জাপানি বংশোদ্ভূত
দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে দেওয়া বিচারিক আদালতের
রায় বহাল রেখেছেন আপিল আদালত। এর ফলে বাবা ইমরান শরিফের আপিল আবেদন খারিজ হয়ে গেল।
আজ রোববার
(১৬ জুলাই) ঢাকার জেলা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুইয়া এ আদেশ দেন। জাপানি চিকিৎসক
নাকানো এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিশির মনির বলেন, ‘দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের আপিল খারিজ করে মায়ের পক্ষে রায় দিয়েছেন আদালত।’ এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে একই আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল আবেদন করেন তার আইনজীবী। গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত
বলেন, ‘মায়ের জিম্মায় থাকবে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। একইসঙ্গে
মেয়েদের নিয়ে জাপান যেতে পারবেন তাদের মা নাকানো এরিকো।’
২০০৮ সালে জাপানি
চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের
জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই
মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। আর ছোট মেয়ে থেকে যান জাপানে মা এরিকোর সঙ্গে। তবে,
ওই দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে মহামারির মধ্যে ২০২১ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি
নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন হাইকোর্ট।
পরে ওই দম্পতি
সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার
সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে
বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়। এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন
নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও
বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত
থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।
এরপর এই দুই
মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে তার নিষ্পত্তি পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই
শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।