আজঃ শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
শিরোনাম

ইন্দোনেশিয়ায় বড় হচ্ছে ইভির বাজার

প্রকাশিত:সোমবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০23 | হালনাগাদ:সোমবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০23 | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইন্দোনেশিয়ায় বিদ্যুৎচালিত গাড়ি (ইভি) বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এ দেশের বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বিভিন্ন ইভি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা হুন্দাই ও তার চীনা প্রতিদ্বন্দ্বী উলিংও।

 

চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ার বাজারে ইভি বিক্রির পরিমাণ বাড়বে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি। গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় শুরু হওয়া ইন্টারন্যাশনাল মোটর শোতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির প্রদর্শন থেকেও দেশটির বাজারে ইভির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

 

এ মুহূর্তে ইন্দোনেশিয়ার বাজারে ইভি বিক্রির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে উলিং মোটরস। কোম্পানিটির স্থানীয় নির্বাহী জানিয়েছেন, গত বছরের আগস্টে ইন্দোনেশিয়ায় এয়ার ইভি হ্যাচব্যাক মডেল বিক্রি শুরু করেন তারা। গত বছর বাকি সময়ে বিক্রি হয়েছে আট হাজার ইভি। চলতি বছর তা সহজেই ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এসব গাড়ির দাম শুরু হয়েছে ১৬ হাজার ডলার থেকে। উলিংসহ অন্য কোম্পানির ইভি মিলিয়ে গত বছর ১০ হাজারের বেশি ইভি বিক্রি হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালে বিক্রি হয়েছিল মাত্র ৬০০টি। সে হিসেবে গত বছরের পরিসংখ্যান অনেক এগিয়ে। 

 

ইন্দোনেশিয়ার উলিং মোটরসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আরিফ প্রামাদানা বলেন, ‘গত বছর খুব সহজেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এয়ার ইভি। চলতি বছরটিও তেমন যাবে বলেই প্রত্যাশা করছি।’

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার এ খাতের জন্য কিছু প্রণোদনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ইভি চার্জ দেয়ার অবকাঠামোর সংখ্যাও। এসব কিছুই ইন্দোনেশিয়ার বাজারে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বিক্রি বাড়াচ্ছে। কেবল জাকার্তাতেই নয়, গোটা দেশেই বাড়ছে ইভি বিক্রি।

 

বিশ্বের অন্যতম নিকেল উৎপাদক দেশ ইন্দোনেশিয়া। যে উপাদানটি ইভি গাড়ির ব্যাটারি তৈরির মূল উপাদান। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ইন্দোনেশিয়ায়ই ব্যাটারি নির্মাণ কারখানা চালুর বিষয়ে নির্মাতাদের আকৃষ্ট করতে চেষ্টা করছে দেশটির সরকার। সেই সঙ্গে এটাও প্রচার করা হচ্ছে যে ২৭ কোটি মানুষের এ দেশটি ইভির ভবিষ্যৎ বাজার হিসেবে খুবই আকর্ষণীয়।

 

উলিং চলতি বছরই অন্তত একটি নতুন মডেলের ইভি ইন্দোনেশিয়ায়ই তৈরি করতে চায়। সেই সঙ্গে এশিয়ার দেশগুলোয় ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদিত ইভি বাজারজাত করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এজন্য পশ্চিম জাভার চিকারাং এলাকায় এয়ার ইভির যন্ত্রাংশ সংযোজনের কারখানা খোলা হয়েছে। এ কারখানায় ডান দিকে ড্রাইভিং হুইল থাকে এমন ইভি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।

 

হুন্দাই মোটরও এ বছর ইন্দোনেশিয়ার বাজার নিয়ে আলাদা করে ভাবছে। চলতি বছর থেকেই ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তারা। গত বছরের মার্চ থেকে চিকারাংয়ের কারখানায় আয়োনিক ফাইভ মডেলের ইভি উৎপাদন শুরু করেছে হুন্দাই। গত বছর দুই হাজারটির বেশি ইভি বিক্রি করেছে কোম্পানিটি। যদিও গত বছর চিপ সংকটের কারণে সময়মতো গাড়ি সরবরাহ করতে পারেনি হুন্দাই। তবে চলতি বছর সে সংকট কাটিয়ে ওঠার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।


আরও খবর



বিকেলে দুবাই পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

সোমালিয়ার জলদস্যুদের থেকে মুক্তি পাওয়া এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি আজ রোববার সকালে পারস্য উপসাগরের কাসাব উপকূল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টার দিকে জাহাজটি দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাহাজের অবস্থান নির্ণয়কারী বৈশ্বিক সংস্থা মেরিন ট্রাফিক এ তথ্য জানিয়েছে। জানা গেছে, দুবাই পৌঁছার পর জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাস করা হবে। আর কয়লা খালাসের পর জাহাজটি চট্টগ্রামে চলে আসতে পারে।

মেরিন ট্রাফিকের তথ্য বলছে, এমভি আবদুল্লাহ গতকাল রাতে ওমান সাগর পারি দিয়ে পারস্য উপসাগরে প্রবেশ করে। জাহাজটি ঘণ্টায় ৯ দশমিক ৩ কিলোমিটার গতিতে দুবাইয়ের দিকে আগিয়ে যাচ্ছে। জাহাজটির অবস্থান ও গতিবেগ অনুযায়ী বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল ৪টার মধ্যে দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছাবে।

এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ গণমাধ্যমকে জাহাজের ২৩ নাবিকের সবাই সুস্থ আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। দুবাই পৌঁছানোর পর নাবিকদের দুইজন ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরবেন। বাকি ২১ জন কয়লা খালাসের পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জাহাজ নিয়ে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে দুবাই বন্দরের দিকে যাত্রা শুরু করে। এর আগে হেলিকপ্টার দিয়ে দস্যুদের কাছে ডলার পাঠানো হয়েছিল। ডলার পাওয়ার পরই জাহাজ ও জিম্মি ২৩ নাবিককে মুক্তি দেয় দস্যুরা।


আরও খবর



তীব্র গরমে ঢাবিতে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

চলমান তাপপ্রবাহের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলবে।

আজ রবিবার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আদিষ্ট হয়ে জানাচ্ছি যে, সারাদেশের ওপর দিয়ে প্রবহমান তীব্র তাপদাহ (হিট ওয়েভ)-এর কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রচলিত ১০% অনলাইন ক্লাসের পরিবর্তে শতভাগ অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে এবং পরীক্ষাসমূহ চলমান থাকবে।

এতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী হল অথবা বাসার বাইরে আসতে চাইলে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে নিম্নোক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সাথে চলাফেরার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।

সাদা বা হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরিধান করা, যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা, বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করা, বিশুদ্ধ পানি পান করা; প্রয়োজনে লবণযুক্ত তরল যেমন- খাবার স্যালাইন ইত্যাদি পান করা, তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী পানীয় যেমন- চা ও কফি পান থেকে বিরত থাকা।


আরও খবর



‘শ্রুতিকটু’ শব্দ থাকা ২৪৭ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিভিন্ন রকমের শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক নাম থাকা দেশের ২৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার। বুধবার (৩ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খুলনার কয়রার খাসিটানা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা পাটাচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে ছায়াবিথী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান চোরমর্দ্দন বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম জ্ঞানপ্রদীপ চোরমর্দ্দন বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চোরমর্দ্দন বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম জমিদারবাড়ি চোরমর্দ্দন বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাটোরের লালপুর উপজেলার গোদাগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সালামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চোরমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মাতৃছায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার চুলধরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ফুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভণ্ডগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বর্ণমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এভাবে শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

গত বছরের ১৯ জানুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা-২০২৩ জারি করেছে মন্ত্রণালয়।

ওই সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেকগুলোর নাম শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক ভাবার্থসংবলিত। যা শিশুর রুচি, মনন, বোধ ও পরিশীলিতভাবে বেড়ে ওঠার অন্তরায়। এজন্য মন্ত্রণালয় এসব বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী এ রকম নেতিবাচক ভাবার্থসংবলিত নাম পরিবর্তন করা হবে।


আরও খবর



ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যে দিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছ। রাজধানীবাসীদের মধ্যে অনেকে নানা কারণে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেননি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আজ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ঈদের দিনে ঢাকা ছাড়ছেন। কমলাপুর স্টেশনে সকাল থেকেই ছিলো যাত্রীর চাপ। সড়কের পাশাপাশি ভোর থেকেই রেলপথে যাত্রীর দেখা মেলে কমলাপুর স্টেশনে।

মূলত ঈদে যাত্রাপথের ভোগান্তি এড়াতেই ঈদের পরদিন গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন বলে জানান যাত্রীরা। আবার টানা ছুটির কারনে যাত্রার জন্য অনেকেই বেছে নিয়েছেন ঈদের পরদিনকে। ময়মনসিংহ,চট্টগ্রাম,সিলেটের ট্রেনগলো কমলাপুর থেকে যাত্রা করে যথাসময়েই। ঢাকায় ছাড়ার পথে যাত্রীর চাপ থাকলেই ঢাকামুখি মানুষের সংখ্যা ছিলো অনেকটাই কম।

নিউজ ট্যাগ: কমলাপুর স্টেশন

আরও খবর



লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও আমল

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর। ফারসি ভাষায় যা শবে কদর নামে খ্যাত। লাইলাতুল কদর এমন এক মহিমান্বিত রজনী যে রজনীতে আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পবিত্র কুরআন নাজিল করেছেন। মূলত এজন্যই এই রজনী এত ফজিলতপূর্ণ আর এই রজনীর কারণেই মাহে রমজান এত সম্মানিত।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে এই রজনীর গুরুত্ব বুঝাতে কদর নামে একটি সুরা অবতীর্ণ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন: নিশ্চয়ই আমি এই কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কদরে। আর আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর অর্থাৎ কদরের রজনী হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এই রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত। সুরা কদর: ১-৫

পবিত্র কুরআনে লাইলাতুল কদরকে আল্লাহ তাআলা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহর কোন বান্দা যদি এই রাতে ইবাদত-বন্দেগী করে তবে সে হাজার মাস ইবাদত-বন্দেগী করার সাওয়াব লাভ করবে। এক হাজার মাসে ৩০ হাজার রাত্রি হয়। অর্থাৎ এই রাতের মর্যাদা ৩০ হাজারগুণ অপেক্ষাও বেশী!

সুতরাং বলা যায় এ রাতের একটি তাসবিহ অন্যান্য রাতের ৩০ হাজার তাসবিহ অপেক্ষা উত্তম। অনুরূপভাবে, এই রাতের এক রাকাত নামাজ অন্যান্য রাতের ৩০ হাজার রাকাতের চেয়েও উত্তম। বলা বাহুল্য, এই রাতের আমল লাইলাতুল কদর বিহীন অন্যান্য ৩০ হাজার রাতের আমল অপেক্ষা অধিক শ্রেষ্ঠ। তাই যে ব্যক্তি এই রাতে ইবাদত করল, মূলত সে যেন ৮৩ বছর ৪ মাস অপেক্ষা বেশি সময় ধরে ইবাদত করল।

এছাড়াও লাইলাতুল কদরের রাতের অনেক ফজিলত হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। কদর রজনীর ইবাদত, সালাত আদায়ের ফলে পূর্ববর্তী জীবনের গুণাহসমূহ মাফ হয়ে যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি রমজানে ইমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় সিয়াম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ইমানের সাথে, সাওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪।

এই ফজিলতপূর্ণ রাতটি কখন? কোন সময় আসে? এ সম্পর্কে রসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা রমজানের শেষ-দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। বুখারী: ২০২০

তাহলে শেষ-দশক মানে কি রমজানের শেষ দশকে প্রতিদিন লাইলাতুল কদর তালাশ করতে হবে? এই প্রসঙ্গে নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: তোমরা রমজানের শেষ-দশকের বেজোড় রাতসমূহে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। বুখারী : ২০১৭

অর্থাৎ মাহে রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ এ পাঁচটি রাতের মধ্যে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর তালাশ করতে হবে। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে আমরা যে ২৭ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে লাইলাতুল কদর পালন করি এর ভিত্তি কী? প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের জন্য এ রাতের ব্যাপারে আরও নির্দিষ্ট করে বলছেন: তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অক্ষম হয় বা দুর্বল থাকে তাহলে সে যেন ২৭ রমজানের রজনীকে লাইলাতুল কদর বলে বিবেচনা করে ইবাদত করে। মুসলিম: ১১৬৫

হযরত উবাই ইবনে কাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ২৭ রমজানকে লাইলাতুল কদর বিবেচনা করে ইবাদত করতে বলেছেন।

এছাড়াও মুহাক্কিক ইমামগণ বলেন, আরবিতে লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয়ে নয়টি হরফ বা আরবি বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরে লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই সাতাশে রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাফসিরে মাযহারি

যে রাতে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর হবে তার কিছু আলামত হাদিস শরিফে এসেছে:

১. আকাশ মেঘমুক্ত ও উজ্জ্বল থাকবে। তিরমিজি

২. ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি তথা নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকবে। তিরমিজি

৩. রাতগত দিনে সূর্য উদিত হবে আলোক-রশ্মীহীন অবস্থায়, অর্থাৎ সূর্যের চিরচেনা তেজবিহীন অবস্থায়। মুসলিম, সহিহ ইবনে খুযায়মা

মহিমান্বিত এ রাত পেলে মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে কী প্রার্থনা করবে? কী চাইবে? এ সম্পর্কে হাদিস শরিফে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি বলেন: একবার আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, যদি আমি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী দোয়া পড়বো? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নী। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। সুনানুত তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩

সুতরাং, লাইলাতুল কদরে আমাদেরকে আমল ও দোয়ার মাধ্যমে রাত অতিবাহিত করা জরুরি। আর কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে এই রাতের কতিপয় আমল হলো-

১. নফল নামাজ পড়া।

২. মসজিদে প্রবেশ করে ২ রাকাত (দুখুলিল মাসজিদ) নামাজ পড়া।

৩. দুই রাকাত করে (মাগরিবের পর ৬ রাকাত) আউওয়াবিনের নামাজ পড়া।

৪. রাতে তারাবির নামাজ পড়া।

৫. শেষ রাতে সাহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।

৬. সম্ভব হলে সালাতুত তাসবিহ পড়া।

৬. তাওবার নামাজ পড়া।

৭. সালাতুল হাজাত পড়া।

৮. সালাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল নামাজ বেশি বেশি পড়া।

৯. কুরআন তেলাওয়াত করা। সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুজ্জাম্মিল, সুরা মুদ্দাসির, সুরা ইয়াসিন, সুরা ত্বহা, সুরা আর-রাহমান, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, সুরা কুরাইশ, সুরা ইখলাস ইত্যাদি সুরা তিলাওয়াত করা।

১০. অধিক পরিমাণে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাম ও দরূদ শরিফ পাঠ করা।

১১. তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া। সাইয়্যেদুল ইসতেগফার পড়া।

১১. জিকির-আজকার করা।

১২. কুরআন-সুন্নাহ বর্ণিত দোয়া পাঠ করা।

১৩. পরিবার পরিজন, বাবা-মা ও মৃতদের জন্য দোয়া করা,

১৪. কবর জেয়ারত করা।

১৫. বেশি বেশি দান-সদকাহ করা।

এছাড়াও এই রাতে নিজেকে নানাবিধ ইবাদতে ব্যস্ত রাখা। কারণ এই রাতের ইবাদতের দ্বারা আমাদের জীবনের গুণাহসমূহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন। তাই আমাদের উচিত এই রাতকে অবহেলায় না কাটিয়ে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল রাখা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে লাইলাতুল কদর পালন করে কল্যাণ লাভ করার তাওফিক দান করুক। আমিন বিজাহিন নাবিয়্যিল কারিম রাউফুর রাহিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪