আজঃ বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

হিটস্ট্রোকে দুই চা শ্রমিকের মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ জুন 2০২3 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০২ জুন 2০২3 | অনলাইন সংস্করণ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

Image

চা বাগান অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজারে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমের দাপটে নাজেহাল জনজীবন। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া ও দিনমজুর মানুষজন।

আর এই তাপদাহে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে হিট স্ট্রোকে দুই নারী চা শ্রমিক মারা গেছেন এবং ১০ থেকে ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেও বাগান মালিকেরা মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকদের ২ থেকে ৩ শিফটে কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন>> শ্যামলীর আগুন লাগা ভবন থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, চা শ্রমিকেরা উঁচু টিলায় কাজ করার কারণে সূর্যের তাপ সরাসরি তাদের মাথায় এসে পড়ে। গত বুধবার (৩১ মে) রাতে কমলগঞ্জের ডানকান ব্রাদার্স শমশেরনগর বাগান ফাঁড়ির দেওছড়া বাগানের চা শ্রমিক ইন্দ্রা দ্বিবেদী (৫০) ও সঞ্জিতা রবিদাস (৩০) নামে দুই নারী হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।

তারা তিন শিফটে কাজ করে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেন। পরে রাতে তাদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অন্যজন বাড়িতেই মারা যান।

এছাড়া দেওছড়া চা বাগানে ৪ জন, শমশেরনগর চা বাগানে ৩ জন, চাতলাপুর চা বাগানের ১ জন, আলীনগর চা বাগানে ২ জনসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকেরা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়।

চা শ্রমিক নেতা শিতারাম বিন বলেন, তীব্র গরমে দুই চা শ্রমিক হিট স্ট্রোক আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়াও অনেক আক্রান্ত হয়েছেন। এই গরমের মধ্যেও চা শ্রমিকদের একাধিক শিফটে কাজ করানো হচ্ছে। তাদের সকাল ও বিকেলে কাজ করার সুযোগ করে দিলে ভালো হতো। চা শ্রমিকেরা পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের দিক থেকে এমনিতেই অনেক দুর্বল। অতি সহজেই তারা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।

হিট স্ট্রোকে চা শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে শমশেরনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। শ্রমিকেরা যদি সকালে কাজে আসে তাতেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন, হিট স্ট্রোকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষ সচেতন নয়। হিট স্ট্রোক হলে দ্রুততম সময়ে বিপদ ঘটতে পারে। এ সময় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাই শিশু থেকে বয়স্ক সবাইকে গরমে সতর্ক থাকতে হবে। সচেতন হতে হবে।'


আরও খবর



দেশে ১৪ হাজার নতুন রোহিঙ্গা, অপেক্ষায় আরও ৭০ হাজার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের কারণে গত ৮-৯ দিনে প্রায় ১৪ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তারা কমপক্ষে ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে, যার মধ্যে মংডু এলাকা থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেশি।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নোম্যানস ল্যান্ডে আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারে, তবে এই দফায় আরও ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে।

৩ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন যে, নতুন করে ৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেছেন, এটা কীভাবে ঠেকানো যায়, সেটা আমাদের চেষ্টা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নীতিগতভাবে আমরা নতুন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেব না, যদিও এটা বলাটা আমাদের জন্য কষ্টকর, কিন্তু আমাদের সাধ্যের বাইরে, আমরা তাদের আশ্রয় দিতে পারব না।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গত ৮-৯ দিনে ১৩-১৪ হাজার নতুন রোহিঙ্গা টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে অবস্থান নিয়েছে। মংডু সীমান্তে আরও ৬০-৭০ হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা করছে। নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কড়া নজরদারির মধ্যেও নানা কৌশলে তারা বাংলাদেশে ঢুকছে। কিছু দালাল তাদের অর্থ নিয়ে ঢুকতে সাহায্য করছে।

উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা ইউনুস আরমান বলেছেন, আমরা জানতে পেরেছি রাখাইন রাজ্যের মংডুতে যুদ্ধ তীব্র হচ্ছে। মংডু টাউনে থাকা সেনা ও বিজিপির দুটি ব্যারাক দখলের জন্য মরিয়া আরাকান আর্মি। গোলাগুলি ও মর্টার শেল, গ্রেনেড-বোমা ব্যবহার করা হচ্ছে, মাঝে মাঝে ড্রোন হামলাও চলছে।

রোহিঙ্গাদের ৯ নাম্বার ক্যাম্পের এক নাম্বার ব্লকের হেড মাঝি মোহাম্মদ হোসেন বলেছেন, প্রতিদিন নতুন রোহিঙ্গারা আসছেন। তারা নাফ নদী ও অন্যান্য সীমান্ত থেকে আসছেন। স্থানীয় কিছু লোক তাদের বাংলাদেশে প্রবেশে সহায়তা করছে। সবাই ক্যাম্পে আসছে না, ক্যাম্পের বাইরেও তারা অবস্থান করছে।

তিনি আরও বলেন, মংডুতে চলমান তীব্র সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গারা সেখানে টিকতে পারছেন না। তারা মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

টেকনাফের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল বাসার বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কয়েকদিন সীমান্ত দিয়ে ব্যাপকভাবে রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। এখনও বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। দালালরা তাদের ঢুকতে সহায়তা করছে। তারা প্রথমে কক্সবাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে, পরে আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন রোহিঙ্গা প্রবেশের কারণে আমরা আতঙ্কিত। আমরা ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু হয়ে যাচ্ছি, যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

কক্সবাজারে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, প্রতিদিন ক্যাম্পে নতুন রোহিঙ্গারা আসছে। এটা স্পষ্ট যে, সীমান্ত থেকে নতুন করে রোহিঙ্গারা ঢুকছে। তবে আমরা এখনও তাদের কোনো তালিকা তৈরি শুরু করিনি। সরকার থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি।

মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. শহীদুল হক বলেন, যদি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো না যায়, তাহলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। ইতিমধ্যেই ক্যাম্পে মাদক, অস্ত্র ব্যবসা ও নানা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অস্তিত্ব তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখনই এই সমস্যা সমাধানের সময়। সরকারের উচিত কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা। আমরা নতুন রোহিঙ্গা নিতে পারব না।

আরেক সাবেক কূটনীতিক ও কসোভোতে সাবেক ইউএন আঞ্চলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এস এম রাশেদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে আশা করি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা ইস্যুটি শক্তভাবে তুলে ধরবেন। তার গ্রহণযোগ্যতা আছে। আশা করি, তার প্রচেষ্টায় কাজ হবে।

তিনি আরও বলেন, এখনই সময় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করে এই সমস্যা সমাধানের। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবসনই একমাত্র সমাধান। প্রয়োজনে আমাদের আরাকান আর্মির সাথে ভিন্ন চ্যানেলে কথা বলতে হবে।

আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সাথে দৃশ্যমান শক্তি দেখাতে হবে। একটি দেশে সীমান্তের ওপার তো নন-স্টেট অ্যাক্টরদের দখলে থাকতে পারে না বলেন মো. শহীদুল হক।


আরও খবর



জাতিকে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই: ধর্ম উপদেষ্টা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মানুষ বিগতদিনে ভোট দিতে পারেনি। কোন দল একবার ক্ষমতায় আসলে আর ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। এই কালচার বন্ধ করতে চাই। পলিটিক্যাল কালচার রিফর্ম করতে চাই। জাতিকে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই।

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের হালিশহরে হযরত উসমান (রা:) জামে মসজিদে জুমআ'র নামাজের পূর্বে মুসল্লীদের উদ্দেশে বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে প্রথম সভাতেই আমি বলে দিয়েছি-আমি দুর্নীতি করিনা, ঘুষ খাইনা। আমার মন্ত্রণালয়কে আমি দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। এ মন্ত্রণালয়ের কেউ দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে রোযা ও পূজা একইসময়ে পালিত হতে কোন সমস্যা নেই। সবাই তার নিজের ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন ও প্রচার করবে। এটা সকলের নাগরিক অধিকার।

ড. খালিদ বলেন, অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রথম কাজ হলো দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। এরপর সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কাজে হাত দিবে। এ সরকার সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের মাধ্যমে কাজ শেষ করবে।

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে দেশের রিজার্ভ তলানীতে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় অর্থসংশ্লিষ্ট নতুন কোন প্রকল্প গ্রহণ বা অন্য কোন কাজে হাতে দেওয়া সম্ভব নয়। আশার কথা হলো, রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হলেই আমরা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড শুরু করব।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু দুর্বৃত্ত হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানের ধর্মীয় উপাসনালয় ও ঘরবাড়িতে হামলা-ভাংচুর চালিয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে বিদেশি কিছু মিডিয়াতে প্রোপাগান্ডাও চালানো হয়েছে। তবে যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে তাদেরকে সরকার কঠোর হাতে দমন করবে। তিনি দেশের আইন-শৃঙ্খলা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরে তিনি এ মসজিদে জুমআ'র খুতবা দেন ও ইমাম হিসেবে নামাজ আদায় করেন


আরও খবর



জামায়াত নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে মঙ্গলবার

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৬ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন আগামীকাল মঙ্গলবার প্রত্যাহার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির।

সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে হাইকোর্টের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

শিশির মোহাম্মদ মনির বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আশা করছি, আগামীকালের মধ্যে জামায়াত নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল হবে। শুধু গণঅভ্যুত্থানের কর্মকাণ্ডকে ভিন্নখাতে নিতেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়।

তিনি বলেন, তারা যে অভিযোগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, আমরা বিগত সরকারের কাছে জানতে চেয়েছি কী ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, কী সেই সন্ত্রাস, কী ধরনের সন্ত্রাসী অ্যাক্টিভিটিস। এই মর্মে কোনো ব্যাখ্যা তৎকালীন সরকার দিতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা বর্তমান সরকারকে এটা বলেছি যে আপনাদের কাছে যদি নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য থাকে, কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকে, তাও আপনারা আমাদেরকে দেখাতে পারেন। বস্তুত অর্থে এটা একটা কথার কথা। শুধু গণঅভ্যুত্থানকে একটি কর্মকাণ্ডকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার জন্যই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে আমরা মনে করি।


আরও খবর



প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন: আযম খান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
এস এ শফি, সিলেট

Image

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমদ আজম খান বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। কারণ গণতন্ত্র হচ্ছে সর্বজনীন মূল্যবোধ যা জনগণের স্বাধীন ভাব মতপ্রকাশ ও বাধাহীন চিন্তা প্রকাশের স্বীকৃতি প্রদান করে। আমরা এ ধরনের একটি নিরাপদ, প্রগতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ, যা রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রম করে বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক বিকাশে ভূমিকা রাখবে। ইনশাআল্লাহ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।

সিলেটের কৃতি সন্তান এম সাইফুর রহমান দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন, আমি শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্মরণ করছি। সিলেটের সাহসী বীর পুরুষ এম ইলিয়াস আলী সহ ৫২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী গুম করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অবিলম্বে আমরা তাদের সন্ধান চাই। তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর ভোট দিতে পারে নি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে, নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষনা করুন।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কালজয়ী দর্শন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মর্মমূলে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র-যার ভিত্তি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। এই চিন্তা ও দর্শনকে আপোষহীন সংগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন পথচলায় অগ্রগামী করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গণআকাঙ্খায় প্রতিষ্ঠিত সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে বারবার হিংস্র আক্রমণে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকরা বহুমাত্রিক গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। দেড় দশক ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবিরাম সংগ্রামের পটভূমির ওপরে গত জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ইতিহাসের জঘন্যতম স্বৈরশাসনের পতন ঘটে।

তিনি (১৭ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার আর্ন্তজাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে সিলেট বিভাগ বিএনপি আয়োজিত র‌্যালি পূর্বেক আলীয়া মাদ্রাসার মাঠের বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, গণতন্ত্র সর্বজনীন যা, কোন দেশ বা অঞ্চলের অন্তর্গত নয়। গণতান্ত্রিক সমাজে ব্যক্তি মানুষের মর্যাদা সমুন্নত থাকে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মানুষকে কৃতদাসে পরিণত করা যায় না। একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সমাজেই কেবলমাত্র মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়। জনগণের স্বাধীন ইচ্ছার ওপর ভিত্তি করে তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নির্ধারণ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাসহ জীবনের সকল দিকগুলোর স্বত:স্ফূর্ত পূর্ণ প্রকাশ ঘটে। সারাবিশ্বে বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহকে ভূলুণ্ঠিত করে বিভিন্ন দেশে এখনও একদলীয় দুঃশাসনের কালো থাবা বিরাজমান। তিনি আজ পর্যন্ত দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। আত্মদানকারী শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের সমবেদনা।

সিলেট বিভাগ বিএনপির সমাবেশ ও র‌্যালী আয়োজক কমিটির সমম্বয়কের বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ বলেন, বিগত ১৭ বছর কোটি কোটি ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হয়নি। ভুয়া ভোটের জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। দেশের কোটি কোটি ভোটার অর্থবহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দেশের কয়েক প্রজন্ম গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা ও প্রয়োগ ছাড়াই একটি ভীতিকর ও কর্তৃত্ববাদী পরিবেশে বেড়ে উঠেছে। অপশাসনে সংকুচিত স্বাধীনতা ও সৃজনশীলতা তথা মানবিক ও মানসিক বিকাশ ও প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে। তরুণদের উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতকে নস্যাৎ করা হয়েছে। সবল ও শক্তিশালী গণতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য আমাদের এখনও অনেক দুর এগোতে হবে। কারণ এখনও বিশ্বের অধিকাংশ দেশে গণতন্ত্রের দুর্বলতা বিদ্যমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রূশদী লুনা বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের এমন একটি শাসন ব্যবস্থায় উপনীত হতে হবে যেখানে জনগণ সরাসরি শাসনব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারে। জনগণের মতামতই হয় সেই সরকারের পরিচালনার ভিত্তি। কেবলমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আমরা দুঃসময় কাটিয়ে উঠে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সার্বিক প্রচেষ্টায় আমাদেরকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তিনি অবিলম্বে সিলেটের মাটি ও মানুষের নেতা জননেতা এম ইলিয়াস আলীসহ সকল গুমকৃত নেতাকর্মীদের ফিরে দেওয়ার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক সাম্য হরণ করে এক সর্বনাশা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম ছিল। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, ভিন্নমতের কারণে অনেকেই গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার করা হয়েছিল। বাংলাদেশের কিংবদন্তিতুল্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপোষহীন যোদ্ধা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছিল মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়ার বর্বরোচিত অত্যাচার। দেশবাসী এক ভয়াবহ দুর্দিন অতিক্রম করে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক রক্তস্নাত আন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়ে এখন কিছুটা মুক্তির নি:শ্বাস নিতে পারছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় র‌্যালি পূর্বেক সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন  সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, হাজী মুজিব, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল ইসলাম, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়জুল করিম ময়ুর, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ওলামাদল সিলেট জেলার আহবায়ক মাওলানা নুরুল হক। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনা, বিএনপির চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু, শহীদ জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনা এবং বিগত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের মাগফেরাত, আহতদের দ্রুত সুস্থতাসহ দেশ-জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা সালেহ আহমদ।

উল্লেখ্য, গণতন্ত্র সম্পর্কে এবং এর অন্তর্নিহিত শক্তি উপলব্ধি করতে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রচলিত একটি বিশেষ দিন আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস।

নিউজ ট্যাগ: সিলেট

আরও খবর



বিকালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত:শনিবার ৩১ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ৩১ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজ বিকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ মতবিনিময় সভা শুরু হবে। যা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, এবারো তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, সংস্কার এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনা হবে। তবে আগের বৈঠকের মতো এই বৈঠকেও আওয়ামী লীগসহ তাদের জোটের কোনো দল মতবিনিময়ে থাকবে না।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির তিন নেতার সঙ্গে সোয়া এক ঘণ্টা বৈঠক করেন ড. ইউনূস। এসময় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। এর পর বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার বা তাদের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের কাউকে দেখা যায়নি।


আরও খবর