আজঃ সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

খানসামায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ জুলাই ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

খানসামা(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের খানসামায় আম বাগান থেকে গলায় শাড়ি পেঁচানো অবস্থায় সাদেকা বেগম (৩৫) নামে এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে খানসামা থানা পুলিশ।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকালে উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের সায়েদ চেয়ারম্যানপাড়া নামক এলাকার আম বাগান থেকে নিহত ঐ মহিলার পূর্বের স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির পাশে আমবাগান থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। নিহত ঐ মহিলা ওই এলাকার চৌরঙ্গী বাজারের ডাঙ্গাপাড়ার আব্দুস সামাদের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাদেকা বেগম প্রায় ৯ মাস পূর্বের তার প্রথম স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে ডিভোর্স দিয়ে নীলফামারীর জেলার সদর উপজেলার দারোয়ানী নামক এলাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। জানা গেছে, নিহত ঐ মহিলা প্রথম স্বামীর সংসার থাকাকালীন সময়ে ৩ টি ছেলে সন্তান জননী ছিলেন। আজ শুক্রবার সকালে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আজম ধান রোপন করার জন্য দোলায় আসলে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে এবং সে খবরটি দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে খবর পেয়ে তার ভাই, মা, বোনসহ প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তবে স্বজনদের দাবী ভিন্ন, তারা বলেন এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। কে বা কারা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।'

এ দিকে লাশ পড়ে থাকার খবর শুনে ঘটনাস্থলে শত শত মানুষ উপস্থিত হয়। তবে কি কারণে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে প্রাথমিকভাবে তা জানা সম্ভব হয়নি। পরে এলাকাবাসীরা থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পাওয়া পর্যন্ত লাশটি ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিলো। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, খানসামা থানার তদন্ত অফিসার তাওহীদ ইসলাম, উপপরিদর্শক এসআই ফরহাদ হোসেন ও বীরগঞ্জ সার্কেল অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোদাদাদ হোসেন।

বীরগঞ্জ সার্কেল অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোদাদাদ হোসেন বলেন, লাশের প্রাথমিক সুরতহাল করেছি। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা পর প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।

এ ব্যাপারে খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চিত্ত রঞ্জন রায়ের বক্তব্য নেয়ার জন্য ওনার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওনার ব্যস্ততার কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম (বাবুল) ও ইউপি সদস্য মোকছেদুল ইসলামের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।


আরও খবর



মিঠুনকে বিশ্বাসঘাতক বললেন মমতা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

বলিউড অভিনেতা ও বিজেপি সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীকে গাদ্দার বা বিশ্বাসঘাতক বলে আখ্যা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মিঠুন সম্পর্কে তিনি বলেন, ওকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছিলাম। ও এত বড় গদ্দার আমি জানতাম না। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

ভারতে শুরু হচ্ছে লোকসভা নির্বাচন। আগামীকাল শুক্রবার শুরু হবে প্রথম দফার ভোট। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি। লোকসভা ভোটে বিজেপির তারকা প্রচারকের তালিকায় রয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। ইতিমধ্যে উত্তরে প্রচারও শুরু করেছেন।

সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেছেন, ফিল্মস্টার থেকে মিনিস্টার সবাইকে আনছে ভোট করাতে। এই মিঠুন চক্রবর্তীকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছিলাম। তখন জানতাম না ও বাংলার আরও একটা বড় গদ্দার।

মমতার দাবি, নিজের ছেলেকে বাঁচাতে আরএসএস দপ্তরে মাথা নিচু করেছিলেন মিঠুন। তিনি বলেন, মনে পড়ে, তার ছেলেকে ধরেছিল, বিয়ের পিঁড়িতে হানা দিয়েছিল। সেইসময় নিজের ছেলেকে বাঁচাতে মিঠুন চলে যায় আরএসএস অফিসে। ওখানে গিয়ে বলে, আমি বিজেপির সেবক আছি।


আরও খবর



বান্দরবানে সব বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বান্দরবানে আমরা সব বাহিনীর সদস্য আরও বাড়াবো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে যা যা করা দরকার তা করব।

আজ শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না। বান্দরবানের রুমার ঘটনায় সন্ত্রাসীরা তাদের সক্ষমতা প্রর্দশন দেখানোর চেষ্টা করেছে মাত্র। তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ধূলিসাৎ করে দেবে।

তিনি বলেন, বান্দরবানের ঘটনায় বিদেশি কোনো মদদ নেই। বিদেশি যাদের কথা বলা হচ্ছে, তারা নিজেদের সমস্যা সমাধানে ব্যস্ত। এই অপরাধে জড়িত কেউ দেশের বাইরে গেলে সেখান থেকে তাকে এনে বিচার করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেএনএফ যে হামলা ও লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন শক্তিশালী অভিযান চালানোর। সমন্বিত অভিযানের বিষয়ে সেনাবাহিনী সিদ্ধান্ত নেবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বাহিনী তাদের মতো অভিযান চালাবে।

এর আগে আজ সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবানে রুমা উপজেলায় যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে সোনালী ব্যাংকে শাখা পরিদর্শন করেন এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বিবরণ শোনেন।


আরও খবর



ইসরায়েলি সৈন্যদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ নেতানিয়াহু

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নেতজাহ ইহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েল বাহিনীর ওই সৈন্যরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এজন্য আইডিএফর এলিট বাহিনী হিসেবে পরিচিত নেতহাজ ইহুদা ব্যাটালিয়নকে কালো তালিকাভূক্তির ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

রোববার রাতে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত নয়। কারণ আমাদের সৈন্যরা দানব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। যদি আইডিএফর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তাহলে তা হবে অযৌক্তিক।

তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে এতদিন ধরে যে নির্দেশনা দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা দিলে তা ব্যর্থতায় পরিণত হবে।

ইসরায়েলি দুই মন্ত্রী ইতামার বিন গিভির এবং বেঞ্জালেল স্মোট্রিচ যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, আমাদের সৈন্যদের ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তা হবে সীমা লঙ্ঘনের সামিল।

ইতামার বিন গিভির আরও বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের অধিক সতর্ক হওয়া উচিত এবং আমাদের নেতহাজ ইহুদা বাহিনীকে রক্ষা করা উচিত। 

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োব গ্যালান্টকে ইসরায়েলি সরকারের বাজ পাখি আখ্যায়িত করে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের কাছে মাথা নত না করার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী গিভির।

দেশটির অর্থমন্ত্রী বিজালেল স্মোট্রিচ এক্স প্লাটফর্মে এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিরক্ষা বাহিনীর এলিট ফোর্টের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপকে পাগলের কার্যকলাপের সঙ্গে তুলনা করেছেন।


আরও খবর



হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।

রোববার (২১ এপ্রিল) সচিবালয়ে সারাদেশের হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন বলে জানান মন্ত্রী।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। অনেক জায়গাই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তাপদাহের কারণে কোল্ড কেস (যাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া জরুরি নয়) এ মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলো প্রতিকূল পরিবেশের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ গরমে সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল বয়স্ক এবং বাচ্চারা। এবার এমন একটা জলবায়ু পরিবর্তন হলো যে আমরা জীবনে কখনো শুনিনি যে দুবাই বিমানবন্দর পানিতে ডুবে গেছে। আমাদের এগুলো ফেস করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে যখন মেসেজ আসলো (হিট এলার্ট) আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেসেজ দিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চা এবং বয়স্করা।

আজ হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনের সঙ্গে মিটিং করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার কয়েকটা নির্দেশনা ছিল তার মধ্যে একটা হলো-বয়স্ক এবং বাচ্চারা প্রয়োজন ছাড়া যেন বাসার বাইরে না যায়। হাসপাতালগুলোতে কোনো কোল্ড কেস এখন ভর্তি করতে না করেছি। কোল্ড কেস অর্থাৎ এক মাস পর অপারেশন করলে অসুবিধা না হয়, সেটা দুই সপ্তাহ পরে করুক। হাসপাতাল খালি রাখার জন্য বলছি যে যদি চাপ হয়, তাহলে বাচ্চা এবং বয়স্কদের জন্য যেন ভর্তি করা হয়। এখন কোল্ড কেস কয়েক দিন বন্ধ থাকবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওরাল স্যালাইনের কোথাও কোনো ঘাটতি হলে যেন আমাকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়। এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রকৃতির সঙ্গেতো আমাদের কারো হাত নেই। এটা আমাদের রেডি রাখতে হবে।

শিশুদের জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি গতকাল শিশু হাসপাতালে গিয়েছি। শিশু হাসপাতালগুলোকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার জন্যই সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। কোল্ড কেসগুলোকে এখন হাসপাতালে ভর্তি না করতে বলা হয়েছে। শিশুদের ব্যাপারে সারাদেশের চিকিৎসকদের নিয়ে আজ থেকে একটি অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা জানান, মহাখালীতে করোনা চিকিৎসার জন্য ডিএনসিসি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের জন্য আলাদাভাবে বেড রাখতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



মূল্যবান খনিজ জমিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর ডংগিংয়ে গতবছর নতুন জ্বালানি তেলের একটি ডিপো নির্মাণের কাজ শেষ করেছে চীন। আর চলতি বছরের শুরু থেকেই সেখানে নজরে আসছে তেলবাহী ট্যাংকারগুলোর ব্যস্ততা। কৌশলগত জ্বালানি মজুত হিসেবে অভিহিত ডংগিংয়ের এ বিশাল তেলের ডিপোর ধারণ ক্ষমতা ৩ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল। মূলত রাশিয়া থেকে ভর্তি হয়ে আসা ট্যাংকারগুলোই এখানে খালাস করছে তাদের তেল। দ্রুত খালাস করেই নতুন চালান ভরতে চীনা ট্যাংকারগুলো ফের ছুটছে রাশিয়ার বন্দরগুলোর উদ্দেশ্যে।

যেভাবে তেলের মজুত বাড়াচ্ছে চীন

দিন দিন রাশিয়া থেকে চীনের এ জ্বালানি আমদানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দিনে গড়ে ২১ লাখ ব্যারেল তেল মস্কো থেকে আমদানি করছে বেইজিং। টানা দুবছর ধরে বেইজিংয়ের জ্বালানি সরবরাহের প্রধান উৎস মস্কো। এতো বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কেনার মাধ্যমে চীনের কৌশলগত জ্বালানি তেলের মজুত বর্তমানে উঠানামা করছে ২৮ কোটি থেকে ৪০ কোটি ব্যারেলের মধ্যে।

যেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জ্বালানি মজুতের পরিমাণ ৩৬ কোটি ব্যারেলের আশপাশে। শান্তিপূর্ণ সময়ে চীনের দৈনিক জ্বালানি চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল। এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময়ের তেলের মজুত নিজের হাতে ধরে রেখেছে চীন।

চীনের তেলের মজুত গড়ে তোলার এ পরিসংখ্যানই পশ্চিমা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক মহলকে উদ্বিগ্ন করে তোলার জন্য যথেষ্ট। তাদের ধারণা, সামনে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা আঁটছেন চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর অংশ হিসেবেই দ্রুত ডংগিংয়ের মতো এসব ডিপোকে তেলে ভর্তি করছে বেইজিং।

অন্যান্য খনিজের মজুতও বাড়াচ্ছে চীন

শুধু জ্বালানি তেলই নয়, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কৌশলগত প্রায় সব শিল্প কাঁচামালের মজুত গড়ে তুলছে বেইজিং। পশ্চিমা মহলের ধারণা, ভবিষ্যতে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি কিংবা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকেই এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও বেইজিংকে সুযোগ করে দিচ্ছে ডিসকাউন্ট দরে মস্কো থেকে তেলসহ অন্যান্য কাঁচামাল কেনার ব্যাপারে। জ্বালানি তেলের পাশাপাশি অনেক সস্তায় মস্কো থেকে নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ কিনতে সক্ষম হচ্ছে চীনা কোম্পানিগুলো। আর চীনের এ মূল্যবান ধাতু কিনে মজুত করার প্রবণতার গতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়ার নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার ওপর আরোপ করা সর্বশেষ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়ামের এক-তৃতীয়াংশই চীনের কব্জায়

এসব ধাতুর পাশাপাশি বেইজিংয়ের নজরে রয়েছে বর্তমান যুগের অন্যতম মূল্যবান খনিজ পদার্থ হিসেবে পরিচিত লিথিয়ামের ওপরও। ব্যাটারি শিল্পের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে চীন মজুত বাড়িয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না; বরং বিভিন্ন দেশে থাকা লিথিয়ামের খনি থেকে শুরু করে পরিশোধনাগার পর্যন্ত কিনে ফেলতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইউবিএস গত মার্চে জানায়, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বের সব লিথিয়াম সরবরাহের তিন ভাগের একভাগই চলে যাবে চীনের কব্জায়।

অবশ্য চীন অনেক আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ধাতু ও বিরল মৃত্তিকার মতো খনিজ পদার্থের মজুত গড়ে তুলছে। এ ব্যাপারে মার্কিন খনি বিষয়ক দফতর ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের হাতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম, কোবাল্ট, কপার, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম, ইরিডিয়াম, ট্যানট্যালাম, টিন, টাংগেস্টন, জিংক ও জিরকোনিয়ামের পাশাপাশি অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা পদার্থের মজুত রয়েছে। এরপরের বছরগুলোতে চীন এসব খনিজ মজুত করার তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে।

চীন স্বর্ণের মজুদও বাড়াচ্ছে, টান পড়ছে সারা বিশ্বে

শুধু এসব খনিজ পদার্থই নয়, বরং স্বর্ণের মজুতও দিন দিন বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। আর এ স্বর্ণ শুধু সরকারই কিনছে না, বরং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে বেড়ে গেছে স্বর্ণ কেনার প্রবণতা। মূলত চীনাদের এ স্বর্ণ কেনার প্রবণতাই বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দামকে রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ ডলারে।

মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনেই চীনের এ স্বর্ণ কেনার উদ্দেশ্য বলে কেউ কেউ মনে করছে। তবে এর পেছনে দেশটির জনগণের একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানও রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা আঁচ করতে পেরেই চীনের এলিট সমাজ তাদের সম্পদ দেশের বাইরে জমা করার বদলে দেশেই নিজের হাতের নাগালে রাখতে চাইছেন। আর স্বর্ণ কিনে জমা রাখার মাধ্যমেই তা সবচেয়ে ভালোভাবে সম্ভব। অর্থাৎ চীন যে তাইওয়ানকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে, সে বিশ্বাস দানা বাঁধছে চীনের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

টার্গেট তাইওয়ান, ডেডলাইন ২০২৭

জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মজুত চীন যেভাবে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে নিচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের সামরিক বাহিনীকেও ব্যাপকভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করছে বেইজিং। এমন এক সময়ে এই সামরিকীকরণ চলছে যখন তাইওয়ানকে ঘিরে বেইজিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বেরও উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। আর চীনের এসব প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন সামরিক মহল। মার্কিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন শি জিনপিং তাইওয়ান দখলে তার সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। আর এজন্যই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও সামরিক খাতে খরচ বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত নৌবাহিনীর সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুলিনো বলেন, অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকা সত্ত্বেও সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে চীন সচেতনভাবে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে। যা কিনা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিষয়ক ব্লগিং সাইট ওয়ার অন দ্য রকস’-এ নিজের এক লেখায় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের পরিচালক অ্যাডমিরাল মাইক স্টুডম্যান বলেন, শি জিনপিং (চীনা প্রেসিডেন্ট) তার দেশকে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত করছেন। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য এক বিধ্বংসী যুদ্ধের জন্য শি জিনপিং চীনা সমাজকে সামরিকীকরণের মাধ্যমে পুরো দেশকে বর্মে মুড়িয়ে ফেলছেন।’

এর অংশ হিসেবেই চীনা কর্তৃপক্ষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচামালের একটি কৌশলগত মজুত গড়ে তুলছে বলে মনে করেন মার্কিন এ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো, সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই বেইজিং এই মজুত গড়ে তুলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মাইক স্টুডম্যান আরও বলেন, ২০২২ সালে চীনের শীর্ষে নেতৃত্বের যে রদবদল, সেখানেও শি জিনপিংয়ের এ যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত রয়েছে। বেছে বেছেই তাইওয়ান সম্পর্কে অভিজ্ঞদের নিজের ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে চীনের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদ পলিটব্যুরোর ২৪ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনকেই মনে করা হয় তাইওয়ান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।

এমনকি তাদের মধ্যে সামিল রয়েছেন এমন একজন সামরিক কর্মকর্তা, পলিটব্যুরোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে তার আগের ধাপ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না তিনি। তাইওয়ান বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতাই পলিটব্যুরোতে জায়গা করে দেয় তাকে। এ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের সাবেক কমান্ডার। আর তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের যেকোন সামরিক অভিযানের সার্বিক দায়িত্ব প্রথমে এই ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের ওপরেই বর্তাবে।

যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা বিশ্ব

তবে চীন যখন দ্রুত তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে, তখনও চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা মহল। জ্বালানি ও কাঁচামালের আন্তর্জাতিক উৎস থেকে বেইজিংকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে এখনও দৃশ্যমান কোন শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি তারা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চ প্রযুক্তির মাইক্রো চিপ থেকে চীনকে বঞ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত। বরং চলতি মাসে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস চীন সফরের মধ্যদিয়ে এ বার্তাই দেয়া হচ্ছে যে, ইউরোপীয়রা চীনের সঙ্গে বর্তমান বাণিজ্যিক সহযোগিতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী।


আরও খবর