হিজড়া সেজে প্রতারণার
মাধ্যমে অশ্লীলতা ও চাঁদাবাজির উৎপাত বেড়েই চলছে চরফ্যাশন উপজেলায়। কে আসল আর কে নকল
এ নিয়ে হিজড়াদের মধ্যে শুধু ঝগড়া বিবাদই নয়, রীতিমতো চাঁদার ভাগ-বাটোয়ারা এবং সিনিয়র-জুনিয়র
নিয়েও চলছে বাগযুদ্ধ।
তবে এর মধ্যেই
অভিযোগ উঠেছে সালাহ উদ্দিন নামের একজন টেইলার্স কর্মী হিজড়া সেজে চরফ্যাশন উপজেলার
বিভিন্ন হাটবাজারে চাঁদাবাজি ও বাসাবাড়িতে তরুণ যুবকদের সঙ্গে অশ্লীলতা করে ব্ল্যাকমেইলের
মাধ্যমে অর্থনৈতিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।
তারা বলেন, উপজেলার
চর-কলমী ইউনিয়নের চর-মঙ্গল এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে সালাহ উদ্দিন পুরুষ হয়েও
হিজড়া সেজে সানি হিজড়া নাম ব্যবহার করে নিজ এলাকাসহ চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে
মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও অশ্লীলতাসহ ব্ল্যাকমেইল করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে।
হাজি মনির উদ্দিন
নামের চর-কলমী এলাকার এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আমি আঞ্জুরহাট বাজারে দীর্ঘ ৩০
বছর ধরে ব্যবসা করি। ওই বাজারে আমার দোকানের পাশে সালাহ উদ্দিন খলিফা (টেইলার্স কর্মী)
কাজ করত। কিছুদিন আগে সালাহ উদ্দিন টেইলার্সের কাজ বন্ধ করে ঢাকায় যায়। পরবর্তীতে ঢাকা
থেকে সে নারীদের পোশাক পরে আঞ্জুরহাট বাজারে আসে এবং স্থানীয় সঞ্জিব ওরফে রাজুর সেলুনে
কিছুদিন চাকরি করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং এলাকাবাসী সালাহ উদ্দিনকে নারীসূলভ
আচরণ ও পুরুষ হয়ে নারী সাজতে মানা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
সালাহ উদ্দিনের প্রতিবেশী বলেন, সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী ও দুইটি সন্তান রয়েছে। সে একটু
সুন্দর হওয়ায় হিজড়া সেজে এলাকায় অশ্লীলতার পাশাপাশি স্থানীয় চর-মঙ্গল গ্রামের তরুণ
যুবকদের ঢাকায় নিয়ে হিজড়া বানিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া বিআরডিবি শরীফপাড়া ৬নং ওয়ার্ডসহ
বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় উঠতি বয়সি ও যুবকদের সঙ্গে নাচগান এবং অশ্লীল কর্মকাণ্ড করে
যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
সালাহ উদ্দিন
ওরফে সানি হিজড়ার পরিবারের এক সদস্য বলেন, আমরা ধার্মিক পরিবারের মানুষ। আমরা চাই সালাহ
উদ্দিন হিজড়াদের জগত থেকে সাধারণ জীবনে ফিরে আসুক এবং তার সন্তানদের ভবিষ্যতের দিকে
তাকিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সংসার করুক।
বাজারের চাল ব্যবসায়ী
আবুল কালাম, স্বর্ণ ব্যবসায়ী অমল বোস এবং ওষুধ ব্যাবসায়ী এনায়েত উল্লাহসহ একাধিক ব্যাবসায়ী
অভিযোগ করে বলেন, সপ্তাহের প্রত্যেক হাটে বাজারে এসে হিজড়া নামধারী ভুয়া প্রতারকরা
দোকান থেকে চাঁদা কালেকশন করে। যদি না দেই তাহলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে
এসব ভুয়া ও প্রতারক হিজড়ারা।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান রাহুল বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের
মানুষ বলে পরিচয় দিয়ে প্রতারণাসহ ব্ল্যাকমেইলের সঙ্গে জড়িত থাকে এবং তার বিরুদ্ধে যদি
লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় তাহলে অবশ্যই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের মাধ্যমে
পরীক্ষা করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।