গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে এক হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে কুমিল্লার উদ্দেশে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেন জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান।
তিনি জানান, ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেলবিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে সম্প্রতি নির্যাতন করে তার কাছ থেকে টাকা-পয়সা লুট করে নেন বলে- জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর ভাই। ফলে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-১০ আসনে নৌকার মাঝি মহিউদ্দিন বাচ্চু
এই জেল সুপার বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনায় তিন জনকে শোকজ করা হয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শোকজ করা তিনজন হলেন- কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা ও মেট্রন হাবিলদার ফাতেমা।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া কারাগারের ভেতরে এমন ঘটনা যাতে আর না হয়, সে বিষয়েও খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মামা-ভাগনের
উল্লেখ্য- নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিস আইনজীবী রুনাকে ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেওয়ার পর তার দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে সাত হাজার ৪০০ টাকা পান। ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা গত ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
এক পর্যায়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রুনাকে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে কেস টেবিল বা সালিশ বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে পাপিয়ার ভয়ে সাধারণ কয়েদিরা রুনার ওপর অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদও করতে পারেনি।