প্রথম ইনিংসের
মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ভয়াবহ ব্যর্থতার পরিচয় দিলো বাংলাদেশের টপঅর্ডার। এবার ২৩ রানে
সাজঘরে ফিরেছেন প্রথম চার ব্যাটার। যার ফলে দেখা দিয়েছে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা।
আবারও মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের কাঁধে পড়লো সব দায়িত্ব।
মিরপুর শেরে বাংলা
জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ
৪ উইকেটে ৩৪ রান। ইনিংস পরাজয় এড়াতে এখনও প্রয়োজন ১০৭ রান। শুক্রবার ম্যাচের শেষ দিনে
এই ১০৭ রান করে তবেই শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারবে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের প্রথম
ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরিতে ৩৬৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল
বাংলাদেশ। জবাবে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও দিনেশ চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা করেছে
৫০৬ রান, নিয়েছে ১৪১ রানের লিড। বল হাতে সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম
ফাইফার।
পরে দ্বিতীয় ইনিংসেও
বদলায়নি বাংলাদেশের টপঅর্ডারের হতাশার চিত্র। এবার ২৩ রানে ৪ উইকেট পড়ার পরই ছয় নম্বরে
নামানো হয়েছে লিটন দাসকে। প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়েন মুশফিকের সঙ্গে ৩.৫ ওভারে ১১
রান যোগ করেছেন তিনি। মুশফিক ১৪ ও লিটন ১ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করবেন।
শ্রীলঙ্কার চেয়ে
১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন মাহমুদুল হাসান
জয়। কাসুন রাজিথার করা সেই ওভারের শেষ বলে তার ব্যাটের কানায় লেগে বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষকের
গ্লাভসে। কিন্তু আবেদন করেননি বোলার-ফিল্ডাররা। ফলে জীবন পেয়ে যান জয়।
পরের ওভারে জোড়া
বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সফরকারীদের আক্ষেপ বাড়াচ্ছিলেন এ তরুণ। তবে বেশিক্ষণ টেকেনি বাংলাদেশের
উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে স্লিপে দাঁড়ানো কুশল মেন্ডিসের হাতে
ধরা পড়েন তামিম ইকবাল। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও শূন্য রানে আউট হন তিনি। ক্যারিয়ারে
প্রথমবারের মতো একই ম্যাচে জোড়া ডাকের দেখা পেলেন তামিম।
এক ওভার জয়ের
সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন দুই রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত। পয়েন্ট থেকে সরাসরি
থ্রোয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে উইকেটটি নেন প্রবীণ জয়াবিক্রম। অল্পেই দুই উইকেট হারানোর পর
বিপর্যয় সামাল দেওয়ার বদলে উল্টো বিপদ আরও বাড়ান অধিনায়ক মুমিনুল হক।
ইনিংসের নবম ওভারে
রাজিথার বলে কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে মুমিনুলও রানের খাতা খুলতে পারেননি। তার পরের ওভারে
মাহমুদুল হাসান জয়কে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন আসিথা ফার্নান্দো। জয়ের ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে
১৫ রান। তবে এরপর আর বিপদ ঘটতে দেননি মুশফিক ও লিটন।
এর আগে আগের দিন
করা ৫ উইকেটে ২৮২ রানের সঙ্গে আজ ৬৫.১ ওভার ব্যাটিং করে ২২৪ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা।
ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। দীর্ঘ
চার বছর পর সেঞ্চুরি হাঁকানো দিনেশ চান্দিমাল করেন ১২৪ রান।
বল হাতে সাকিব
৯৬ রানে ৫ ও এবাদত নেন ১৪৮ রানে ৪টি উইকেট। ঘরের মাঠে টেস্টে এটিই এবাদতের সেরা বোলিং
ফিগার। অন্যদিকে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিংস্টন টেস্টের পর এবারই
প্রথম ফাইফার পেলেন সাকিব। সময়ের হিসেবে সাকিবের দুই ফাইফারের মধ্যে এটিই দীর্ঘতম বিরতি।
ঢাকা টেস্ট (চতুর্থ
দিন শেষে):
বাংলাদেশ প্রথম
ইনিংস: ৩৬৫ অলআউট (মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১; রাজিথা ৫-৬৪, ফার্নান্দো ৪-৯৩)
শ্রীলঙ্কা প্রথম
ইনিংস: ৫০৬ অলআউট (ম্যাথিউস ১৪৫*, চান্দিমাল ১২৪; সাকিব ৫-৯৬, এবাদত ৪-১৪৮)
বাংলাদেশ দ্বিতীয়
ইনিংস: ৩৪/৪ (মুশফিক ১৪*, লিটন ১*; ফার্নান্দো ২-১২, রাজিথা ১-১২)