আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

হত্যার দায়ে ছেলের ফাঁসির আদেশ, মাসহ ২ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ নভেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ নভেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
Image

নড়াইল প্রতিনিধি:

নড়াইল শহরের ভওয়াখালীতে হালিমা বেগম নামে এক প্রতিবেশিকে হত্যার দায়ে ছেলে সেলিম সরদারকে ফাঁসির আদেশ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং মা মোমেনা বেগমসহ অপর প্রতিবেশি সাজ্জাদ খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী মোঃ মশিয়ার রহমান এ আদেশ দেন। এর মধ্যে আসামি মোমেনা বেগম রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক আছেন। মোমেনা ও সাজ্জাদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত সেলিম ভওয়াখালীর সলেমান সরদারের ছেলে এবং যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত সাজ্জাদ কবির খানের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ মে আসামি সেলিম সরদার ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজারের টাকা ছিনতাই করেন। ঘটনাটি প্রতিবেশি হালিমা বেগম দেখে স্থানীয় লোকজনকে জানান। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেলিমের মা আসামি মোমেনা বেগম ভূক্তভোগী হালিমাকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসেন। কথাকাটির এক পর্যায়ে সেলিম সরদার কোদাল দিয়ে হালিমাকে মাথায় আঘাত করেন। এ সময় সেলিমের মা মোমেনা বেগম এবং অপর আসামি সাজ্জাদ খান হালিমাকে কিল, লাথিসহ মারধর করে। আহত হালিমা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে বুধবার সকালে এ রায় ঘোষণা করেন।


আরও খবর



ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ শুরু

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ভোটগ্রহণ চলবে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে সাধারণ এবং কুমিল্লা সিটিতে মেয়রের শূন্য পদে উপনির্বাচন ছাড়াও তিনটি পৌরসভার সাধারণ ও বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রের শূন্যপদসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের শূন্যপদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ছাড়া ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন, সাতটি জেলা পরিষদের উপনির্বাচনসহ ১৮৭টি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন শূন্যপদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, এসব নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে ইমেজ সংকটে পড়তে না হয় সেজন্য সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছেন সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যাপারে তারা বদ্ধপরিকর।

এদিকে, কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের ২৭টি, ৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও দুটি রিজার্ভ টিম রয়েছে। এ ছাড়া নিয়োজিত রয়েছে র‌্যাবের ২৭টি টিম এবং ১২ প্লাটুন বিজিবি। এ ছাড়া সর্বোচ্চ ২২ জনের ফোর্স অন্য স্থানীয় নির্বাচনের কেন্দ্রে মোতায়েন রয়েছে।

নির্বাচন উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে একটি আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতি কেন্দ্রে নিয়োজিত রয়েছে ১৭ জনের ফোর্স। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন এবং সাধারণ কেন্দ্রে নিয়োজিত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৬ সদস্য। ময়মনসিংহ সিটির ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও ভোটের এলাকায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ, এপিবিএন, আনসারের ৩৩টি মোবাইল টিম, ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও একটি রিজার্ভ টিম। ৩৩টি ওয়ার্ডে র‌্যাবের ১৭টি টিম এবং সাত প্লাটুন বিজিবি রয়েছে।


আরও খবর



হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে কুমিল্লার বাগিচাগাওয়ের বাসা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আত্মহত্যার আগে ফাইরুজ তাঁর এক সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে অবন্তিকা অভিযোগ করেন, তাঁর সহপাঠী আম্মান তাঁকে অফলাইন ও অনলাইনে বিভিন্ন সময় হুমকি দিতেন। এ ব্যাপারে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম তাঁকে নানাভাবে বহিষ্কারের ভয় দেখান।

ফাইরুজের মা তাহমিনা শবনমের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বার বার জানিয়েও হয়রানির বিচার পাননি তারা। এ কারণেই তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

আরও পড়ুন :ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

অবন্তিকা কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। অবন্তিকার বাবা জামাল উদ্দিন কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর আগেও মেয়ে অবন্তিকার হয়রানি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম অভিযোগ করে বলেন, মানসিকভাবে হয়রানি করে অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও কোনো ফল পাননি তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকিকে মেয়ের আত্মহননের জন্য দায়ী করে তাহমিনা শবনম বলেন, অবন্তিকার বাবা জামাল উদ্দিন জীবিত থাকা অবস্থায় মেয়ের বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও কোনো ফল পাননি। জামাল উদ্দিনের মৃত্যুর এক বছরের বেশি সময় পর সেই একই কারণে মেয়ে অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছে।

আরও পড়ুন :আন্দোলনে উত্তাল জবি, উপাচার্যের কাছে যেসব দাবি

অবন্তিকার ভাই জারিফ যাওয়াদ অপূর্ব বলেন, অবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়রানির বিষয়টি নিয়ে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে কাটাতো। এসব বিষয়ে বাবা ও মাকে সে সবসময়ই জানিয়েছে। কিন্তু সে আত্মহত্যা করবে বিষয়টি একেবারেই ভাবা যায়নি।

অবন্তিকার কুমিল্লার বন্ধুরা জানান, মেধাবী অবন্তিকা মানসিকভাবে শক্ত ছিলেন। তাঁর এই আত্মহত্যার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তিও দাবি করেন তারা।

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর সহপাঠীরাও দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।


আরও খবর



প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি এ সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় তারা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।


আরও খবর



মুক্তির মহানায়কের জন্মদিন আজ

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ রোববার (১৭ মার্চ)। সারাদেশে দিনটি জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

দিবসটি উদযাপনে এদিন দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু কিশোর দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধীসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন তারা।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। তাছাড়া সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় নেতারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। একইসঙ্গে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং শিশু সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন।

তার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়াল্ড রেজিস্ট্রারে অর্ন্তভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

অন্যদিকে, ২৬ মাচর্ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন তিনি। তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালির বহু কাঙ্ক্ষিত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সংগ্রামে অবদান রাখার জন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদ প্রদত্ত জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হন। বিবিসির এক জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে বঙ্গবন্ধু যখন বিভিন্নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করতে শুরু করেন, ঠিক সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল তার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ধানমন্ডির বাসভবনে কতিপয় সেনা কর্মকর্তার হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন।

বিশ্ব গণমাধ্যমের চোখে বঙ্গবন্ধু ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। অনন্য সাধারণ নেতাকে স্বাধীনতার প্রতীক বা রাজনীতির ছন্দকার খেতাবেও আখ্যা দেয়া হয়। বিদেশি ভক্ত, কট্টর সমালোচক এমনকি শত্রুরাও তাদের নিজ নিজ ভাষায় তার উচ্চকিত প্রশংসা করেন। বিংশ শতাব্দীর কিংবদন্তি কিউবার বিপ্লবী নেতা প্রয়াত ফিদেল ক্যাস্ট্রো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।

শ্রীলংকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মণ কাদির গামা বাংলাদেশের মহান নেতা সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছিলেন, দক্ষিণ এশিয়া গত কয়েক শতকে বিশ্বকে অনেক শিক্ষক, দার্শনিক, দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক, রাজনৈতিক নেতা ও যোদ্ধা উপহার দিয়েছে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান সবকিছুকে ছাপিয়ে যান। তার স্থান নির্ধারিত হয়ে আছে সর্বকালের সর্বোচ্চ আসনে।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১৩ সালের ৪ মার্চ নগরীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন শেষে মন্তব্য বইয়ে লিখেছিলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন জনগণের নেতা এবং তাদের সেবায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাকে দেয়া বঙ্গবন্ধু খেতাবে এই দেশপ্রেমিক নেতার প্রতি দেশের মানুষের গভীর ভালোবাসা প্রতিফলিত হয়।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মন্তব্য বইয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্মোহনী এবং অসীম সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে জনগণের নেতৃত্বদান করেছিলেন। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতা সোনিয়া গান্ধী বলেন, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন নেতা এবং রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। তিনি স্বাধীনতার জন্য প্রতিকূলতা ও বিরূপ পরিস্থিতি উপেক্ষা করে অটল সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ সফরের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এসময় মন্তব্য বইয়ে তিনি লেখেন, উপ-মহাদেশের প্রতিটি মুক্তিকামী, মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষের মনে বঙ্গবন্ধু এক জ্বলন্ত অনুপ্রেরণা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি, স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্থপতি এবং পিতা। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের মঞ্চে অন্যতম শ্রেষ্ঠত্বে মর্যাদা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি সেই বিরল নেতা, যার প্রতি ধর্মমত নির্বিশেষে সব মানুষ প্রণাম জানিয়ে ধন্য হয়।

তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী হিসেবে চিত্রিত করলেও ইতিহাসই প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করে, যখন তাঁর এককালীন ঘোরতর শত্রু তাকে মহান দেশপ্রেমিক হিসেবে অভিহিত করে।১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি (বেলুচিস্তান) অফিসার মেজর জেনারেল তোজাম্মেল হোসেন মালিক পরে তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, বস্তুত মুজিব দেশদ্রোহী ছিলেন না (পাকিস্তানে তাকে সেভাবে চিত্রিত করা হলেও)। নিজ জনগণের জন্য তিনি ছিলেন এক মহান দেশপ্রেমিক।

আরেকজন সেনা কর্মকর্তা তৎকালীন পাকিস্তানি জান্তার মুখপাত্র মেজর সিদ্দিক সালিক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী ৭ মার্চের ভাষণের কথা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সালিক তার গ্রন্থে লিখেছেন, রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর ঘরমুখী মানুষের ঢল নামে। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল আশাব্যঞ্জক বাণী শ্রবণ শেষে মসজিদ অথবা গির্জা থেকে তারা বেরিয়ে আসছেন।


আরও খবর



রমজানে রাজধানীতে কম দামে মিলবে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ

প্রকাশিত:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন রমজান মাসে কম দামে মাছ, গরু, খাসি, মুরগির মাংস, দুধ এবং ডিম সুলভ মূল্যে সরবরাহ করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। রোববার রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, জনগণের কষ্ট লাঘবে বর্তমান সরকার সব সময় সচেষ্ট। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি গাড়িতে থাকবে ২০০ লিটার দুধ, ডিম ৪ হাজার পিস, গরুর মাংস ১০০ কেজি, খাসির মাংস ১০ কেজি। এছাড়া রাজধানীর ৮টি জায়গায় মাছ বিক্রি করা হবে। প্রতি গাড়িতে ৩০০ কেজি করে থাকবে। এ কর্মসূচির আওতায় তরল দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৫০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ৯.১৭ টাকা (১ ডজন ১১০ টাকা) দরে বিক্রয় করা হবে।

এতে জানানো হয়, ১ম রমজান থেকে শুরু হয়ে ২৮ রমজান পর্যন্ত এ ভ্রাম্যমাণ বিপণন ব্যবস্থা রাজধানী ঢাকার ২৫টি স্থানে পরিচালিত হবে। এছাড়া স্থায়ী বাজারসহ আরো ৫টি স্থানে মোট ৩০টি পয়েন্টে এই বিক্রয় ব্যবস্থা চালু থাকবে।

ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রগুলো হলো : (১) নতুনবাজার (বাড্ডা), (২) কড়াইল বস্তি (বনানী), (৩) খামারবাড়ী (ফার্মগেট), (৪) আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), (৫) গাবতলী, (৬) দিয়াবাড়ী (উত্তরা), (৭) জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), (৮) ষাটফুট রোড (মিরপুর), (৯) খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে), (১০) সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গনি রোড), (১১) সেগুন বাগিচা (কাঁচা বাজার), (১২) আরামবাগ (মতিঝিল), (১৩) রামপুরা, (১৪) কালসী (মিরপুর), (১৫) যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), (১৬) বসিলা (মোহাম্মদপুর), (১৭) হাজারীবাগ (সেকশন), (১৮) লুকাস (নাখালপাড়া), (১৯) আরামবাগ (মতিঝিল), (২০) কামরাঙ্গীর চর, (২১) মিরপুর ১০, (২২) কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), (২৩) তেজগাঁও, (২৪) পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) (২৫) কাকরাইল।

স্থায়ী বাজার : (২৬) মিরপুর শাহ আলি বাজার, (২৭) মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট (২৮) নতুন বাজার (১০০ ফুট), (২৯) কমলাপুর, (৩০) কাজি আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।

এতে জানানো হয়, প্রাণিজাত পণ্যগুলো বিক্রয়ের জন্য সুসজ্জিত পিকআপ কুলভ্যান ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে সকাল নয়টার মধ্যে প্রাণিজাত পণ্য নিয়ে কুলভ্যানগুলো পৌঁছে যাবে এবং সকাল ১০টা থেকে বিপন্ন শুরু হবে।

কার্যক্রমটি তদারকি এবং মনিটরিং করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় চতুর্থবারের মতো রমজান মাসে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ দুধ, ডিম ও মাংস বিপণনের এ কার্যক্রম গ্রহণ করছে। ২০২৩ সালে রমজান উপলক্ষ্যে বাস্তবায়িত এ কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেছে।

এতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিক সহযোগিতা  করছে।


আরও খবর
দেশে এলো এক হাজার টন আলু

বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪