তানজিমুল হাসান
মায়া’জ : নাড়ির টানে মতলবের উন্নয়ন করতে চাই
বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম মোহন। আলোচিত গজারিয়া কালিপুর
সেতু নির্মাণ ও কৃষি কার্যক্রম চলমান রাখতে অভ্যন্তরীন খাল খনন বিষয়েও কথা বলেন তিনি।
রবিবার চাঁদপুরের মতলব উত্তরে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সাথে অলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য
করেন।
তিনি বলেন, আমার
গ্রামের বাড়ি মতলব উত্তরে হওয়ার ফলে প্রতিমন্ত্রী পদে থাকা অবস্থায় মতলবের উন্নয়ন করে
যেতে চাই। দীর্ঘ কয়েক বছরের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু গজারিয়া কালিপুর সেতু নির্মাণ বিষয়ে
কয়েক দফা মাটি পরীক্ষা, সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা হলেও সুস্পষ্ট কোন
সিদ্ধান্ত জানতে পারেনি স্থানীয় জনগণ।
গত বছরের ১৮ জুলাই
সন্ধ্যা ৭ টায় পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ড. শামসুল আলম মোহন শপথ
নেয়ার পর নতুন করে সেতু নিয়ে আশার আলো দেখতে শুরু করে মতলববাসী। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে
নিযুক্ত হওয়ার ১ মাস পর ২৫ জুলাই ২০২১ মতলব উত্তর সফরে এসে উপজেলার লুধুয়া স্কুল প্রাঙ্গনে
বক্তব্যে অতিদ্রুত গজারিয়া-কালিপুর সেতু নির্মাণ শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন। ঘোষণার ভিডিও
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে প্রতিমন্ত্রীর জয়জয়কার শুরু হয়।
তবে এরই মধ্যে
সেতুর কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখায় জনমনে হতাশার ছায়া নেমেছে। রবিবার সাংবাদিকদের
এক প্রশ্নের জবাবে সেতু নির্মাণ কবে শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা বলে নতুন
তথ্য দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। তবে তিনি বলেছেন, তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ
করা হবে ।
বিষয়টি এখন পর্যন্ত
সেতুবিভাগের কার্যতালিকায় রয়েছে। আগামী যে কোন একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
অনুমোদন পেলেই সেতুর কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের
আগে সেতুর পিলার স্থাপন করার চেষ্টা থাকবে।
শামসুল আলম বলেন,
এটি আধুনিক ক্যাবল স্টেয়েড ব্রিজ বা তার সংযুক্ত সেতু হিসেবে নির্মাণ করা হবে। যেটি
২ লেন করে ৪ লেন হয়ে ২ কিলোমিটার দৈর্ঘের হবে।
এদিকে কৃষি জমিতে
জলাবদ্ধত ও পানি প্রবাহে কৃত্রিম সঙ্কট নিরসনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী
বলেন, একদিনেই এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয় । ধীরে ধীরে সমস্যা নিরসনে পরিকল্পনা
করা হবে। বেদখলকৃত সেচ ক্যানেলের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন দিয়ে সব সমস্যার সমাধান
করা সম্ভব নয়, স্থনীয় ভাবে কিছু সমস্যা সমাধান করতে হবে। অপরদিকে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা
করতে নির্মিত পানি নিষ্কাশন ক্যানেল গুলো বেদখল হওয়ায় কৃষকরা নির্দিষ্ট সময়ে পানি সঙ্কটে
ভুগছেন। ফলে কৃষি পণ্য উৎপাদন ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
সেচ কার্যক্রম
ব্যহত হওয়ায় ফসল উৎপাদন কমেছে প্রায় ২০ হাজার টন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার তথ্যমতে জলাবদ্ধতার
ফলে আউশ ধানের উৎপাদন নেমে এসেছে মাত্র ২ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়া আমন ধান উৎপাদনে
জমির পরিমাণ নেমে এসেছে ৯ হাজার হেক্টরে।
উন্নয়ন পরিকল্পনার পাশাপাশি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আগামীতে চাঁদপুর ২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোন উদ্দেশ্য নেই। এছাড়াও ক্যাডার ভিত্তিক রাজনীতি আমার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাকে প্রতিমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করায় আমি গর্বীত। তবে আগামী নির্বাচনে আওয়ালীগ সরকারকে নির্বাচিত করতে জনসমর্থনে কাজ করবো।