পদ্মা সেতুকে
জোড়াতালির বলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে
সেতুর ওপর থেকে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা, আর টাকা বন্ধের চেষ্টা করা ড. মুহম্মদ
ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন,
‘‘খালেদা জিয়া বলেছিল, ‘জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে
চড়া যাবে না, চড়লে ভেঙে পড়বে।’’ পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে (খালেদা জিয়াকে)
টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত। আর যিনি আমাদের একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো
সেতুর টাকা বন্ধ করেছেন, তাকেও আবার পদ্মা নদীতে নিয়ে দু’টা চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া
উচিত। মরে যাতে না যায়। একটু পদ্মা নদীতে দু’টা চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত।
তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়।’
বুধবার (১৮ মে)
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায়
তিনি এসব কথা বলেন। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী তার
সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন,
‘পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করালো ড. ইউনূস।
কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটা এমডির পদে তাকে থাকতে হবে। তাকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম
গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা হতে। একটা উপদেষ্টা হিসেবে থাকা আরও উচ্চ মানের। সেটা সে
ছাড়বে না, তার এমডিই থাকতে হবে। কিন্তু তার বয়সে কুলায় না। ড. ইউনুস কিন্তু আমাদের
সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। কিন্তু কোর্ট আর যাই পারুক, তার বয়স তো কমিয়ে দিতে
পারে না, ১০ বছর। কারণ, গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তখন
তার বয়স ৭১ বছর। এই বয়সটা কমাবে কীভাবে? সেই মামলায় সে হেরে যায়। কিন্তু প্রতিহিংসা
নেয়।’
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘ড. ইউনূস এবং যেটা আমরা শুনেছি মাহফুজ
আনাম, তারা আমেরিকায় চলে যায়। স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারির কাছে ইমেইল পাঠায়।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মি. জোলি যিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তার শেষ কর্মদিবসে কোনও বোর্ড
সভায় না, পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়। যাক, একদিকে শাপেবর হয়েছে। কেন হয়েছে? বাংলাদেশ
যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে, সেটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি। কিন্তু আমাদের
এখানের একজন জ্ঞানী লোক বলে ফেললেন যে, পদ্মা সেতুতে যে রেল লাইন হচ্ছে— ৪০ হাজার কোটি
টাকার খরচ হচ্ছে। ৪০ হাজার কোটি টাকা তো ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। এই ঋণ শোধ হবে কীভাবে?
দক্ষিণবঙ্গের কোনও মানুষ তো রেলে চড়বে না। তারা তো লঞ্চে যাতায়াত করে। তারা রেলে চড়তে
যাবে কেন? এই রেল ভায়াবল হবে না।’
সরকার প্রধান
বলেন, ‘‘সেতুর কাজ হয়ে গেছে, এখন সেতু নিয়ে কথা
বলে পারছে না। এখন রেলের কাজ চলছে, এখন রেলের কাজ নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। আমার মনে
হয়, আমাদের সবার উনাকে চিনে রাখা উচিত। রেল গাড়ি যখন চালু হবে, তখন উনাকে নিয়ে রেলে
চড়ানো উচিত। আর খালেদা জিয়া বলেছিল, ‘জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে।’ কারণ, বিভিন্ন স্প্যানগুলো
যে বসাচ্ছে, ওটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেওয়া। তো বলেছিল, ‘জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে
চড়া যাবে না, চড়লে ভেঙে পড়বে।’ তার সঙ্গে তার কিছু দোসররাও। এখন তাদেরকে কী করা উচিত?’’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস
করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত। আর যিনি আমাদের একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর
টাকা বন্ধ করেছে, তাকেও আবার পদ্মা নদীতে নিয়ে দু’টা চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া উচিত।
মরে যাতে না যায়। একটু পদ্মা নদীতে দু’টা চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে
যদি এদের শিক্ষা হয়। বড় বড় অর্থনীতিবিদ, জ্ঞানী-গুণী এই ধরনের অর্বাচিনের মতো কথা বলে
কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন। মেগা প্রজেক্টগুলো করে নাকি খুব ভুল করছি। তারা আয়েশে বসে থাকে, আর আমার তৈরি
করা সব টেলিভিশনে গিয়ে কথা বলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করি। সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন,
‘আজকে যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ
করেছি, সেটা নিয়েও এত টাকা দিয়ে স্যাটেলাইট করে কী হবে? এই প্রশ্নও কিন্তু তুলেছে তারা।
অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করলে তাদের গায়ে লাগে। কেন? তাহলে তারা কি এখনও সেই
পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের পদলেহনকারী, খোশামদি, তোষামদির দল? গালিটালি দিই না, দেওয়ার
রুচিও নাই। তবে একটু না বলে পারি না, যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বাংলাদেশের
মেয়েদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, পোড়ামাটি নীতি নিয়ে
বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, সেই পাকিস্তানিদের পদলেহনকারীর দল এখনও বাংলাদেশে জীবিত—
এটা হচ্ছে সব থেকে দুঃখজনক। এখনও তারা বাংলাদেশের ভালো কিছু হলে ভালো দেখে না। বাংলাদেশ
এগিয়ে গেলে তাদের ভালো লাগে না।’
সরকার প্রধান
বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে আমরা ২০০৯-এর পরে যে সরকার
গঠন করেছি, তার পরেও আমাদের কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি। অগ্নি সন্ত্রাস করে বিএনপি জীবন্ত
মানুষগুলোকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারে। পেট্রোল বোমা মারে। আমরা রাস্তাঘাট বানাই, তারা রাস্তাঘাট
কাটে। আমরা বৃক্ষরোপণ করি তারা গাছ কাটে। এ ভাবে দেশকে তারা বার বার ধ্বংসের দিকে নেওয়ার
চেষ্টা করেছে। সরকার উৎখাত করার তারা উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাদের
ডাকে তো জনগণ সাড়া দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। ওই ১০ ট্রাক
অস্ত্র মামলায় এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়েছিল জীবনে কোনও দিন রাজনীতি করবে
না। এই মুচলেকা দিয়েই কিন্তু দেশ ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু এই মামলায় বিচারের রায়ে সে সাজাপ্রাপ্ত।
এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া।’