আজঃ সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

জবি ট্রেজারারের বাসার ছাদ থেকে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মেহেরাবুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি:

রাজধানীর ধানমন্ডিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্তমান ট্রেজারারের বাসার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতা (২০) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এই ঘটনায় জবি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের ছেলে ফাইজারের বন্ধু আদনানকে আটক করেছে পুলিশ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিউমার্কেট জোনের এডিসি ইহসানুল ফেরদৌস।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু আসল কারণ জানা যাবে।

তরুণীর স্বজনদের দাবি, মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রী করোনার সময় দেশে আসেন। একই ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকেন মৌমিতা পরিবার। নিহত তরুণীকে একই ভবনের পঞ্চম তলায় থাকা বাড়ির মালিকের ছেলে ফাইজার ও তার বন্ধু আদনান উত্ত্যক্ত করতো। এ ব্যাপারে ছেলেটির পরিবারকে জানানো হলে তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। বরং নিহত শিক্ষার্থীর মাকে হুমকি করে। এ ঘটনার জন্য উত্ত্যক্তকারী ফাইজার ও আদনানকে সন্দেহ করছেন তারা।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, এই ঘটনার সাথে আমার ছেলে জড়িত নয়। ঘটনার পরে আমি ছাদ বন্ধ করে দিতে বলি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

উল্লেখ্য যে, শুক্রবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণী তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতাকে বাসার ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে।


আরও খবর



ফের দেশজুড়ে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

হিট অ্যালার্টের (তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা) মেয়াদ আরও ৩ দিন বাড়ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারা দেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে, এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগ পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।


আরও খবর



ইরানের হামলার পর কমেছে তেলের দাম

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যাবে, এমন ধারণাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে বিপরীত ঘটনা। সামান্য হলেও কমে গেছে তেলের দাম। সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকালে এশিয়ান ট্রেডে এই কম মূল্যের প্রবণতাই দেখা গেছে, যদিও সেটা প্রতি ব্যারেল ৯০ ডলারের কাছাকাছিই ছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

তবে এটাও ঠিক, ইসরায়েলের ওপর ইরান আক্রমণের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই তেলের দাম ওর নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছিল। গত ছয় মাসের মধ্যে গত সপ্তাহে তেলে দাম ছিল সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহের শেষে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ৯২ দশমিক ১৮ ডলার পর্যন্ত হয়েছিল। গতবছরের অক্টোবরের পর থেকে ধরলে সেটা ছিল সর্বোচ্চ। এর পর থেকে কমতে কমতে সেটা ৯০ দশমিক ৪৫ ডলারে নেমেছিল। সোমবার সকালে সেটা আরও ২০ থেকে ৩০ সেন্ট কমেছে।

ইরান বর্তমানে প্রতিদিন ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে থাকে। তেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে ওপেকভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইরানের অবস্থান চতুর্থ। বিশ্বের মধ্যে সপ্তম। ইসরায়েলে হামলার পর থেকে সবসময়ই একটা পাল্টা আঘাতের আশঙ্কায় রয়েছে ইরান। সে আঘাত ইরানের তেলক্ষেত্রের ওপরও হতে পারে। এসব বিবেচনায় তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে ইরান এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবে।

বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ববাজারে তেলে দাম বাড়া-কমার ক্ষেত্রে হরমুজ প্রণালী একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বের ২০ শতাংশ তেলবাহী জাহাজ এই সমুদ্রপথ দিয়েই চলাচল করে। ওপেকভূক্ত দেশ সৌদি আরব, ইরান, আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ইরাক তাদের বেশির ভাগ তেল এই পথেই রপ্তানি করে। ওমান ও ইরানের মধ্যেকার সংবেদনশীল এই সমুদ্রপথটি শান্তিপূর্ণ থাকলে কমে যায় তেলের দাম।

গত শনিবার ইরান হরমুজ প্রণালী দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাণিজ্যিক জাহাজকে আটক করে। তাদের অভিযোগ ছিল জাহাজটি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত। ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে এই হরমুজ প্রণালী কতটুকু নিরাপদ থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

এসব কারণেই, সোমবার হঠাৎ করেই তেলের দামে এই সামান্য মূল্যহ্রাসকে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য অত বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাদের মতে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলা হলেই তেলের দাম আশঙ্কাজনকভাবেই বেড়ে যাবে।


আরও খবর



দাবদাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৪ নির্দেশনা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের কয়েকটি জেলায় বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অর্ধশত জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। চলমান এই গরম চলতি মাসে কমার সম্ভবনা নেই বলে বলে জানিয়ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে দাবদাহে প্রতিদিনই 'হিট স্ট্রোকে' মৃত্যু হচ্ছে মানুষের। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

এ অবস্থায় হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে চার দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নির্দেশনাগুলো হলো-

১. তীব্র গরম থেকে দূরে থাকুন, মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিন।

২. প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করুন। হেপাটাইটিস এ, ই, ডায়রিয়াসহ প্রাণঘাতি পানিবাহী রোগ থেকে বাঁচতে রাস্তায় তৈরি পানীয় ও খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে একাধিকবার গোসল করুন।

৩. গরম আবহাওয়ায় ঢিলেঢালা পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন, সম্ভব হলে গাঢ় রঙিন পোশাক এড়িয়ে চলুন।

৪. গরম আবহাওয়ায় যদি ঘাম বন্ধ হয়ে যায়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, তীব্র মাথাব্যথা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব কমে যায়, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যান এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বিদ্যমান আছে। এ অবস্থায় সুস্থ থাকতে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


আরও খবর



ডেইলি স্টার থেকে চাকরি হারালেন সৈয়দ আশফাকুল হক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

গৃহকর্মীর মৃত্যুর মামলায় কারাগারে থাকা দ্য ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হককে অব্যাহতির দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হককে অব্যাহতির নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই নোটিশ অবিলম্বে কার্যকর বলে গণ্য হবে।

সৈয়দ আশফাকুল হক ১৯৯৩ সালে ডেইলি স্টারের ক্রীড়া বিভাগে যোগদান করেন। ক্রমান্বয়ে ক্রীড়া সম্পাদক, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, প্রধান বার্তা সম্পাদক এবং অবশেষে ২০১৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন গৃহকর্মী প্রীতির বাবা লুকেশ ওড়ান। মামলায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে দণ্ডবিধি আইনের ৩০৪ (ক) ধরায় অভিযোগ করা হয়।

ওই মামলায় একই দিন গ্রেপ্তারের পর আসামিদের রিমান্ড ও জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তিন দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন আদালত। এরপর পুনরায় রিমান্ড আবেদন করা হলে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ১৮ ফেব্রয়ারি তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার অভিযোগ জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে প্রীতি ওড়াং নামের এক কিশোরী গৃহপরিচারিকার মৃত্যু হয়। পরে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজ করত ১৫ বছর বয়সী প্রীতি ওড়াং। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামে। বাবার নাম লুকেশ ওড়াং।


আরও খবর



মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস, তীব্র তাপদাহে আরও পাঁচ মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তীব্র তাপদাহে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। তাপপ্রবাহ সঙ্গী করে গতকাল বৃহস্পতিবার চলতি মৌসুমের আরও একটি উষ্ণ দিন পার করল ৪৫ জেলার মানুষ। এ অবস্থায় গতকাল থেকে সারাদেশে চলছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তিন দিনের হিট অ্যালার্ট। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বাড়বে। আগামী তিন দিনে তাপমাত্রা খুব একটা বাড়বে না, গরমও খুব একটা কমবে না। তবে এবারের তাপপ্রবাহের পর একটু একটু করে বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন আবহাওয়াবিদরা। আগামী মাসের শুরুতে বৃষ্টি হলেও তাতে তাপমাত্রা কতটা কমে, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এ অবস্থায় গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির প্রার্থনা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ৩০ বছরের মধ্যে এবারের এপ্রিল উষ্ণতম।

এই বর্ষাপূর্ব মৌসুমে দেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। খুলনায় গতকাল ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে।

উষ্ণতম এপ্রিল

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই এপ্রিলে ঢাকার তাপমাত্রা গত ৩০ বছরের একই সময়ের গড়ের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, এপ্রিল বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস। তবে স্বাধীনতার পর এবারের এপ্রিলই সবচেয়ে উষ্ণ যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়েও চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রার গরম অনুভূত হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট তারিখে একটি স্থানের গড় তাপমাত্রা ৩০ বছরের তাপমাত্রার গড় করে গণনা করা হয়।

ঢাকা শহরে গতকাল গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রেকর্ড হয়েছে ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গড় তাপমাত্রা হলো ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এল নিনোর প্রভাবে এ তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে, যা বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রভাব ফেলছে এবং এটি এ মাসের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনায় তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে তাপদাহের স্থায়িত্বকালও বেড়েছে।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বিগত বছরের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এটি প্রতীয়মান হচ্ছে, ২০২৪ সাল উত্তপ্ত বছর হিসেবে যাবে। আমরা এ বছর তাপপ্রবাহের দিন ও হার বেশি পেতে যাচ্ছি।

এপ্রিল উষ্ণতম মাস হওয়ায় বরাবরই এ সময়ে দেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে উল্লেখ করে অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, এটি অস্বাভাবিক নয়। এবার টানা দুই সপ্তাহ তাপপ্রবাহ থাকায় ও বৃষ্টিহীন পরিস্থিতি বিরাজ করায় গরমের অনুভূতি বেড়েছে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণটা বেশি, যে কারণে অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। স্বাভাবিক যা থাকার কথা, তার চেয়ে ৪ থেকে ৭ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা উঠছে বিভিন্ন এলাকায়।

গরমে আরও ৫ মৃত্যু

সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য বলছে, গত বুধবার রাত থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে গরমের কারণে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে নিজ কক্ষে দায়িত্ব পালনকালে প্রচণ্ড গরমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিঙ্ক লিমিটেডের ট্রাফিক পরিদর্শক রুহুল আমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, অতিরিক্ত গরমে হার্ট অ্যাটাকে রুহুল আমিন মারা গেছেন।

এর আগে বুধবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে মারা যান রতন কর্মকার (৫৮) নামে এক স্বর্ণকার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে, হিট স্ট্রোকে রতন কর্মকার মারা গেছেন।

একই রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গরমে মারা গেছে ঋতু সুলতানা নামের এক শিক্ষার্থী। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে রোদের মধ্যে ঋতু মায়ের সঙ্গে ধান শুকানোর কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাত আড়াইটার দিকে ঋতু প্রচণ্ড অস্বস্তি বোধ করলে তার বাবা স্থানীয় একজন গ্রাম্য চিকিৎসককে নিয়ে আসেন। এর আগেই ঋতু মারা যায়।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বুধবার রাতে তীব্র গরমে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে মারা যান ফাতেমা বেগম (৫৭)। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনের রোগী। চিকিৎসকদের ধারণা, হিট স্ট্রোকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকার পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রব স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী জেবীন (১৬) প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

বৃষ্টি হবে কবে

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ২৯ এপ্রিলের দিকে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে, তাতে আগামী মাসের শুরুতে মোটামুটি ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এবার বৃষ্টি শুরু হতে পারে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চল দিয়ে। ফলে গরম খুব একটা কমবে না। তবে তাপমাত্রা আর বাড়বে না, এটি বলা যায়।


আরও খবর