জয়পুরহাটে এ বছর ভুট্টা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বাজারে চাহিদা বেশি হওয়ায় দিন দিন চাষ বাড়ছে। অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।
২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে ৭৮৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ বছর প্রায় ৯০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের মাটি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। সদর, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলায় ভুট্টার চাষ বেশি হয়। পোল্ট্রি শিল্পের মূল উপাদান ভুট্টা চাষে খরচের তুলনায় লাভ ভালো। তাই কৃষকদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ভুট্টার বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন >> ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ
সদর উপজেলার জামালপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন, লুৎফর রহমান, শফিকুল ইসলামসহ একাধিক কৃষক বলেন, ‘ফলন ভালো ও চাষ লাভজনক হওয়ায় এবারো ভুট্টার চাষ বেশি হয়েছে। ভুট্টা কম পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। তাছাড়া রোগবালাই, পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। ফলে জেলায় দিন দিন ভুট্টার চাষ বাড়ছে।’
পাঁচবিবি উপজেলার বুধইল গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘গত বছর ১ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলাম। সেখানে ভালো লাভ হওয়ায় এ বছর ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। চাষ করে ভুট্টা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভুট্টার মোচা সংগ্রহের পর গাছের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।’
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কায়ছার ইকবাল বলেন, ‘মুরগি ও গোখাদ্য তৈরির জন্য জয়পুরহাটের ফিডমিলগুলোকে জেলার বাইরে থেকে ভুট্টা আমদানি করতে হয়। আমদানি রোধে ভুট্টার আবাদ বাড়াতে জয়পুরহাট জেলায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, ‘কৃষকদের মাঝে উন্নত জাত সরবরাহ, উদ্বুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত আছে। জেলায় সুপারসাইন-২৭৬০ জাতের ভুট্টার নতুন জাত প্রবর্তনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষের জন্য কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ভুট্টা চাষিদের ২ কেজি বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার ও ২০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। জেলায় এবার ১ হাজার চাষিকে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় মোট ১৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকার সার, বীজ ও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে।’