিউব (সুড়ঙ্গ) খননের কাজও শেষ হয়েছে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্ত থেকে এ খননকাজ শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয় এই টিউবটির খনন করতে ১০ মাস সময় লেগেছে। তথ্যমতে, আশি শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের। শেষ হওয়া ২য় টিউবটি পরিষ্কার করার পর জানুয়ারি মাসে এর ভেতরে গাড়ি চালানোর জন্য স্ল্যাভ বসানোর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ বলেন, টানেলের ট্রাফিক পরিকল্পনায় কিছুটা আপত্তি ছিল সিএমপির। সংযোগ সড়কের নকশাগত ত্রুটির কারণে যানজটের শঙ্কার কথা প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। তারাও সিএমপির মতামত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছেন।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, টানেলের ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের নকশা পরিবর্তনের জন্য সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। সেই সব প্রস্তাবের আলোকে কাজ করছে টানেল বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রকৌশল বিভাগ।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, টানেল চালু হলে চট্টগ্রাম নগরীতে যানবাহনের চাপ আরো বাড়বে। এ কারণে আমরা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হওয়ার কথা বলছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে এই প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ৮৪ শতাংশ, আর এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ৮৬ শতাংশ।

জানা গেছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিসিএল) প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ২০১৫ সালে জুনে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় সাত হাজার ৭৮৪ কোটি ছয় লাখ টাকা। তবে সিসিসিসিএলের কিছু প্রস্তাবে আপত্তি তোলে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)। তবে এরপর নির্মাণ ব্যয় না কমে উল্টো বেড়ে দাঁড়ায় আট হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ওই ব্যয়েই প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছিল। যদিও ঋণচুক্তি সম্পাদনে দেরি হওয়ায় টানেলের নির্মাণকাজও শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের দুই বছর পর। তবে জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি, ভ্যাট ও কর পরিশোধের হার বৃদ্ধি, সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি, পরিষেবা সংযোগ লাইন স্থানান্তর ইত্যাদি খাতে ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে ২০২০ সালে টানেলটি নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয়। সে সময় ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ৮৮০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ওই সময় প্রকল্পটিতে পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা ছিল চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকি তিন হাজার ৯৬৭ কোটি ২১ লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে সরবরাহ করার কথা ছিল।

কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের আওতায় তিন দশমিক ৪০ কিলোমিটার মূল টানেল ছাড়াও পূর্ব (আনোয়ারা) প্রান্তে ওপেন কাট ২০০ মিটার, কাট অ্যান্ড কাভারের ১৯৫ মিটার, সংযোগ সড়ক ৫৫০ মিটার এবং ২৫ মিটার ওয়ার্কিং শ্যাফট নির্মাণ করা হবে। আর টানেলের পশ্চিম (পতেঙ্গা) প্রান্তে ওপেন কাট ১৯০ মিটার, কাট অ্যান্ড কভারের ২৩০ মিটার, সংযোগ সড়ক ৪ হাজার ৮০ মিটার এবং ২৫ মিটার ওয়ার্কিং শ্যাফট নির্মাণকে প্রকল্পভুক্ত করা হয়েছে। টানেলটি খুলে দেয়া হলে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া ও চন্দনাইশসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা কক্সবাজার জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। আনোয়ারা থেকে সড়কপথে বিমানবন্দর যেতে আগে যেখানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগত, টানেল দিয়ে লাগবে মাত্র ৩০ মিনিট।

নিউজ ট্যাগ: কর্ণফুলী টানেল

আরও খবর



মহান মে দিবস আজ

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজ ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন এই মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। ওই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন কয়েকজন বিপ্লবী শ্রমিক। এই দিনটির স্মরণে বিশ্বের দেশে দেশে পালিত হয়ে আসছে দিবসটি।

মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের সব শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বাণী দেওয়া হয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংস্থা ও সংগঠন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

মহান দিবসের সূচনা আজ থেকে ১২৭ বছর আগে মার্কিন মুলুকে। ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে একদল শ্রমিক মালিকপক্ষকে দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মসময় নির্ধারণের দাবি জানান। এ দাবি পূরণের সময় হিসেবে ১৮৮৬ সালের ১ মে নির্ধারণ করেন শ্রমিকরা। কিন্তু কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের এ দাবি কানে তোলেননি। তাই দাবি আদায়ে পহেলা মে শিকাগোতে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিকের জমায়েত ঘটে। একপর্যায়ে শ্রমিকদের দমাতে শক্তি প্রয়োগ করে পুলিশ। সংঘর্ষ হয় দুই পক্ষের মধ্যে। এতে এক শ্রমিক নিহত ও অনেকে আহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ওই বছরের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেটে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় হঠাৎ বোমা হামলায় নিহত হন এক পুলিশ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে পুলিশ। এতে নিহত হন ১০-১২ শ্রমিক। আহত হন আরও অনেকে।

সে দিন শ্রমিকদের আত্মদান বিফলে যায়নি। শিকাগো শহরের রক্তাক্ত ইতিহাস সারা বিশ্বে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে আলোড়ন তোলে। এ ঘটনার দুই বছর পর ১৮৮৯ সালে প্যারিসে ফরাসি বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেসে শিকাগো শ্রমিক আন্দোলনের দিনটিকে ১৮৯০ সাল থেকে পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ১৮৯১ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় কংগ্রেসে প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।

সেই থেকে শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা দিনে আট ঘণ্টা করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি এই দিনটিকে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই দিনে ছুটির কথাও বলা হয়। সেই থেকে আজও মে মাসের প্রথম দিনটিকে (মে ডে) শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

মে দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু পরিত্যক্ত কলকারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।

কর্মসূচি : আজ ১ মে বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরও কর্মসূচি রয়েছে।


আরও খবর



বাংলাদেশে ঢুকে দুই যুবককে বিএসএফের গুলি

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সীমান্তে প্রবেশ করে দুই বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলি করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টায় কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামারভাতি সীমান্তের ৯১৩ নম্বর মেইন পিলারে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে খামারভাতি সীমান্তে জমি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন স্থানীয় যুবক এনামুল হক ও ইন্দু মিয়া। হঠাৎ বিএসএফ তাঁদের ধাওয়া দিলে তাঁরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। ওই সময় বিএসএফ সদস্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে গুলি চালান। অবশ্য দুই যুবক অক্ষত অবস্থায় নিরাপদ স্থানে যেতে পেরেছেন। এ ঘটনার পর থেকেই খামারভাতি এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এভাবে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বাংলাদেশিদের লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য ধারণ করেন স্থানীয় শাকিল নামে এক যুবক। তিনি জানান, এমন ঘটনা প্রায় সময়ই সীমান্তে ঘটে। কিন্তু কোনো প্রমাণ থাকে না বলে কেউ বিশ্বাস করে না। প্রতিবাদও জানায় না। দূরে ভিডিও নিয়ে কাজ করার সময় এমন দৃশ্য দেখে ভিডিও ধারণ করেছি। এটিই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিনিয়তই বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশিদের ধাওয়া করেন। অনেক সময় মারধর করে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



মার্কিন সিনেটে ইউক্রেন-ইসরায়েল সহায়তা বিল পাস

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

মার্কিন সিনেটে পাস হল ইউক্রেন ও ইসরায়েলকে বৈদেশিক সহায়তা বিল। কয়েক মাস বিলম্বের পর মঙ্গলবার সহজেই বিলটি পাস হল। এর ফলে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইউক্রেনকে নতুন করে তহবিল জোগান দেওয়ার পথ সুগম হল।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ইউক্রেন, ইসরায়েল, তাইওয়ান ও ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন অংশীদারদের ৯৫ বিলিয়ন (৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের প্রধানত সামরিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে চারটি বিল পাস হয়। বিলগুলো ৭৯-১৮ ভোটে অনুমোদিত হয়।

এর আগে গত শনিবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান নেতারা এসব বিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান আকস্মিকভাবে বদলে ফেলেন ও ভোটাভুটিতে সেগুলো পাস করেন।

সিনেটে বিল চারটি একটি প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করে উপস্থাপন করা হয়। প্রথম বিলে ইউক্রেনে জরুরিভিত্তিতে তহবিল জোগানের লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের ৬১ বিলিয়ন (৬ হাজার ১০০ কোটি) ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় বিলে ইসরায়েলকে ও বিশ্বজুড়ে সংঘাতকবলিত অঞ্চলের বেসামরিক লোকজনকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ২৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৬০০ কোটি) ডলার এবং তৃতীয় বিলে ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলায়’ ৮ দশমিক ১২ বিলিয়ন (৮১২ কোটি) ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চতুর্থ বিলটি গত সপ্তাহে ওই প্যাকেজে যুক্ত করে প্রতিনিধি পরিষদ। এ বিলে চীনা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক মাধ্যম অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করা, ইউক্রেনে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ স্থানান্তরে পদক্ষেপ নেওয়া ও ইরানে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরের জন্য বিলগুলো তার কাছে পাঠানো হবে। তার স্বাক্ষরের পর বিলগুলো মূলত আইনে পরিণত হবে।

দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, বিলগুলো টেবিলে পৌঁছানোর পর দ্রুত সেগুলো সই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।


আরও খবর



সেনাবাহিনী বান্দরবানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম: সেনাপ্রধান

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বান্দরবানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম সেনাবাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে কয়েকজন সন্ত্রাসী আটক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

সেনাপ্রধান বলেন, গতকাল (শনিবার) রাতে কিছু সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বান্দরবানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম সেনাবাহিনী। দৃশ্যমান কিছু কার্যক্রম আপনারা দেখতে পাবেন। এর ফল আপনারা সময়মতো পাবেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাই, আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খুবই পরিষ্কার।

শফিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের শান্তির জন্য, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য যা যা করণীয়, প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ সেটাই করতে হবে। সেটা বাস্তবায়নে আমরা সক্ষম হব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এর আগে সকাল ১০টার দিকে ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলা পরিদর্শনে যান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।


আরও খবর



ইরাকি জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরাকি জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গত রাতে বাগদাদের পূর্বাঞ্চলীয় জাইউনা জেলায় নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। টিকটকে তার হাজার হাজার অনুসারি রয়েছে। খবর আল জাজিরা

নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার রাতে কালো পোশাক ও হেলমেট পরা একদল লোক মোটরবাইকে করে এসে কিছুটা পথ হেটে একটি কালো রংয়ের এসইউভি গাড়িতে গুলি চালায়। ওই গাড়িতেই টিকটক তারকা ওম ফাহাদ বসে ছিলেন।

ইরাকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাকে হত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওম ফাহাদের প্রকৃত নাম গুফরান সায়াদি, টিকটকে তার অর্ধ মিলিয়ন অনুসারি রয়েছে। পপ মিউজিকের সঙ্গে নেচে ভিডিও তৈরি করে সেগুলো টিকটিকে শেয়ার করতেন তিনি। তার তৈরি ভিডিওতে শালীনতা নষ্ট করে এমন বক্তব্য এবং জনসাধারণের নৈতিকতা ভঙ্গের দায়ে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। যদিও তার ভিডিওগুরো ১০ লাখের অধিক ভিউ হয়েছে।

ওই সময়ে পাঁচ কনটেন্ট ক্রিয়েটরকেও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়। ওম ফাহাদের ওই ধরনের অশালীন ভিডিও তৈরি ইরাকি সমাজ এবং পারিবারিক সংস্কৃতিতে কতটা প্রভাব পড়ে তা জানার জন্য ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একটি কদন্ত কমিটি গঠন করে।

ওম ফাহাদের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জারকে হত্যার মতো ঘটনা এটাই প্রথম নয়, দেশটিতে অনলাইনে মুক্তমত প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাপক কঠোরতা রয়েছে। এটি দিন দিন বাড়ছে। এর আগেও ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী টিকটক তারকাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ২০২৮ সালে ২২ বছর বয়সী মডেল ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জার তারা ফারেজকেও বন্দুকধারীরা হত্যা করে।

ইরাকে অনার কিলিং (সম্মান রক্ষার্থে হত্যা) এর মতোও ঘটনা রয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে ২২ বছর বয়সী ইউটিউবার তিবা আল আলীকে তার বাবা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।


আরও খবর