ভারতের কর্ণাটক
রাজ্যে ছাত্রীদের হিজাব পরার বিতর্কের মধ্যেই এবার কলকাতায় কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের
কৃত্রিমভাবে তৈরি ছেঁড়া জিনস প্যান্ট পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। গতকাল শনিবার
দক্ষিণ কলকাতার আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ কর্তৃপক্ষ এক নোটিশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি
করে।
আচার্য জগদীশচন্দ্র
বসু কলেজে ছয় হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কলেজের নোটিশে বলা হয়েছে, এখন থেকে কলেজপড়ুয়ারা
কৃত্রিমভাবে তৈরি ছেঁড়া জিনস প্যান্ট পরে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে না। ঢুকতে পারবেন
না ওই কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরাও।
নোটিশে আরও
বলা হয়, এ নির্দেশ অমান্য করা হলে প্রয়োজনে ছেঁড়া জিনস প্যান্ট পরুয়াদের বহিষ্কার করা
হবে, টিসি দেওয়া হবে। ওই কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতির জারি করা এ নির্দেশ নিয়ে
গতকাল থেকেই শোরগোল পড়ে গেছে কলকাতাসহ এ রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এখনো কলেজের
অধ্যক্ষ তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়।
সম্প্রতি কলকাতার
একটি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কলকাতা হাইকোর্টে উপস্থিত হয়েছিলেন জিনস এবং
টি–শার্ট
পরে। এ পোশাককে ভালো চোখে দেখেননি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি এই পোশাক দেখে কড়া ধমক দেন ওই শিক্ষককে। নির্দেশ দেন পোশাক পাল্টে আদালতে
হাজির হওয়ার জন্য।
এ ঘটনার কথা
উল্লেখ করে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি কলেজপড়ুয়াদের
মধ্যে শোভন পোশাক পরে আসার জন্য নির্দেশিকা জারি করেন।
তিনি বলেন,
আদালতে যেমন শোভন পোশাক পরে উপস্থিত হওয়া বাঞ্ছনীয়, তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সেই ধরনের
শোভনীয় পোশাক পরে আসা উচিত। তিনি একথাও বলেন, কলেজপড়ুয়ারা বাইরে যা খুশি পরুক, কিন্তু
কলেজের পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভদ্র পোশাক পরে কলেজে আসুক। এ টুকু কি আমরা চাইতে
পারি না?
যদিও অধ্যক্ষ
তাঁর জারি করা নোটিশে বলেন, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মীদের কেউ ছেঁড়া পোশাক, বিশেষ
করে, অর্টিফিশিয়ালি ছেঁড়া পোশাক (প্যান্ট) পরে ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না। এ ধরনের
পোশাক কলেজের পরিবেশের জন্য শালীন নয়। যদি কোনো কলেজপড়ুয়া এরপরও এমন পোশাক পরে আসে,
তাহলে তাঁকে টিসি দেওয়া হবে। আর এ ঘোষণার পর দানা বেঁধে উঠে বিতর্ক।
শিক্ষাঙ্গনে
বিতর্কিত পোশাক না পরার পক্ষে থাকলেও কৃত্রিমভাবে তৈরি ছেঁড়া জিনসের পোশাক পরার ওপর
নিষেধাজ্ঞা জারি করার পক্ষে নয় কলেজগুলোতে তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার।
ওয়েবকুপারের সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু গতকাল বলেন, যুগের সঙ্গে ফ্যাশন বদলায়। সেটাকে
অগ্রাহ্য করা যায় না। একই সঙ্গে তিনি একথাও বলেন, বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও এক অতি কঠোর
পদক্ষেপ। সেটাও মেনে নেওয়া যায় না।