যুক্তরাষ্ট্র
ও ইরানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব একটা মজবুত নয়। তা মোটামুটি সবারই জানা।
কাতার বিশ্বকাপে
আজ একে অপরের বিপক্ষে নামছে এই দুটি দেশ। এমনিতে ম্যাচটি নিয়ে চাপা উত্তেজনা কাজ করছে
অনেক সমর্থকের মনে। এর মধ্যে নতুন করে বিতর্ক
উসকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল ফেডারেশন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইরানের পতাকা বিকৃত
করে তারা। ফিফার কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছে ইরান ফুটবল ফেডারেশন।
যুক্তরাষ্ট্র
ফুটবল ফেডারেশন ইরানের পতাকা হিসেবে যে ছবি ব্যবহার করেছে তাতে ‘আল্লাহ’ এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ লেখা ছিল না । ফিফার
নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি অপর কোনো সদস্য সংস্থার জাতীয়তা, ধর্মীয়
পরিচিতি কিংবা প্রতীকের অবমাননা করে তাহলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পরবর্তী ১০ ম্যাচ
নিষিদ্ধ করা হবে।
পতাকা বিকৃতির
ব্যাপারে অবশ্য ফুটবলারদের কোনো হাত ছিল না। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল ফেডারেশনের
কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন দলের হেড কোচ গ্রেগ বেরহাল্টার।
সংবাদ সম্মেলনে
তিনি বলেন, ‘যা পোস্ট হয়েছিল
এ ব্যাপারে খেলোয়াড় ও স্টাফরা কিছুই জানে না। কিছু জিনিস থাকে যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের
বাইরে। ফেডারেশন কী করেছে, এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই আমাদের। বাইরের ব্যাপার নিয়ে
আমরা ভাবি না। তারপরও খেলোয়াড় ও স্টাফদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইতে পারি আমরা। তবে আমরা
এর অংশ ছিলাম না। ’
ইরানে চলমান সরকারবিরোধী
আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বেরহাল্টার, ‘আমাদের ভাবনাটা ম্যাচ নিয়ে। আমি দূরে শব্দ করতে চাই না।
তাদের (ইরান) হারাত খুবই মনোযোগী আমরা। অবশ্যই ইরানিয়ান লোকেদের পাশে আছি আমরা... দলসহ
সবাই তাদের পাশে আছে, তবে আমাদের মনোযোগটা খেলা নিয়েই। ’
সংবাদ সম্মেলনে
ইরানকে বারবার ‘আইরান’ বলছিলেন
যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক টাইলার অ্যাডামস। ভুল উচ্চারণের জন্য তাকে একহাত নেন এক ইরানি
সাংবাদিক। অ্যাডামসের উদ্দেশ্যে তার প্রশ্ন
ছিল, কৃষ্ণাঙ্গদের উপর বৈষম্যবাদী আচরণ করা একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করে কেমন লাগে?
জবাবে অ্যাডামস
বলেন, ‘ভুল উচ্চারণের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। বৈষিম্য
সর্বত্রই আছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাইরে বসবাস করে এটা বুঝেছি যে বিভিন্ন সংস্কৃতির
সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিনিয়ত উন্নতি করছি। আফ্রিকান-আমেরিকান
বংশোদ্ভুত হয়েও আমি শ্বেতাঙ্গ পরিবারে বেড়ে উঠেছি, তাই ভিন্ন সংস্কৃতিতে লালিত হয়েছি
আমি এবং বিভিন্ন রীতিনীতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া খুবই সহজ ছিল। সবাই সেই সুবিধা
পায় না। এটা এমন জিনিস যা শিখে নিতে সময় লাগে। ’
‘আপনার দেশের
নাম উচ্চারণ করাটা আপনি আমাকে যেভাবে শিখিয়েছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটাই উন্নতি
এবং যতদিন পর্যন্ত উন্নতি চলতে থাকবে, এটাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ’