আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

করিমগঞ্জে তক্ষকসহ দুই পাচারকারী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় একটি তক্ষকসহ দুই পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার আশুতিয়াপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আশুতিয়া গ্রামের মৃত মো. আলীর ছেলে মো. মানিক (৫০) ও উজান ভরাটি গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মো. মোস্তাকিম (৩২)।

আরও পড়ুন>> ফেনীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার

র‌্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. শাহরিয়ার মাহমুদ খান বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে র‌্যাবের একটি দল তক্ষকসহ দুই পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানান- তক্ষকটি ৬ লাখ টাকায় বিক্রির জন্য তারা সিলেট অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে করিমগঞ্জ থানায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হয়েছে।


আরও খবর



সিলেটে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিয়ন্ত্রণে

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অগ্নিকাণ্ডের ফলে সিলেট নগরীর কিছু অংশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ থাকলেও জেলার অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৯টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় সকাল সোয়া ১০টার দিকে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাইভোল্টেজের তারের স্পা‌র্কিং থেকে সকাল সোয়া ৯টার দিকে কুমারগাঁও ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পরিত্যক্ত এয়ার ফিল্টারে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কা‌দির বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে হাইভোল্টেজের তারের স্পা‌র্কিং থেকে কেন্দ্রে ডাম্পিং করে রাখা পরিত্যক্ত এয়ার ফিল্টারে আগুন লাগে।

এ ঘটনায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিদর্শনে যান।


আরও খবর



রাঙামাটিতে জ্বর-রক্তবমি উপসর্গ নিয়ে ৫ জনের মৃত্যু, আতঙ্কে এলাকাবাসী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

রাঙামাটির অতি দুর্গম বরকল উপজেলার এক গ্রামে তীব্র জ্বর, রক্তবমি, পেটব্যাথাসহ আরও বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে আরও ১০ জন এসব উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে রোগটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও জেলা সিভিল সার্জন জানিয়েছেন খাদ্যাভ্যাসের কারণে তারা এসব উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছে। মেডিকেল টিম ইতোমধ্যে দুর্গম এই গ্রামে রওনা দিয়েছে।

স্থানীয় ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের শুইছড়ি মৌজার চান্দবিঘাট এলাকায় বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে জানুয়ারি মাস থেকে এই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১৫ জন। তাদের মধ্যে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখে। চান্দিনাঘাট গ্রামের লবিন্দর চাকমা এবং স্নেহবালা চাকমার ছেলে পত্ত রঞ্জন চাকমা (২৫) প্রথম এই রোগে মারা যান। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫), ২৬ ফেব্রুয়ারি ডালিম কুমার চাকমা (৩৫), ১৫ মার্চ চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) এবং সবশেষ চলতি মাসের ১৭ তারিখ সোনি চাকমা নামের ৮ বছর বয়সী এক শিশু মারা যায়। এলাকাটি অতি দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়াতে সেখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই এবং আশপাশে নেই কোনো চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র। স্থানীয় কবিরাজির মাধ্যমে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের মাধ্যমে আরও জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে গ্রামবাসীরা মিলে একটি পুরনো বটবৃক্ষ কেটে ফেলে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস গাছটি একটি আধ্যাত্মিক গাছ এবং এই গাছ কাটার ফলেই এই রোগের উৎপত্তি।

বরকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফোরকান এলাহি অনুপমের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বুধবার সকালে এই বিষয়ে একটি খবর পাওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। এই বিষয়ে একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। তারা ওখানে যাওয়ার পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।

এই বিষয়ে বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মং ক্যছিং সাগর বলেন, আমি ব্যাপারটি জানতে পেরেছি। গত জানুয়ারি থেকে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টিও জেনেছি। আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করে একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি, যেটি আগামীকাল ঘটনাস্থলে পৌঁছবে।

তিনি আরও বলেন, এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে আমরা জ্বর, বমি, পেট ব্যথা, শরীর ব্যাথার কথা জানতে পেরেছি। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে যারা অসুস্থ আছেন তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করতে বলেছি।

রাঙামাটির সিভিল সার্জন নিহার রঞ্জন নন্দী বলেন, তীব্র জ্বর, পেটব্যাথা, রক্তবমির উপসর্গ নিয়ে জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। তবে এটা কোনো অজ্ঞাত রোগ নয়। খাদ্যাভ্যাসের কারণে তাদের এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় তারাও সরকারি হাসপাতালে এসে চিকিৎসার বিষয়ে তেমন একটা আগ্রহ না থাকার কারণে বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে তারা মারা যেতে পারে। আমরা খবর পাওয়ার পর বুধবার পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ওই গ্রামে পাঠিয়েছি। এলাকাটি যেহেতু খুবই দুর্গম, তাই ওখানে পৌঁছতেও বেশ সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে। ওখানে পৌঁছানোর পর আক্রান্তদের কেস স্টাডির পর আমরা বিস্তারিত জানতে পারব।


আরও খবর



শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনের এক অনন্য হাতিয়ার পানি: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ব্যক্তি হতে বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনে পানি এক অনন্য হাতিয়ার বলে মন্তব্য করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সংকট বাড়ছে, তার অন্যতম সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূ-উপরস্থ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির গুণগত মান বজায় রাখা, জলাধারের পানি প্রবাহ অটুট রাখা, পানির বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবহার ও সামাজিকভাবে পানি সংরক্ষণ এবং পানির অপচয়রোধে সচেতনতার প্রসার সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক-আঞ্চলিক-জাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিতকরণে ভূমিকা রাখবে।’

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর পানি ভবনের হলরুমে বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন। শান্তির জন্য পানি’ প্রতিপাদ্যের আলোকে দিবসের শুরুতে বর্ণাঢ্য র‍্যালি পানি ভবন হতে সার্ক ফোয়ারা প্রদক্ষিণ করে। আলোচনা শেষে একটি ভার্চুয়াল স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগানের আলোকে পানি খাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়নের সবাইকেই সচেষ্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ও মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তার হাত ধরে স্মার্ট  বাংলাদেশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।

অনুষ্ঠানে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা। আলোচনা করেন পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক, রেজাউল মাকছুদ জাহেদী ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খান। দিবসের প্রতিপদ্যের ওপর আলোচনা করেন ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডাব্লিউএম) নির্বাহী পরিচালক মো. জহিরুল হক খান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এক প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি বছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস পালন করা হয়। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেখানে পানিসম্পদের জন্য একটি বিশেষ দিন ঘোষণার দাবি তোলা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয় এবং এরপর থেকে এ দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে।


আরও খবর



আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিন শেষে এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাত নেমে এসেছিল। এদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্খা মুছে দেয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট।

এই অভিযানের নির্দেশ নামা তৈরি করে পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। নির্দেশনামার কোনও লিখিত নথি রাখা হয়নি। গণহত্যার সেই পুরো নির্দেশ মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়।

অনেক পরে, ২০১২ সালে, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত সেই আত্মজীবনীতে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।

অপারেশন সার্চলাইট কিভাবে পরিকল্পিত হয়, ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিচারণ করে রাজা লিখেছেন, ১৭ মার্চ, সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি। গিয়ে দেখি, সেখানে জেনারেল আবদুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি। এ ছাড়া আর কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয়, পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি। পরদিন সকালেই খাদিম হোসেন রাজা তাঁর কার্যালয়ে রাও ফরমান আলীকে নিয়ে বসেন। তারাই গণহত্যার এ অভিযানের নাম দেন অপারেশন সার্চলাইট।

মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেপ্তার করা হলো আরও ৩০০০ লোক। ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। এরপর সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হল। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হল। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমি।

পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত অপারেশন সার্চ লাইট নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টারযোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।

ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিক সালিকের উইটনেস টু সারেন্ডার গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণ পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি লিখেন নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।

পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।

যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ রাত ১১ থেকে ১১টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ব্ল্যাক আউট পালন করা হবে। তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দেবেন। এদিন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।

সারা দেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গীতিনাট্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হবে। এছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর বা সুবিধাজনক সময় দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে একই কর্মসূচি পালন করা হবে।


আরও খবর



সদকাতুল ফিতর কখন কার ওপর ওয়াজিব

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

পবিত্র রমজানের ইবাদতের মধ্যে সদকাতুল ফিতর আদায় করা অন্যতম একটি ইবাদত। রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং এ আনন্দে যেন মুসলিম জাতির প্রতিটি সদস্য শরিক হতে পারে এ জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে সদকাতুল ফিতর। রমজানের রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিপূর্ণতার জন্যই আবশ্যক করা হয়েছে এটি।

ইমাম ওয়াকি ইবনুল জাররাহ বলেন, রমজান মাসের জাকাতুল ফিতর নামাজের সিজদায়ে সাহুর সমতুল্য। অর্থাৎ নামাজে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে যেমন সিজদায়ে সাহু দিলে এটা পূর্ণ হয়ে যায় তেমনি রোজার মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে সাদকাতুল ফিতর দিয়ে এর প্রতিকার হয়। তাছাড়া ধনী-গরিব উভয়ে যেন অন্তত ঈদের দিন উত্তম পোশাক ও উন্নতমানের খাবার খেতে পারে এ জন্যই ফিতরার ব্যবস্থা।

ফিতরার নিসাব

যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও ঋণ  ছাড়া সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা কিংবা এর সমমূল্য কোন সম্পদ বা টাকা থাকে, তাহলে তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব।

সদকাতুল ফিতর উত্তম হলো ঈদের নামাজের আগে আদায় করে দেয়া। কেননা রাসুল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।

জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর দিতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতর দেওয়া যেমন জায়েজ, তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেয়াও জায়েজ।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতর আদায় করাকে আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বোখারি :  ১৫১২)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন, যা রোজা পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী এবং অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে এটা আদায় করবে, তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহীত হবে। (আবু দাউদ : ১৬০৯)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন আমরা এক সা পরিমাণ খাদ্য, যব, বা খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির বা কিশমিশ দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করতাম ৷ (বোখারি : ১৫০৬)।

হাদিস শরিফে এ পাঁচটি দ্রব্যের যে কোনো একটি দ্বারা সদকায়ে ফিতর আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে ৷ যেন প্রত্যেকে নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী আদায় করতে পারে তবে সবার জন্য সবচেয়ে কম দামের দ্রব্য দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করা অনুচিত; বরং যে ব্যক্তি খেজুর, কিশমিশ দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করার সামর্থ রাখে, সে তা দিয়েই আদায় করবে ৷

সদকায়ে ফিতর যাদের উপর ওয়াজিব

ঈদের দিন সুবহে সাদেকের সময় যার কাছে যাকাত ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় আসবাব সামগ্রী ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, বাসগৃহ ইত্যাদি বাদ দিয়ে সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সমমূল্য পরিমান সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।

ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় এ পরিমাণ মালের মালিক থাকলে, তার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে। যে শিশু-সন্তানটি ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের পূর্বে ভূমিষ্ট হবে, তার ফিতরাও আদায় করতে হবে।

অর্থাৎ পরিবারের যতজন সদস্য ততটি ফিতরা হিসেবে) সকলের ফিতরা আদায় করতে হবে। প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী তার নিজের পক্ষ থেকে এবং নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করবেন।

সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বোখারি  : ১৫১২)।

ইবনে আব্বাস (রা.) একবার রমজানের শেষ দিকে বসরায় খুতবা প্রদান করেন। সেখানে তিনি বলেন, তোমাদের রোজার সদকা আদায় করো। লোকেরা যেন ব্যাপারটা বুঝতে পারে নি।

তখন ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, এখানে মদিনার কে আছে দাঁড়াও। তোমাদের ভাইদেরকে বলো, তারা তো জানে না। বলো যে, রাসূল (সা.) এই সদকা আবশ্যক করেছেন। এক সা খেজুর বা যব অথবা আধা সা গম প্রত্যেক স্বাধীন-দাস, পুরুষ-নারী, ছোট-বড় সবার ওপর ওয়াজিব।  (আবু দাউদ: ১৬২২)।

যারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর প্রদান করতে হবে। জাকাতের জন্য সম্পদের বর্ষপূর্তি শর্ত হলেও ফিতরায় এ শর্ত নেই। নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নিজের পক্ষ থেকে, নিজের প্রাপ্ত এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে এবং নিজের সেবক-সেবিকাদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করতে হবে। সন্তান বা অধীনস্থরা অমুসলিম হলেও তাদের ফিতরা আদায় করা আবশ্যক।

গম বা আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির- এ পাঁচটি জিনিস বা তার মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। সামর্থ্যানুসারে সবার উচিত উৎকৃষ্ট জিনিস সদকা করা। রাসূল (সা.)-এর সময়ে সামর্থ্যানুযায়ী সবাই উত্তম পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতেন।

সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, দাতার কাছে যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি। (বোখারি : ১৯৭৪)।

এ বছরের সদকাতুল ফিতরের নির্ধারিত পরিমাণ‌

ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ' এর অনুকরণে নিম্নে এবছরের (১৪৪৫ হিজরী/২০২৪ইং) এর সদকাতুল ফিতরের বাজার মূল্য তুলে ধরা হলো:

১. উন্নতমানের আটা বা গমের ক্ষেত্রে ফিতরা এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা) বা এর বাজার মূল্য ১১৫ টাকা।

২. যবের ক্ষেত্রে (এক সা) ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৪০০ টাকা ফিতরা দিতে হবে।

৩. খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ৪৭৫ টাকা

৪. কিসমিসের ক্ষেত্রে  ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম কিসমিস বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ১৪৫ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে।

৫. পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৭০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।

ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা অদ্ভুত মানসিকতার পরিচয় দেই। আমাদের দেশে সাধারণত সর্বনিম্ন পরিমাণ অর্ধ সা গম এর মূল্য হিসেবে জনপ্রতি ১০০ টাকা হিসেবে সবাই আদায় করতে চান।

কোটিপতি হতে মধ্যবর্তী সবাই সর্বনিম্ন টাকা দিয়েই দায়মুক্ত হতে চান। সবচেয়ে কম মূল্যের গমের হিসাবে সবাই সাদকা করার প্রবণতা খুব বেশি। বিষয়টি রাসূল (সা.)-এর শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।  বরং এটা তো সর্বনিম্ন সম্পদের মালিকের জন্য চলে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে তাওফিক দিয়েছেন, তাদের অন্যান্য দ্রব্য দিয়ে সর্বোচ্চ সদকায়ে ফিতর আদায় করা উচিত। তাই সামর্থ্যানুযায়ী বেশি মূল্যের পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪