বরগুনা প্রতিনিধি:
ইউক্রেনে রকেট হামলায় নিহত এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের জানাজা নামাজ তার নিজ গ্রামের বাড়িতে শতে শতে মানুষের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা ১- আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান, বেতাগী পৌর মেয়র কবির হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা ভূমি কমিশনার, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, সহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত হাদিসুর রহমানের মরদেহ গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে রাত ১০টার দিকে হাদিসুরের মরদেহ বহনকারী ফ্রিজারভ্যানটি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে নিজের বাড়িতে রাত১০টায় এসে পৌঁছেছে।
হাদিসের বাড়িতে গিয়ে গতকাল দুপুর থেকেই দেখা যায়, মরদেহ আসার অপেক্ষায় তার বাড়িতে ভিড় করে ছিলেন পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী। তার মরদেহবাহী ফ্রিজারভ্যান আসার পর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়ে বিভিন্ন আহাজারি করছেন এখন পর্যন্ত তার পরিবারের সদস্য ও স্বজন, প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মীদেরসহ বিভিন্ন যায়গা থেকে আসা উপস্থিত সকল সকল শ্রেনী-পেশাজীবি মানুষ।
অন্যদিকে, নিহত হাদিসের জানাজা নামাজ শেষ করে নিজের গ্রামের বাড়ির মসজিদের পাশে দাফন করার প্রস্তুতি চলছে। দাফন সম্পন্ন করে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা কর্পোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
কিন্তু এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে ওলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। পরবর্তীতে বুধবার (২ মার্চ) রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। তবে জাহাজে থাকা বাকি ২৮ জনকে পরের দিন বৃহস্পতিবার অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয়।
এরপর একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় শনিবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুরে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দর সংলগ্ন বাংকার (শেল্টার হাউজ) থেকে বেরিয়ে মালদোভার পথে যাত্রা শুরু করেন নাবিকরা। পরের দিন রোববার (৬ মার্চ বেলা) তারা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মালদোভা হয়ে রোমানিয়া পৌঁছান।
বুধবার (৯ মার্চ) ২৮ নাবিক রোমানিয়ার বুখারেস্ট বিমানবন্দর থেকে তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় ফেরেন। এরমধ্যে ১২ নাবিক বুধবার রাতেই নভো এয়ারের একটি লোকাল ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছায়।