কক্সবাজার শহরের
হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলী এলাকায় একটি ‘টর্চার সেল’ থেকে দুই কিশোর ও দুই যুবককে উদ্ধার করেছে
পুলিশ। এ সময় পর্যটকদের হয়রানি, প্রতারণা ও জিম্মি করে টাকা আদায়ের ঘটনায় জড়িত থাকার
অভিযোগে ১১ দালালকেও আটক করা হয়।
গতকাল রোববার
রাতে টুরিস্ট পুলিশ চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে এ উদ্ধার ও আটক করে। পুলিশ ‘টর্চার সেল’ থেকে দেশীয় অস্ত্র ও অপকর্মে ব্যবহৃত
নানা উপকরণ জব্দ করেছে।
উদ্ধারকৃতরা হলো—কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের
দক্ষিণ ডিককূল এলাকার ইফাজ উদ্দিন ইমন (১৭), একই এলাকার আব্দুল্লাহ আল ফাহিম (১৫) এবং
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার দীল মোহাম্মদ (১৭) ও চট্টগ্রাম
জেলার সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া এলাকার মো. ইমরান (১৯)।
আটক দালালেরা
হলো—মো. আলমগীর (৪৫), মো. সেলিম (২০), আকাশ
দাস (২৩), মো. জোবায়ের (২৮), মো. মামুন (২২), নাজির হোসেন (২৮), সেকান্দর আলী (২৮),
মো. সোহেল (৩০), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৩), মো. জসিম (২৭) ও মো. পারভেজ (২৫)।
পুলিশ জানিয়েছে,
উদ্ধারকৃত যুবক দীল মোহাম্মদ ও ইমরান উখিয়া উপজেলার পালংখালী স্টেশনের একটি ব্যবসা
প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তারা রোববার সকালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে রাত যাপনের
জন্য ‘শিউলি’ নামের একটি আবাসিক কটেজে কক্ষ ভাড়া নেয়।
এ ছাড়া কিশোর ফাহিমের মা কক্সবাজার শহরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাতে সমুদ্রসৈকতে
ঘোরার পর ফাহিম ও ইমন হোটেলে থাকার জন্য রুম খোঁজে। একপর্যায়ে এক দালালের মাধ্যমে শিউলি
কটেজে ওঠে। সেখানে ওঠার পর তাদের জিম্মি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
টুরিস্ট পুলিশ
কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, কলাতলী এলাকার সাংস্কৃতিক
কেন্দ্রের সামনে একটি অপরাধী চক্র তিন-চারটি কটেজে টর্চার সেল বানিয়ে বেড়াতে আসা লোকজনকে
জিম্মি করে টাকা আদায়, পর্যটকদের নানাভাবে ব্ল্যাকমেল ও হয়রানি করে আসছে। এসব অভিযোগের
পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে সাইনবোর্ড বিহীন ‘শিউলি’ নামের কটেজের তালা ভেঙে চারজনকে উদ্ধার
করা হয়। এ সময় পেছনের দরজা দিয়ে অপরাধী চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যায়।
উদ্ধার ব্যক্তিরা
জানিয়েছেন, সেখানে ৫-৬ জন যুবক ও তিনজন নারী ছিলেন। দালালেরা তাঁদের কম টাকায় রুম দেওয়ার
কথা বলে ওই কটেজে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে থাকা নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলতে বাধ্য
করে। এ সময় তাঁদের টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে ফেলে এবং আরও টাকার জন্য পরিবারকে জানাতে
বলে। না হয় ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার রেজাউল করিম বলেন, হোটেল-মোটেল জোনে অনৈতিক কর্মকাণ্ড, মাদক ব্যবসা ও পর্যটকদের
হয়রানি করে টাকা আদায়ের কয়েকটি দালাল ও কিশোর গ্যাং চক্র রয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে
আইনের আওতায় এনে নিরাপদ পর্যটন জোন গড়ে তুলতে টুরিস্ট পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর মধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।এর আগে গত শুক্রবার কলাতলীর ডলফিন মোড়ে অভিযান
চালিয়ে ১৯ দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।