আমতলী উপজেলা
নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের নির্দেশ উপেক্ষা করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ
কাটার ৯ দিনের মাথায় পাইপ দিয়ে দায়সারা বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী
সফিকুল মৃধা, মজিবর মৃধা, মোশারফ মৃধা, ইউনুস বেপারী, মজিবর গাজী, ছত্তার হাওলাদার
ও নুরজামালসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার তারা
পাইপ দিয়ে দায়সারা বাঁধ নির্মাণ করছেন। প্রাকৃতিক জলোচ্ছাস হলে ওই বাঁধ ভেঙ্গে আঠারোগাছিয়া
ও হলদিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ পানিতে তলিয়ে যাবে। দ্রুত দায়সারা বাঁধ নির্মাণ
বন্ধ করে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ১৯৬৯
সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন বাসীদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায়
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেন। ওই বাঁধের ওপরে ৩০ বছর আগে সড়ক ও জনপথ পাকা রাস্তা
নির্মাণ করে। ওই সড়ক দিয়ে গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী, গোলখালী, আঠারোগাছিয়া ও হলদিয়া
ইউনিয়নের শত শত যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ চলাফেরা করে। গাজীপুর এলাকার পানি নিস্কাশনের
জন্য স্থানীয় সরকার গত ৩৫ বছর আগে জিনবুনিয়া খালে ফ্লাসিং স্লুইজ গেট নির্মাণ করে।
কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী বাহাদার মৃধা, তার বোন মাফুজা মৃধা ও তাদের সহযোগী ওই ¯স্লুইজগেট
আটকে পানি নিস্কাশন বন্ধ করে দেয়।
পরে ওই স্লুইজগেট
দখল করে বাড়ী নির্মাণ করেছেন তারা। এতে পশ্চিম গাজীপুর এলাকার পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে
যায়। গত ২৮ আগষ্ট বিকেলে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক মৃধার চাচাতো ভাই
সফিকুল মৃধা, মজিবর মৃধা, মোশারফ মৃধা, ইউনুস বেপারী, মজিবর গাজী, ছত্তার হাওলাদার
ও নুরজামালসহ তাদের সহযোগীরা আমতলী-গাজীপুর সড়কের পশ্চিম গাজীপুর আজাহার মাষ্টার বাড়ীর
সামনে থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে দেয়।
এতে সড়ক যোগাযোগ
বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পরেছে কয়েক হাজার মানুষ। ভোগান্তি লাঘবে এ বাঁধ নির্মাণের
নির্দেশ দেয় আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম। কিন্তু বৃহস্পতিবার
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ উপেক্ষা করে স্থানীয় ওই প্রভাবশালীরা পাইপ দিয়ে দায়সারা
বাঁধ নির্মাণ করেন। প্রাকৃতিক জলোচ্ছাস হলে ওই বাঁধ ভেঙ্গে আঠারোগাছিয়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের
১০ গ্রামের মানুষ পানিতে তলিয়ে যাবে। দ্রুত ওই বাঁধ কাটা স্থানে দায়সারা বাঁধ নির্মাণ
বন্ধ করে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ কাটা বাঁধের নিচে পাইপ দিয়ে দায়সারা বাঁধ
নির্মাণ করছে স্থানীয়রা।
পশ্চিম গাজীপুর
গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, যেভাবে দায়সারা বাঁধ নির্মাণ করছে, তাকে প্রাকৃতিক জলোচ্ছাস
হলে আঠারোগাছিয়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাবে। দ্রুত ওই দায়সারা বাঁধ
বন্ধ করে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
বাধ কাটার সঙ্গে
জড়িত সফিউল মৃধা ও মজিবর মৃধা বলেন, ইউএনও স্যার বাঁধ নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তাই বাঁধ নির্মাণ করছি। কিন্তু পাইপ দিয়ে বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ ইউএনও দেয়নি আপনারা
কেন তার নির্দেশ উপেক্ষা করে দায়সারা বাঁধ নির্মাণ করছেন এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে
পারেননি তারা।
আমতলী উপজেলা
নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, পাইপ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা যাবে না। দায়সারা
বাঁধ নির্মাণ করতে নিষেধ করেছি। তারপরও যদি কেউ পাইপ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে থাকেন তাদের
বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব বলেন, স্থানীয়রা অন্যায়ভাবে বাঁধ
কেটেছে আবার অন্যায়ভাবে পাইপ দিয়ে দায়সারা বাঁধ নির্মাণ করছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।