২০২২-২৩ মৌসুমে কানাডায় খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং মাটিতে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ায় এমন সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের গ্লোবাল এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২-২৩ মৌসুমে কানাডায় খাদ্যশস্য উৎপাদন ৩০ শতাংশ বাড়বে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৮০ লাখ টনে। বসন্তকালীন গম, দুরাম ও জইয়ের আবাদ লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে। কানাডার অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য আবাদি অঞ্চল আলবার্টা ও পশ্চিম সাসক্যাচুয়ান। এসব অঞ্চলে খরা পরিস্থিতি কতটুকু দীর্ঘায়িত হয় তার ওপরই সংস্থাটির এ পূর্বাভাস নির্ভর করছে। এ ঝুঁকি কেটে গেলে পূর্বাভাস মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে ইউএসডিএ।
কানাডায় খরার কারণে চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। আবাদের পরিমাণও ছিল নিম্নমুখী। এ কারণে ২০২২-২৩ মৌসুমে কয়েক বছরের সর্বনিম্নে নামতে পারে গম, যব ও জইয়ের প্রাথমিক মজুদ। ভুট্টার প্রাথমিক মজুদ কমে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টনে নামার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ শস্যটির মজুদ আট বছরের সর্বনিম্নে নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পশুখাদ্য উৎপাদনে ঊর্ধ্বমুখী স্থানীয় চাহিদাকে এর পেছনে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
ইউএসডিএ বলছে, ২০২২-২৩ মৌসুমে কানাডায় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৮০ হাজার টন গম উৎপাদন হতে পারে। মৌসুম শেষে শস্যটির মজুদ দাঁড়াবে ৪০ লাখ টনে। ২০২২-২৩ মৌসুম শেষে গমের মজুদ ও ব্যবহারের অনুপাত কমে ১২ শতাংশে নামার পূর্বাভাস মিলেছে। ১৯৩৮ সালের পর এমন নিম্নমুখিতা দেখা যায়নি।
২০২২-২৩ মৌসুমে গম, যব ও জই রফতানি গত বছরের তুলনায় ৩২ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ। ফলন পরিস্থিতির উন্নতি দেশটির রফতানিযোগ্য গম সরবরাহ ৬০ লাখেরও বেশি বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শস্যটির মজুদ ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবস্থান করবে বলে জানিয়েছে ইউএসডিএ। কারণ বিশ্বজুড়ে গমের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে শস্যটির সরবরাহ সংকট তীব্র। এদিকে ২০২২-২৩ মৌসুমে কানাডায় ৯৪ লাখ টন যব উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভালো দাম ও আবাদ বৃদ্ধির কারণে জই উৎপাদন ৪০ লাখ ৩০ হাজার টনে উন্নীত হতে পারে।
আগামী মৌসুমে ভুট্টা উৎপাদন ১ কোটি ৩৬ লাখ টনে নামবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ। চলতি মৌসুমে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টন উৎপাদন হয়েছে। মূলত আবাদ কমে যাওয়ার কারণেই উৎপাদন কমতে পারে। অন্যদিকে ভুট্টা, যব, গম ও জই আমদানি ৪০ শতাংশেরও বেশি কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত পশুখাদ্য উৎপাদন খাতে ভুট্টা ও যবের নিম্নমুখী চাহিদা এতে ভূমিকা রাখবে।