সাতক্ষীরা থেকে দিলীপ কুমার দেব
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অলিভিয়া সৈকতে আটকে পড়া ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে ২৮ জন নাবিকের মধ্যে আটকা পড়েছেন সাতক্ষীরার ছেলে ক্যাপ্টেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁন। এতে চরম অনিশ্চয়তা আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার কাটাচ্ছেন মোঃ মুনসুরুল আমীনের পরিবার।
ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরে একটি বন্দরে বাংলাদেশী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ২৯ জন বাংলাদেশী নাবিক নিয়ে আটকে পড়েছিল। সেই জাহাজে রাশিয়ার রকেট হামলায় বাংলাদেশী নাবিক ও জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ হাদিসুর রহমান নিহত হন। ওই জাহাজেই মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁন চীফ অফিসার (ক্যাপ্টেন) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি সাতক্ষীরা শহরের নারকেলতলা গ্রামের মোঃ সেলিম খাঁনের ছেলে।
১৬ বছর আগে জাহাজের চীফ অফিসার (ক্যাপ্টেন) পদে চাকুরীতে যোগদান করেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁন। সর্বশেষ ৩ মাস আগে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। নিজ এলাকায় গিনি নামেই পরিচিত ছিলেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁন। মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁনের ৩ ছেলে। মোঃ ফাহিমি ও মোঃ ফারহান (১০) যমজ। ছোট ছেলে ফারদিনের বয়স ৩ বছর। যমজ ২ ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
উৎকণ্ঠার ও অনিশ্চয়তার মাঝে সুনসান নীরবতায় ঢাকা পড়েছে সাতক্ষীরার ‘এখাইে নোঙর’ নামের ক্যাপ্টেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁনের বাড়িটি। শিশু থেকে বড় সবার মুখ থেকে যেন হারিয়ে গেছে সব ভাষা।
ইউক্রেনে যুদ্ধের ডামাডোলে তাঁদের নাবিক সন্তানটি কেমন আছেন, কোথায় কিভাবে আছেন তাই নিয়ে ভাবনা চিন্তার অন্ত নেই মা মর্জিনা খানম ও বাবা মোঃ সেলিম খানের। শোকাতুর স্ত্রী আশরুকা সুলতানা হয়ে আছেন নির্বাক নীরব নিথর। বাবা সেলিম খান তবু নিজেকে সামলে নেয়ার চেষ্টা করেও যেনো চোখের পানি মুছতে পারছেন না। ক্যাপ্টেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁনের শোকে পাথর হয়ে গেছেন সকল আত্মীয় স্বজন।
শুক্রবার (৪ মার্চ) রাতে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্নসম্পাদক ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আসাদুজ্জামান বাবু ইউক্রেনে আটকা পড়া সাতক্ষীরার সন্তান ক্যাপ্টেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁনের খোজ খবর নিতে তাঁর নিজ বাসভবনে যান। এসময় মোঃ মুনসুরুল আমীনের পিতার মোঃ সেলিম খানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলেন তিনি। আলহাজ্ব মোঃ আসাদুজ্জামান বাবু পরিবারটিকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে না পড়ার অনুরোধ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রাণপণ চেষ্টা করছে সকল বাংলাদেশীদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা বিশ্বাস করি মহান আল্লাহ্ তা’য়ালার অশেষ রহমতে ক্যাপ্টেন মোঃ মুনসুরুল আমীন খাঁনসহ ইউক্রেনে আটকা পড়া সকল বাংলাদেশীরা নিরাপদে দেশে ফিরে আসবেন।