প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলো ইংল্যান্ডের
বোলিং ডিপার্টমেন্ট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখা গেলো সেই ছন্দ। তবে
ইংলিশ বোলারদের চোখ রাঙানি সামলে একাই বুক চিতিয়ে দাঁড়ালেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু
বালবার্নি। অধিনায়কের ফিফটিতেই ইংলিশদের সামনে ১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে আয়রাল্যান্ড।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে আয়ারল্যান্ডকে
ব্যাটিঙইয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। তবে বিধি বাম, খেলাই শুরু
হতে দিলো না বৃষ্টি। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে
দেরিতে শুরু হয় খেলা।
বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো আগের থেকেই। বৃষ্টির
কারণে ম্যাচ হবেই কিনা সেটি নিয়েও সন্দেহ অমূলক ছিলো না। তবে খেলা মাঠে গড়িয়েছে, বৃষ্টি
বাঁধায় দুইবার আটকে গিয়েও আবার মাঠে নেমেছে দুই দল।
প্রথমবার বৃষ্টি থামলো অবশ্য তাড়াতাড়িই।
বৃষ্টির বন্ধ হওয়ার পর ব্যাট করতে নামে আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার।খেলা শুরু হওয়ার পর
১.৩ ওভার বল হওয়ার পরেই আবারও নামে বৃষ্টি। আবার বন্ধ হয়ে যায় খেলা। প্রায় ২০ মিনিটের
মতো বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে খেলা।
বৃষ্টির পর খেলতে নেমেই অবশ্য প্রথম ধাক্কা
খায় আইরিশরা। তৃতীয় ওভারেই মার্ক উডের বলে ডিপ থার্ডে স্যাম কারানের হাতে ধরা পড়েন
পল স্টারলিং। ১ চার আর ১ ছয়ে ৮ বলে ১৪ রান করেই ফিরে যান এই আইরিশ ওপেনার।
তৃতীয় ওভারেই ২১ রানে ওই উইকেট হারানোর
পর অবশ্য পাওয়ার প্লে'র বাকিটা সমপ্য ইওগ্লিশ বোলারদের ওপরই ছড়ি ঘুরিয়েছে আইরিশরা।
তিন নম্বরে নামা লোরকান টাকারকে নিয়ে ভালোই ব্যাট চালিয়েছেন আইরিশ অধিনায়ক বালবার্নি।
ক্রিস ওকসের করা চতুর্থ ওভার ভথেকেই দুজন
মিলে নেনে ১১ রান। মার্ক উডের করা পঞ্চম ওভার থেকে আসে ৮ রান। আর পাওয়ার প্লে'র শেষ
ওভারে স্যাম কারানের বলে ১ ছয় আর ১ চারে আইরিশরা তোলে ১৪ রান। পাওয়ার প্লে'র ৬ ওভার
শেষে ১ উইকেটেই ৫৯ রান তুলে ফেলে আয়ারল্যান্ড।
দুজন মিলে ভেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন
আইরিশদের। উইকেট না হারানোর সঙ্গে রানের গতিও ছিলো ভালোই। ১০ ওভারে শেষে ১ উইকেটে ৯২
রান তুলে ফেলে আয়ারল্যান্ড।
এই জুটি যখনই বিপদজনক হয়ে উঠছে তখনই দুর্ভাগ্যের
এক রান আউটের শিকার হয়ে ফিরতে হয় টাকারকে। ইনিংসের ১২তম ওভারের শেষ বলে বালবার্নির
নেওয়া শট রশিদের হাতে লেগে আঘাত করে নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্ট্যাম্পে। সেসময় ক্রিজের
বাইরেই ছিলেন টাকার। ২৭ বলে ৩৪ রান করে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হয়েই ফিরতে হয়
তাকে। ভাঙে ৮২ রানের জুটি।
দুর্ভাগ্যের রান আউটে শুরু, তারপর থেকেই
যেন ছন্দপতন আইরিশ ইনিংসে। মার্ক উডের পরের ওভারে দ্বিতীয় বলে শূন্য রানেই ফিরে যান
হ্যারি টেক্টর। ক্রিজের ওপর প্রান্তে দলের ইনিংস এগিয়ে নেওয়ার কাজ করেন অধিনায়ক বালবার্নি।
১৪তম ওভারে গিয়ে ৫ চার আর ১ ছয়ে ৪০ বলেই নিজের ফিফটি তুলে নেন আইরিশ অধিনায়ক।
এরপর অধিনায়ককে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন
অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যামফার। তবে আইরিশদের ওপর দিয়ে বড় ঝড় যায় লিয়াম লিভিংস্টোনের
করা ইনিংসের ১৬তম ওভারে। ওই ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ স্কয়ারে অ্যালেক্স হেলসের হাতে ধরা
পড়ে বালবার্নি। ফেরার আগে খেলেন ৪৭ বলে ৬২ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস। পরের বলেই আবার ধাক্কা লিভিংস্টোনের। দারুন এক ইয়র্কারে
জর্জ ডকরেলকে ফিরিয়েছেন শূন্য রানেই। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও সেটি অবশ্য আর
হয়নি।
ক্যামফার চেষ্টা করেছিলেন যথাসম্ভব দলের
রান বাড়িয়ে নিতে। তবে পারেলন না বেশিদূর নিতে। মার্ক উডের বলে ১৭তম ওভারে উইকেটের পেছনে
ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ক্যামফার। ১১ বলে ১৮ রান করেই ফিরে যান তিনি। ১৩৮ রানেই ৬ষ্ঠ উইকেট
হারায় আইরিশরা।
এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনই আয়ারল্যান্ডের
ইনিংস। ১৯ রানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রানেই অলআউট হয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। ইংলিশদের
হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন লিভিংস্টোন আর উড।