প্রাথমিক অভিযোগের
ছয় বছর পর নতুন তদন্তের হাত ধরে যৌন হয়রানির অপরাধে অভিযুক্ত হলেন কানাডার পাঁচজন আইস
হকি খেলোয়াড়। তদন্তে এত বেশি সময় লাগার জন্য অভিযোগকারীর কাছে ক্ষমা চায় কানাডার পুলিশ।
অভিযুক্ত পাঁচ
খেলোয়াড়ের মধ্যে চারজন বর্তমানে দেশের জাতীয় হকি লিগ খেলেন। সোমবার কানাডিয়ান পুলিশ
নিশ্চিত করে যে মোট পাঁচজন আইস হকি খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তারা। এই পাঁচ
খেলোয়াড় ২০১৮ সালের জুনিয়র হকি দলের সদস্য ছিলেন।
২০১৮ সালের
জুনে প্রথম এই অভিযোগের কথা প্রকাশ হয়। অভিযোগকারী নারী বলেন যে কানাডার ওন্টারিও রাজ্যের
লন্ডন শহরের একটি হোটেলের কামরায় আইস হকি দলের সদস্যরা তাকে যৌন হেনস্থা করে। এই মামলাটি
পুলিশ ২০১৯ সালে বাতিল করলেও ২০২২ সালে আবার সেই তদন্ত শুরু হয়। এই বিলম্বের জন্য পুলিশ
সোমবার ক্ষমা চেয়েছে।
একটি সংবাদ
সম্মেলনে পুলিশ প্রধান থাই ট্রুয়োং বলেন, ‘লন্ডন পুলিশ পরিষেবার তরফে তদন্তে এতটা সময় লাগার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি
নির্যাতিতার কাছে, তার পরিবারের কাছে। এত সময় লাগা উচিত হয়নি। আজকের পরিণতিতে পৌঁছাতে
এত বছর কেটে যাওয়া ঠিক নয়। আমরা কথা দিচ্ছি, এবং আমি নিশ্চিত যে এমন আর হবে না।’
যৌন হয়রানির
অভিযোগ:
গত সপ্তাহে
কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেন পাঁচ খেলোয়াড়—কার্টার হার্ট, মাইকেল ম্যাকলয়েড, ক্যাল ফুট, ডিলন ডুব ও অ্যালেক্স ফর্মেন্টন।
এদের মধ্যে চারজন বর্তমানে দেশটির জাতীয় হকি লিগের খেলোয়াড়, কিন্তু এখন ‘ছুটিতে’। ফর্মেন্টন খেলেন সুইজারল্যান্ডে।
তাদের প্রত্যেকের
বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একটি অভিযোগ ছাড়াও ম্যাকলয়েডের বিরুদ্ধে রয়েছে অপরাধে সহযোগিতা
করার আরেকটি অভিযোগ। পাঁচজনই সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
লন্ডন শহরে
সাংবাদিকদের সঙ্গে ৪৫মিনিট কথা বলেন পুলিশ প্রধান ট্রুয়োং। কেন প্রথমে বাতিল করার পর
আবার তিন বছর পর তদন্ত শুরু করা হলো, সেবিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তিনি।
ডিটেকটিভ সার্জেন্ট
ক্যাথরিন ডান, যিনি যৌন হয়রানি ও শিশু নির্যাতন বিভাগে কর্মরত, তিনি ২০২২ সাল থেকে
পুনরায় শুরু হওয়া তদন্তের ভার নেন। তার মতে, ২০১৯ সালে শেষ হওয়া তদন্তের সময় নতুন প্রামাণ্য
তথ্য হাতে ছিল না।
এই তদন্তে অভিযোগ
দায়ের করার জন্য ‘যৌক্তিক ও সম্ভাব্য’ কারণ ছিল তাদের কাছে, যার ফলে দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তদের কারাবাস
করতে হতে পারে। সোমবার শুরু হয়ে এই মামলা চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
জাতীয় ফেডারেশন
হকি কানাডা একটি বিবৃতিতে জানায় যে তারা পুলিশের সঙ্গে ‘সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছে। কিন্তু
সাংবাদিক সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যে প্রাথমিক তদন্তে কোনো ফেডারেশন নেতার
সংযোগ পাওয়া গেছে কি না সেই প্রশ্নেরও উত্তর আসেনি।
হকি কানাডার
প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথরিন হেন্ডারসন বিবৃতিতে বলেন, ‘হকি কানাডা স্বীকার করছে যে অতীতে
কোনো পদক্ষেপ নিতে আমাদের দেরি হয়েছে। কানাডার
মানুষ আমাদের কাছে যে অর্থবহ পরিবর্তন আশা করেন, তার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে অবিলম্বে।
যাতে করে, মানুষের আস্থা আমরা ফিরে পাই এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খেলার সময়ে ও অন্যত্র
অংশগ্রহণকারীদের একটি নিরাপদ আবহাওয়া নিশ্চিত করা।’