আদা এমন একটি
আনাজ যার ভেষজ গুণের কথা সকলেই জানেন। বহু কাল ধরেই আদা পেটের গোলযোগ, সর্দি কাশি,
বমি বমি ভাবের মতো সমস্যার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় আর্থ্রাইটিস,
হাঁপানি এবং অ্যালার্জি, ক্যানসার, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং মাইগ্রেনের মতো প্রদাহজনিত
রোগের চিকিৎসাতেও আদার কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু তাজা না শুকনো, কোন আদা
খাওয়া বেশি উপকারী তা নিয়ে খুব একটা অবগত নন অনেকেই। মূলত তিনটি বিষয়য়ের উপর ভিত্তি
করে এই বিষয়টির পর্যালোচনা করা যেতে পারে।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট
হিসাবে
বেশ কয়েকটি গবেষণায়
দেখা গিয়েছে যে শুকনো আদায় পলিফেনল জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উচ্চ মাত্রায় থাকে।
ফলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে শুকনো আদা বেশি কার্যকর। আসলে শুকোনোর প্রক্রিয়ায়
আদা থেকে জলীয় উপাদানগুলি বার করে ফেলার ফলে পলিফেনলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। তবে আদা
গরম করলে বা রান্না করার সময়, এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কিছুটা শক্তি হারায়। কারণ
তাপের সংস্পর্শে জৈব রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু তাই বলে কাঁচা আদায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট
থাকে না এমন ভাবার কোনও কারণ নেই।
জীবাণুনাশক গুণ
আদায় পাওয়া যায়
একাধিক ‘এসেনশিয়াল অয়েল’ বা অপরিহার্য তেল। এই তেলগুলির জীবাণুনাশক
গুণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা আদার জীবাণুনাশক ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে বেশি। কাঁচা
আদা শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টিকারী জীবাণু ও বিভিন্ন ছত্রাকঘটিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে
খুবই উপযোগী। তবে সিউডোমোনাস জাতীয় জীবাণুর বিরুদ্ধে শুকনো আদা বেশি কার্যকর।
বমি ভাব কমাতে
জিঞ্জেরল এবং
শোগাওল নামক দু’টি পলিফেনল গ্রুপ আদার তীব্র স্বাদের
জন্য দায়ী। এই দুটি উপাদান অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে এবং বমিভাব কমাতেও বেশ কার্যকর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জিঞ্জেরল এবং শোগাওল হজমকে উদ্দীপিত করে, পাকস্থলীর পেশিকে সতেজ রাখে
এবং কিছু নিউরোট্রান্সমিটার ব্লক করতে কাজে আসে যা আমাদের বমি বমি ভাব কমাতে সহায়তা
করতে পারে। কাঁচা আদাতে বেশি পরিমাণে জিঞ্জেরল থাকে। অন্য দিকে শুকনো আদাতে শোগাওলের
পরিমাণ বেশি থাকে। ফলত সব মিলিয়ে বলা যায় কাঁচা ও শুকনো উভয় প্রকার আদাই শরীরের পক্ষে
বেশ উপকারী।