আজঃ মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪
শিরোনাম

‘কালো টাকা সাদা হওয়ায় অর্থনীতি বেগবান হচ্ছে’

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ জানুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

কালো টাকা সাদা হওয়ায় অর্থনীতি অনেক বেগবান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আনুষ্ঠানিকভাবে টাকাগুলো আসায় অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।

সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বুধবার (০৬ জানুয়ারি) দুপুরে অনলাইনে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মুস্তফা কামাল।

ছয় মাসে কালো টাকা সাদা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার উপরে, করোনার মধ্যে এটা কীভাবে হলো জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সাদা করতে চাই বলে সাদা হলো। আমাদের বাজেটে আছে। বাজেট বক্তৃতায় আছে, আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো অ্যাডড্রেস করতে চাই। প্রথমেই আমাদের রেমিট্যান্সে প্রণোদনা চালু করেছি। আরো একটা ক্ষেত্র রয়েছে, যেটা প্রতিটা দেশের জন্য বড় এলাকা। সেটা হলো আবাসন খাত। এই আবাসন খাতে স্ট্যাম ফি ও ডিউটি বাড়তি থাকার কারণে কোনো রেজিস্ট্রেশন হয় না। ফলে সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। বাড়ি বিক্রি হচ্ছে অর্থচ বিক্রি দেখাচ্ছে না। আর বিক্রি যেখানে ১০ টাকা সেটা দেখাচ্ছে এক টাকা। ১০ টাকার উপরে গেলে স্ট্যাম ডিউটি দিতে হয়, সেজন্য স্ট্যাম ডিউটি কমিয়ে দিয়েছি। এরকম যেখানে যেখানে হাত দেওয়া দরকার সেখানে সেখানে করেছি। সেগুলো করার কারণেই এখন কালো টাকা সাদা হচ্ছে।

মুস্তফা কামাল বলেন, গত এক বছরে বা ছয় মাসে আমাদের রেমিট্যান্স অর্জন হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। পুরো বছরে আমাদের ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা বেশি আসবে। এই টাকাগুলো কোথায় যাবে, পুঁজিবাজারে যাবে। অফিসিয়ালি এ টাকাগুলো আসাতে আমাদের অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই টাকাগুলোর মাল্টিটেরিফাই অনেক বেশি। এতে একজনের একটা ট্রানজেকশন ১০ হাত ঘুরে। এতে অর্থনীতি অনেক বেগবান হচ্ছে। আমি মনে করি আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। পুরোপুরি না হলেও বেশির ভাগই আমরা সফল হয়েছি। আমরা চাই কালো টাকা সাদা হোক। যখন কালো হয়ে গেছে তখন সাদা হবে। আর কালো হওয়ার কারণ নিয়ে অনেক বার ব্যাখ্যা দিয়েছি। 

অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকা আমাদের পলিসিগত কারণে কালো হয়। অনেকেই ট্যাক্স দেয় আবার অনেকেই ট্যাক্স দেয় না। আবার ট্যাক্স রেট অনেক বেশি ছিল। আস্তে আস্তে যদি এগুলো কমিয়ে আনতে না পারি তাহলে হবে না। আমাদের সুদের হার অনেক বেশি ছিল। এত বেশি সুদহারে কোনো দেশে শিল্পায়ন হয় না। পাশাপাশি কোনদিন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। আমরা সেখানেও সফল, মোটামুটি আমরা যেটি করে দিয়েছি সেটা সবাই গ্রহণ করেছে। এখন যে ৬ শতাংশে ঋণ পাচ্ছে, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিদেশে টাকা রাখলে উল্টো টাকা দিতে হবে। সেখানে লাভ পায় না, যদিও পায় সেটা এক থেকে দেড় শতাংশ। সেখানে আমাদের দেশে ৬ শতাংশ পাচ্ছে। এটা হলো আমাদের ইতিবাচক দিক। এটা আমাদের দেখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের অনেকের টিআইএন নম্বর আছে কিন্তু আমরা ট্যাক্স পাচ্ছি না। টিআইএন নম্বর দিয়ে কী হবে যদি ট্যাক্স না পাই। সেই কাজটি করার জন্য আমরা ফুল অটোমেশনে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত অটোমেশন শেষ করতে না পারি ততদিন পর্যন্ত আমাদের এ সমস্যা থাকবে। সেজন্য সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রাজস্ব খাতে অটোমেশনের।

বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসার দুই বছর পূর্তি হলো এটাকে কীভাবে মুল্যায়ন করবেন জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কতটা করলাম আর কতটা করতে পারলাম না সেটা মূল্যায়ন তো আপনারা করবেন। আমার কাজ হচ্ছে কাজ করা দেশ ও দেশের প্রতিটা নাগরিকের জন্য।

তিনি বলেন, আমাদের আমদানি কমে গেছে, যদি আমদানি বেশি থাকতো তাহলে আমাদের ডিউটি বাড়তো। আমাদের আয়করের হার ভালো আছে। তুলনামূলক আমরা অনেক দেশের থেকে ভালো আছি।

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারে যদি বিদেশি বিনিয়োগ থাকতো তাহলে তারা যেকোনো মুহূর্তে পুঁজি তুলে নিতে পারতো। যেটা আমরা ১৯৯৭ সালে দেখেছি। সাউথ এশিয়ার সাথে যেটা হলো। সে সময় বিদেশিদের টাকা তারা তুলে নিয়ে যাওয়ায় অর্থনীতি বসে গেছে। আমাদের এ ধরনের চিন্তার কোনো কারণ নেই। কারণ, আমাদের ফিসক্যাল পলিসি ও মনিটরি পলিসি, বাজেট, পঞ্চবার্ষিক প্ল্যান সঠিক আছে। সেজন্য আমরা ভালো আছি।


আরও খবর



ডোমারে রেললাইনে কাটা পড়লো নেশাগ্রস্থ যুবক

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

নীলফামারীর ডোমারে বাড়ির পাশে রেললাইনে বসে মাদক সেবনরত অবস্থায় সাদ্দাম হোসেন(২৩) নামের এক যুবক ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছে।

মরদেহের পাশে পড়ে রয়েছে নেশার সরঞ্জাম সলিউশন আঠাঁর কৌটা। সাদ্দাম ওই এলাকার তেলিপাড়ার মৃত আবু হানিফার ছেলে।

রবিবার (২১ এপ্রিল) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ডোমার রেল স্টেশনের তিন কিলোমিটার উত্তরে হাজিপাড়া রেলক্রসিং এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, রাতে চিলাহাটি হতে খুলনাগামী সীমান্ত ট্রেনে কাটা পড়ে সাদ্দাম হোসেন ঘটনাস্থলে মারা যায়। সে সময় সে রেললাইনে বসে ক্যামিক্যাল আঠা(ডান্ডি) নেশা করেছিল। নেশার কারণে আগে থেকেই মানষিক ভারসাম্যহীন ছিলো সাদ্দাম।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা ওসি নুরুল ইসলাম জানান, নিহত সাদ্দাম মানষিক ভারমাস্যহীন ছিল। আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।


আরও খবর



শিল্পী সমিতির নির্বাচন বাতিল চেয়ে নিপুণের রিট

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (২০২৪-২৬) মেয়াদি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে নতুন নির্বাচন দাবি করে রিট করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে নিপুণের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় এ রিট আবেদন করেন।

রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল ঘোষণা হয় শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে। ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। এতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জনপ্রিয় অভিনেতা এবং বিগত দুই মেয়াদের সফল সভাপতি মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন চলচ্চিত্রের মুভি লর্ড ও দানবীর খ্যাত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

নির্বাচনে সভাপতি মিশা সওদাগর মোট ভোট পান ২৬৫টি। অন্যদিকে মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ডিপজল পান ২২৫ ভোট। ১৭ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন নিপুণ আক্তার (২০৯)। সহ-সভাপতি পদে ২৩১ ও ২৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয় মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব। এছাড়াও সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান ২৩৭, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ২৫৫, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো ২৯৬, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর ২৪৫, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ২৩৫ এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল ২৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়।

কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয় ৯ জন। তারা হলেন সুচরিতা (২২৮), রোজিনা (২৪৩), আলীরাজ (২৩৯), সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন (২১৮), শাহনূর (২৪৫), নানা শাহ (২১০), রত্না কবির (২৬৩) ও চুন্নু (২৪৮)। কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি (২২০) ও সনি রহমান (২৩০)।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর



হাসপাতালের লিফটে আটকে রোগীর মৃত্যু

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১২ মে) সকালে হাসপাতালের লিফট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে এ ঘটনা ঘটেছে।

মমতাজের মামা শাহাদাত হোসেন সেলিম গণমাধ্যমকে বলেন, আজ ভোরে মমতাজকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালের ১১তলা থেকে লিফটে চতুর্থ তলায় নামার সময় হঠাৎ সেটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৪৫ মিনিট আটকে থাকার পর হাসপাতালের লোকজন নয় তলা দিয়ে তাদের বের করে আনেন। তবে এর আগেই মমতাজ মারা যান।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাসনিন জাহান জানান, লিফটের ভেতর একজন রোগী মারা গেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।


আরও খবর



নিত্যপণ্যের উত্তাপে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই; বরং দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। অস্থির এ বাজার পরিস্থিতি চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া যেন আর কিছুই করার নেই!

শুক্রবার (১০ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজার এবং কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, আগানগরসহ বেশ কটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আরও দাম বেড়েছে মাছ-মাংস, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের।

বিক্রেতারা জানান, তীব্র গরমের কারণ ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থা। এতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে পণ্যের। আর ক্রেতারা বলেন, এ বছর রোজার আগে থেকেই বেড়েছে পণ্যের দাম। রোজায় সেটি আর চড়েছিল। কিন্তু ঈদের পরও সেই দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাপ বাড়ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সংসারে।

সাব্বির হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, এ বছর রোজায় কারণ ছাড়াই পণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন গরমের অজুহাতে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগে গেছে। অসহায় ক্রেতাদের এখন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। ব্যবসায়ীরাও বুঝে গেছে, দাম বাড়ালেও পণ্য কিনবে সাধারণ মানুষ। তাই খেয়াল-খুশি মতো দাম বাড়াচ্ছে পণ্যের।’

বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৬০-৯০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা ও কহি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, আলু ৫০-৫৫ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম চড়েছে কাঁচা মরিচেরও। পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আর বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা ও পালংশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতিকেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। মূলত তীব্র গরমে গ্রাম পর্যায়ে সবজির দাম বাড়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।

কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের সবজি বিক্রেতা উজ্জ্বল বলেন, তীব্র গরমে ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে সবজি। পাশাপাশি সেচ বাবদ বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। এর প্রভাবে দাম বাড়ছে।’

স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। গরমের উত্তাপ ছড়িয়েছে এখানেও। বেশিরভাগ চাষের ও দেশি মাছের দামই চড়া। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।

বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মাছ বিক্রেতা আসলাম জানান, এ বছর বৃষ্টি কম হয়েছে। আর গরমের কারণে মাছ কম ধরা পড়ছে। এতে কমছে না মাছের দাম।’

বাজারে প্রতি কেজি ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম পড়ছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা।

বিক্রেতারা জানান, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বাড়ছে ইলিশের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে অন্তত ৪০০ টাকা।

বাজারে দাম বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আর কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকায় ও আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। আদা আগের বাড়তি দামেই ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাংসও। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০-৮০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

আর প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০-২৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ৪০০ টাকা, দেশি মুরগি ৭২০-৭৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। এ ছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

নিত্যপণ্যের অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।


আরও খবর