দীর্ঘ দিন সংস্কার
না করায় হুমকির মুখে শতকোটি টাকার প্রকল্পের ভোলা শহর রক্ষা বাঁধ। বাঁধের বিভিন্ন অংশে
ব্লক ধসে গিয়ে মাটি বের হয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে আগামী বর্ষা
মৌসুমের আগেই যদি জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি সংস্কার না করা হয়, তবে জোয়ারের পানি প্রবেশের
আশঙ্কা রয়েছে ভোলা শহরে। এতে দ্রুত বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন গিয়ে
দেখা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার মেঘনার হার্ড পয়েন্টে
প্রায় ৯ থেকে ১০ স্থানে ব্লক বাঁধের ধ্বংস সৃষ্টি হয়েছে। তবে ওই ভাঙন অংশে প্রায় তিন
বছর আগে জরুরি বরাদ্দের আওতায় বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হয়েছিল। বর্তমানে ওই জিওব্যাগ
নষ্ট হয়ে বালু বের হয়েছে। ফলে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে ওই এলাকাসহ আশপাশের
বাসিন্দাদের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক দেখা গেছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন
বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া, ধনিয়া, শিবপুর ও পূর্ব ইলিশা
ইউনিয়নের সোনাডুগি পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ভোলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধরা
হয়। ভাঙন ঠেকাতে এই বাঁধের পাশে দুই দফায় তুলাতুলি মুন্সীবাড়ি থেকে উত্তরে বালিয়াকান্দি
দফাদারবাড়ি পর্যন্ত ৩৪ মিটারের প্রস্থের তিন হাজার ৩০০ মিটার ব্লক বাঁধ নির্মাণ করা
হয়।
দ্বিতীয় ধাপের
এক হাজার ৩০০ মিটার ব্লক বাঁধ ২০১১-১২ সালে মেঘনার ভাঙনের তীব্রতায় ও সংস্কারের অভাবে
বিলীন হয়ে যায়। পাউবো তৃতীয় ধাপে (২০০৮-২০১১ সালে) ধনিয়া ইউনিয়নের কোড়ারহাট পণ্ডিতবাড়ি
থেকে বলরাম সুরা নুর মোহাম্মদের বাড়ি পর্যন্ত মেঘনা তীরে ব্লক ফেলে।
চতুর্থ ধাপে কাচিয়ার
সঙ্গে বিলীন হওয়া অংশে ব্লক বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বিভিন্ন ধাপে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়
করে প্রকল্পটি করা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালে এ শহর রক্ষা বাঁধের ২৫০ মিটার বাঁধ সংস্কারের
জন্য অধিদপ্তরে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠালে বরাদ্দ হয়েছে ৪৯ লাখ টাকা।
ওই সময় ৯ হাজার ৭২টি বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়।
ধনিয়া ইউনিয়নের
সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম গোলদার জানান, প্রায় তিন বছর আগে বাঁধটি সংস্কার
করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে জিওব্যাগ নষ্ট হয়ে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাই দ্রুত
স্থানীয়ভাবে বাঁধ নির্মাণ না হলে মূল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও রক্ষা করা যাবে না।
ভোলা পানি উন্নয়ন
বোর্ড (পাউবো) ১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, ভোলা শহর রক্ষা প্রকল্পের
ধনিয়ার তুলাতুলি এলাকায় এক কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ নদীতীর সংরক্ষণসহ মোট পাঁচ কিলোমিটারের
একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে কাজ
শুরু হবে।