আজঃ রবিবার ০৫ মে ২০২৪
শিরোনাম

কমেই চলেছে পাটের দাম, সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে হাট

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
Image

বেড়া-সাথিঁয়া (পাবনা) প্রতিনিধি:

বিশ্বে পাট থেকে উৎপাদিত সোনালী আঁশের দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। দেশ-বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। সরকার পাট রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও কোনো কিছুই প্রান্তিক পাটচাষিদের মুখে হাসি ফোটাতে পারছে না।

পাটের বাজার সিন্ডিকেট দখল করায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাবনার প্রান্তিক কৃষকরা। এখন হতাশাগ্রস্ত কৃষকরা পাট আবাদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

পাবনার কাশিনাথপুর হাটে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভোরের আলো না ফুটতেই কৃষকরা আবাদি সোনালী আঁশ পাট নিয়ে হাঁটে আসছেন। ঘোড়ার গাড়ি, মহিষের গাড়ি, কেউবা করিমন, নসিমন ও ভ্যানে করে ছড়ানো আঁশ পাট নিয়ে অপেক্ষা করছেন। ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়াতে পাট পলিথিন দিয়ে ডেকে রেখেছেন কৃষকরা। বেশি দামের আশায় বাজারে পাট নিয়ে এলেও হঠাৎ দরপতনে হতাশ তারা। গত হাটে পাটের সর্বোচ্চ দাম ২৬৫০ টাকা থাকলেও মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে বর্তমান ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে নেমে এসেছে।

কৃষকরা বলছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা পাটের দাম কমানোর জন্য অজুহাত খোঁজে। সামান্য বৃষ্টি বা হাঁটে পাটের আমদানি বেশি হলে সিন্ডিকেট করে পাট ক্রয় করে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী দাম দিয়ে পাট ক্রয় করা হচ্ছে। বেশি দাম দিয়ে কিনলে বড় বড় আড়তদাররা বেশি দাম দিতে চায় না। বাধ্য হয়ে এমন দামে কিনতে হয় তাদের।

কাশিনাথপুর হাটে আসা বরাট গ্রামের কৃষক মুন্নাফ শেখ জানান তিনি বলেন, এ বছর ৫/৭ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। ফলন মোটামুটি হয়েছে। বাজারে বিক্রি করতে এসে দেখি ১৭০০ টাকা করে ব্যবসাযীরা দাম বলছে। ১৮০০ টাকা হলে বেপারী কিনে নিচ্ছে। গত হাটেও পাট বিক্রি করেছি ২৬০০ টাকা করে। সামান্য বৃষ্টি বা অন্য অজুহাতে সিন্ডিকেট তৈরি করে ব্যবসায়ীরা পাট কম দামে কিনতেছে। চিন্তা করতেছি আর পাট আবাদ করব না। পাট বিক্রি করে খরচই উঠছে না। এ দামে পাট বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরিও হয় না।

পাট বিক্রি করতে চিনাখড়া হাটে আসা কিরন মন্ডল বলেন, রাত ৪টার চিনাখড়া হাটে পাট নিয়ে আসছি। ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে যে পাটের দাম রাতে ২২০০ টাকা ছিল সেটি সকালে বৃষ্টি হওয়াতে কমিয়ে ১৮০০ টাকায় নামিয়েছে। পুরো দেশ এখন সিন্ডিকেটের দখলে। তাদের জন্য আমরা ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি না। মরে শেষ হয়ে যাচ্ছি। পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় নেই। একেক হাঁটে যদি একেক দাম হয় তাহলে কীভাবে চলবে? সরকার যদি পাটের দাম নির্ধারণ করে দিতো তাহলে আমরা সঠিক দাম পেতাম। এখন লাভের গুঁড় পিঁপড়ায় খায়।

পাবনার কাশিনাথপুর পাটের পাইকারি ব্যবসায়ী মোসলম বলেন, গত বছরে এই সময়ে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এবছর সবচেয়ে ভাল পাট আমরা ২৩শ থেকে ২৬শ টাকা করে কিনতেছি। আসলে দেশে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। সিন্ডিকেটের জন্য দাম উঠানামা করে। সরকারের বিদেশ থেকে পাট আমদানি না করে রপ্তানির ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশের সঙ্গে শক্ত করে পাট রপ্তানির চুক্তি যদি সরকার করে তাহলে প্রান্তিক চাষিরাও লাভবান হবে আমরাও ঠিকমতো ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে।

ব্যবসায়ী শরৎ চন্দ্র বলেন, আমরা পাবনার বিভিন্ন হাট থেকে পাট কিনে খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, কুষ্টিয়া, বগুড়াসহ বড় বড় আড়তদারদের কাছে পাইকারি বিক্রি করি। বড় বড় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করলে এসব ছোট ছোট সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ হবে না। অনেক সময় বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষকরা দাম কম পাচ্ছে সেটা ঠিক আছে তবে সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক বাজার দর ঠিক করা দরকার।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, এ বছর পাট আবাদের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়াতে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরপর পাট কাটার শুরুতে পানি না থাকায় কৃষকরা বিড়ম্বনার শিকার হলেও পরে বৃষ্টি হলে কৃষকরা পাট জাগ দিতে পারছে। যার জন্য এবার সব দিক থেকেই কৃষকরা সুবিধা পেয়েছে। শুরুতে পাটের বাজার দর ২৬০০ টাকায় কৃষকরা খুশি ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ১৮০০-২০০০ হাজারে দাম নামল কি জন্য সেটা বুঝে আসছে না। বাজারকে সঠিক রাখার দায়িত্ব কৃষি বিপণন কেন্দ্রের। দামের বিষয়ে প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করলে ভালো হয়। তারপরও বাজারে যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করতে না পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।

পাবনা জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন (বাজার) কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, গতবার অনেক ব্যবসায়ী ৩ হাজার টাকা করে পাট কিনে পরে ২ হাজার টাকা করে বিক্রি করাতে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে এবার পাট কেনার আগ্রহ কম। বৈশ্বিক বাজারের উপর নির্ভর করে তারা পাট কিনে থাকে। এরপরও এবার ২৩০০ টাকা করে পাট বিক্রি হচ্ছিল।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৯ উপজেলায় ৪৫ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। গত বছরে আবাদ হয়েছিল ৪০ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এখান থেকে ১ লাখ ৩০ টনের বেশি পাট উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: সিন্ডিকেট পাট

আরও খবর



ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

১০ দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম আবার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

আজ বৃহস্পতিবার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষর করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এ দাম আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে কার্যকর হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে ১ হাজার ৩৮৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৮ হাজার ৮০১ টাকা।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়ানো হয়। এতে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮০ হাজার ১৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

গত ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের ৯৪ হাজার ৭৭০ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ৭৮ হাজার ৯৬৫ টাকা।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকা মেডিকেল নার্সিং কলেজের পেছনের রাস্তায় আব্দুল আওয়াল (৪৫) নামে এক রিকশা চালকের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই রিকশা চালককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সুমন বসাক বলেন, খবর পেয়ে ঢাকা নার্সিং কলেজের পেছনের রাস্তা থেকে অচেতন অবস্থায় ওই রিকশা চালককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই রিকশা চালক রিকশা চালিয়ে এসে নার্সিং কলেজের পেছনে কাঁপতে কাঁপতে রাস্তায় পড়ে অচেতন হয়ে যায়। পরে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে- প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর কুমার বলেন, এক রিকশা চালককে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তবে তার মৃত্যু হিট স্ট্রোকে হয়েছে কিনা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।  


আরও খবর



তীব্র তাপদাহে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পাশে আইজিপি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বৈশাখের তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। কিন্তু প্রখর খরতাপ উপেক্ষা করেও নগরবাসীর যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে নিরলস দায়িত্ব পালন করছেন ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি সদস্য। তাদের পেশাদারিত্ব ও মনোবল অটুট রাখতে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তারই নির্দেশনায় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রচণ্ড দাবদাহে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের একটু বাড়তি স্বস্তি দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ডিএমপির আটটি ট্রাফিক বিভাগের প্রত্যেক সদস্যের জন্য সুপেয় পানির বোতল সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি খাবার স্যালাইন, ফলের জুস, লেবুর শরবত প্রভৃতি সরবরাহ করা হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদেরকে ছাতা সরবরাহ করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রাফিক-বক্সে হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ও তাপপ্রবাহের মধ্যেও সুস্থ থাকতে প্রত্যেক ফোর্সকে করণীয়/বর্জনীয় সম্পর্কে ব্রিফিং প্রদান করা হয়েছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বলেন, তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এই মুহূর্তে উত্তপ্ত রোদে ইউনিফর্ম পরে পিচঢালা সড়কে দাঁড়িয়ে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব একাগ্রচিত্তে পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মনোবল বাড়াতে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে একদিকে ফোর্সের মনোবল যেমন চাঙ্গা হচ্ছে, অপরদিকে তাপদাহের মধ্যেও ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সম্মানিত নগরবাসী পাচ্ছেন সর্বোত্তম সেবা।

মানবিকতার এসব উদ্যোগ গ্রহণ করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সকল সদস্যের পক্ষ থেকে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।


আরও খবর



জলবায়ু পরিবর্তনের মূল আঘাত যাচ্ছে এশিয়ার ওপর দিয়ে: জাতিসংঘ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এশিয়া মহাদেশভুক্ত দেশগুলো। জাতিসংঘের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।

ডব্লিউএমও’র মতে, অন্যান্য মহাদেশের চেয়ে এশিয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব পড়েছে বেশি। এ কারণে এই মহাদেশের তাপমাত্রাও বাড়ছে। ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর এশিয়ার গড় তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টানা ও দীর্ঘ তাপপ্রবাহে এক দিকে এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চলের হিমবাহগুলো গলে যাচ্ছে, অন্য দিকে জলাশয়গুলো শুকিয়ে যাচ্ছে— যা অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের পানির নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ব্যাপক সংকট সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ডব্লিউএমও’র প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক বিবৃতিতে ডব্লিউএমওর শীর্ষ নির্বাহী কেলেস্টে সাউলো বলেন, এশিয়ার অধিকাংশ দেশের ইতিহাসে ২০২৩ সাল ছিল উষ্ণতম বছর। বিশ্বে খরা, তাপপ্রবাহ, ঝড়, বন্যার মতো যত বিপর্যয় ঘটেছে, সেসবের অধিকাংশই ঘটেছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। জলবায়ু পরিবর্তনের গভীর প্রভাব ইতোমধ্যে জনজীবন ও পরিবেশের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতিতেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধি, হিমবাহ গলে যাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই প্রভাব আরও ব্যাপক হবে।’

ডব্লিউেএমও’র তথ্য অনুয়ায়ী, তাপমাত্রা বাড়ছে সাইবেরিয়া থেকে মধ্য এশিয়া, পূর্ব চীন থেকে জাপান পর্যন্ত। জাপানের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর ছিল ২০২৩ সাল। একই সঙ্গে এ সময় প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ এশীয় অংশের তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ।

গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে এশিয়ার হিমালয় পবর্তমালা এবং এই পর্বতমালার হিন্দুকুশ ও তিব্বত রেঞ্জের ২২ টি হিমবাহের মধ্যে অন্তত ২০টির বরফের মজুত ২০২৩ সালে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি জলসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবিলা করতে হচ্ছে এশিয়াকে। ২০২৩ সালে এশিয়ায় বড় আকারের ঝড়, বন্যা ও তুমুল বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৭৯টি। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৯০ লাখ।

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোর আবহাওয়া কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং গ্রীন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাসে জোর দেওয়া হয়েছে ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনে।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আবহাওয়া কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে খানিকটা হলেও সহায়তা করবে। তবে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমণ কমানোর কোনো বিকল্প নেই। এই মুহূর্তে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাস কেবল একটি বিকল্প নয়, বরং জরুরি কর্তব্য।’


আরও খবর



ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়কে ঝরল ৪০৭ প্রাণ

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ঈদ এলেই সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সদ্য বিদায়ী ঈদে মানুষের যাতায়াতে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৪০৭ জন মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন।

এ সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ২টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ৫ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ পথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় জন ৪৩৮ নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরীর এসব তথ্য জানান। সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। গত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়ও আঞ্চলিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতালে) সড়ক দুর্ঘটনায় আহত। ৬৫৮ জনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৬০৮ জন আহত রোগীর তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে অবকাঠামো ভালো হওয়ায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। গতিকে নিরাপদ করার মতো আইনি কাঠামো, দক্ষ চালক, মানসম্মত যানবাহনের অভাব রয়েছে। আইন প্রয়োগে দুর্নীতির কারণে জাতীয় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নিষিদ্ধ ত্রি-হুইলার, ইজিবাইকের মতো যানবাহন অবাধে চলছে। এছাড়াও ছোট ছোট যানবাহন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। তিনি মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানি বন্ধ করে দেশব্যাপী উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আইন প্রয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে গণপরিবহনগুলোতে নগন অর্থ বন্ধ করে ডিজিটাল লেনদেন চালুর দাবি জানাচ্ছি।

সংগঠনটি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুরদ্রোচ্ছা খান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. মহসিন প্রমুখ।


আরও খবর