কক্সবাজারে ১৪ লাখ ইয়াবাসহ পৌনে দুই কোটি টাকা উদ্ধারের মামলায় যুবদল নেতাসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দুজনকে পাঁচ লাখ টাকা ও একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়াও উদ্ধার নগদ এক কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশও দেওয়া হয়। রায়ে শেখ আবদুল্লাহ (১৯) নামের একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট দীলিপ কুমার ধর এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়াছড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে যুবদল নেতা জহুরুল ইসলাম ফারুক (৩৮), একই এলাকার মোজাফফর আহমদের ছেলে নুরুল আমিন বাবু (৫০) ও আবুল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম (৫৫)।
রায় ঘোষণার সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। চারজনের মধ্যে শেখ আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে
এই মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টার দিকে ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী অভিযান চালিয়ে একটি কাঠের বোট থেকে জহুরুল ইসলাম ফারুক ও নুরুল আমিন বাবুকে গ্রেফতার করেন। পরে দেখানো মতে ওই বোট তল্লাশি করে ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
তাদের স্বীকারোক্তি মতে, একইদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের উত্তর নুনিয়াছড়ার আসামি জহুরুল ইসলাম প্রকাশ ফারুক ও তার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ইয়াবা বিক্রির দুটি বস্তাভর্তি নগদ এক কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে আবুল কালাম ও আবুল কালামে ছেলে শেখ আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী, মাদক আইনে জহুরুল ইসলাম ফারুক, নুরুল আমিন বাবু, আবুল কালাম ও শেখ আবদুল্লাহসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩২ জনকে সাক্ষী করে আমলি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি পক্ষের জেরা, যুক্তিতর্ক শেষে আদালত তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।