মো: আফসার খাঁন, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাটি খেঁকোদের ড্রাম ট্রাক চলাচলে একটি ব্রিজের মাঝখানে ধসে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একমাত্র সড়কের ওই ব্রিজের ধসে যাওয়া স্থান দিয়েই মাস খানেক ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে জনসাধারণসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। স্থানীয় ইউপি সদস্যের উদ্যোগে বুধবার মেরামতের চেষ্টা চালালেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়ও এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেন অদৃশ্য অনুমোদনেই মাটি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে মাটি খেঁকোরা। এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের উত্তর অঞ্চলেও মাটি লুটের ধুম পড়ে। আর লুটের মাটি বহনের জন্য ড্রামট্রাক ব্যবহার করে আসছেন মাটি খেঁকোরা। তাদের মাটি পরিবহনের ব্যবহৃত ড্রামট্রাক চলাচলের জন্য ওই ইউনিয়নের কোটবাড়ী এলাকার ব্রিজের মাঝখানে ধসে গেছে। একমাত্র চলাচলের পাকা সড়কের ব্রিজের এমন অবস্থাতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন জনসাধারণসহ ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন। এতে দুর্ঘটনার আতঙ্ক নিয়ে জীবনের প্রয়োজনে চলাচল করছেন পাইকপাড়া, কোটবাড়ি, সাতকুড়া, বংকুরি, বাংলাবাজার, ঢুলিগড়া, জৈনারবাজার, পামওয়েল বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। প্রায় মাস খানেক ধরে এমন ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল করলেও সংশ্লিষ্টরা কোনো খোঁজ-খবর নেননি বলেও অভিযোগ জনসাধারণের।
অবশেষে বুধবার সকালে রফিকুল ইসলাম ও রানা সিকদার নামে দুজন শ্রমিক ওই ব্রিজের ধসে যাওয়া স্থানে তড়িগড়ি করে জোড়াতালি দিতে কাজ করছেন। ওই দুই শ্রমিক জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য জোবায়ের পালোয়ানের নির্দেশে ওই ব্রিজে তারা কাজ করছেন। ওই ধসে যাওয়া স্থানে ঢালাই করা হবে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ইউনিয়নের উত্তর অঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। সব সময় কাঁদা থাকায় চলাচলের অনুপযোগী থাকতো। গত ৭/৮ বছর আগে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এ রাস্তাটি পাকা করেছে উপজেলা এলজিইডি অফিস।
তাদের অভিযোগ, মাটি খেঁকোদের ড্রামট্রাক চলাচল করায় স্বপ্নের এ সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গেছে। মাস খানেক আগে মাটিবাহী ড্রামট্রাক চলাচলের কারণে ওই ব্রিজের মাঝখানে ধসে গেছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু ঝুঁকিতে চলাচল করলেও সংশ্লিষ্টরা কেউই কোনো খোঁজ খবর নেননি। মাটি খেঁকোদের কবলে শুধু এ সড়কই নয়, মাটি ভর্তি ড্রামট্রাক চলাচলের কারণে উপজেলার অধিকাংশ সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়েছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জুবায়ের পালোয়ান জানান, ওই ব্রিজটি অনেক পুরোনো। বড় যানবাহন চলাচল করায় ব্রিজের মাঝখানে ধসে গেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে সেখানে মেরামতের কাজ করা হচ্ছে।
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) সেলিম হোসেন বলেন, আমরা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজটি মেরামত করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, ওই ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজটি খুব দ্রুত সংস্কার করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন সময় অনেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ড্রামট্রাক ও ভেকু আটক করে জরিমানা করা হবে। তবে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।