বাঁশের নড়বড়ে খুঁটির ওপর টিনের ছাউনি। সামনের চালায় পলিথিন দিয়ে কোনো রকমে বৃষ্টির পানি ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা। বেড়াগুলো বাঁশের চটা দিয়ে তৈরি, তাও আবার ভাঙাচোরা। পেছনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় চাঁদ-সূর্য। চালের ওপরে পলিথিন দিয়ে রোদ-বৃষ্টি-শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা।
বলছিলাম পাবনা চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, পানা কুড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত সিরাজ প্রামানিক এর স্ত্রী রুপজান খাতুনের কথা।
জানা গেছে, রুপজান খাতুনের স্বামী সিরাজ প্রামানিক প্রায় ১৫ বছর আগে মারা গেছে। রুপজান খাতুনের বয়সও প্রায় ৬৫। তিনি নিঃসন্তান তার কোন সন্তান নেই। ঝুঁপরি ঘরে একাই বসবাস করেন তিনি, কাতা সেলাই-মানুষের বাসায় কাজ করে কোন রকমের জীবন যাপন করেন তিনি। সেই সামান্য মজুরিতে টেনেটুনে চলে অভাব-অনটনের সংসার। ফলে থাকার একমাত্র ঘরটি জরাজীর্ণ হলেও মেরামত করতে পারছেন না তিনি। তাই ঝড়-বৃষ্টির রাতে নির্ঘুম রাত কাটে তার।
কথা হয় হান্ডিয়াল, পানা কুড়া গ্রামের বাসিন্দা রুপ জানের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বামীর রেখে যাওয়া আড়াই শতক জমিতে একটি খুপড়ি ঘর রয়েছে। সেই ঘরে তিনি কোনো রকমে বসবাস করছেন। ঘর মেরামতের সামর্থ্য নেই তার। বয়সের ভারে এখন ঠিকমতো কাজও করতে পারেন না তিনি। এক দিন কাজ করলে পরের দিন বসে থাকতে হয় তার। অন্যর বাসায় কাজ করে যে কিছু টাকা তিনি মজুরি পান। সেই টাকা দিয়ে চাল-ডাল কিনে কোনো রকমে জীবন বাঁচান। ঘরটা যে মেরামত করবে তার কোন উপায় নেই। রাতে ঝড়-বৃষ্টি হলে ঘরের এক কোণে বসে থাকেন তিনি।
রুপজানের প্রতিবেশিরা বলেন, ঝড়-বৃষ্টির সময় সে খুব টেনশনে থাকে। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরে থাকতে পারেন না তিনি। আবার টাকার অভাবে ঘরটি ঠিকও করতে পারছেন না। কয়েক বছর হলো দেখছি তার এই ঘরের অবস্থা। সরকার যদি তাকে একটু সহযোগিতা করে তাহলে সে এই বয়সে একটু ভালোভাবে থাকতে পারবে।
এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বলেন, রুপজান খাতুনের একটি মাত্র ঘর। তাও আবার জরাজীর্ণ। অভাবের কারণে তিনি ঘরটি মেরামত করতে পারছেন না। ঝড়-বৃষ্টিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ঘরেই বসবাস করতে হয় তার। সরকারের পাশাপাশি যদি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসতো তাহলে রুপ জানের মুখে হাসি ফুটত।