ট্রাক চালক হেলপারকে বলে
ঘুম থেকে উঠ, মাল আনলোড করতে হবে। হেলপার বলল, পারমু না ঘুমাইতাছি। ট্রাক চালক দিল
গালি। জবাবে হেলপারও দিল গালি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাক চালক হেলপার গলাটিপে হত্যা করে।
পরে সেই লাশ ট্রাকের পেছনে ঘুমানোর জায়গায় সিটে বহন করে ট্রাকে থাকা মাল আনলোড করে
চালক।
এ ঘটনার পরেই গা ঢাকা দেয়
ট্রাক চালক। আর পুরো হত্যার রহস্য উদঘাটনে চাল ও ডাল ব্যবসায়ী সেজে হত্যাকারীকে আটক
করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকার
এ ঘটনায় আটক ট্রাক চালক হলেন আরিফুর রহমান টিপু (৪৫) এবং খুনের শিকার হয় হেলপার আকাশ
(২১)।
আটক টিপু কুমিল্লা জেলার
বুড়িচং থানার বুড়িচং উত্তরপাড়া এলাকার মৃত ফিরোজ মিয়ার ছেলে। আর হেলপার আকাশ কুমিল্লার
কোতয়ালী থানার সুজানগরের মোতালেবের ছেলে ।
আটকের পর গতকাল মঙ্গলবার
আসামি আরিফুর রহমান টিপু নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে খুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী
প্রদান করেছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, ‘গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে নারায়ণগঞ্জ
বন্দর উপজেলার জাঙ্গাল গ্রাম থেকে একটি অজ্ঞাত পুরুষের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশের
পকেট থেকে মোবাইল উদ্ধার করে সেখান থেকে পরিবারের পরিচিতি নিশ্চিত করা হয় যে লাশটি
ট্রাক হেলপার আকাশের।
এ ঘটনায় আকাশের বাবা মোতালেব
মিয়া বাদী হয়ে গত ১৭ জানুয়ারি অজ্ঞাত আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ট্রাক চালক টিপু স্বীকার
করে বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে সে ও হেলপার আকাশ গাঁজা সেবন শেষে ট্রাকে পুরাতন বই
ও কাগজ নিয়ে ঢাকার মাতুয়াইলের উদ্দেশে কুমিল্লা থেকে রওয়ানা করেন। ১৪ জানুয়ারি শুক্রবার
ভোরে সিমরাইল ট্রাক স্টান্ডে পৌঁছে দুইজন একসাথে ট্রাকের মধ্যে ঘুমায়। পরবর্তীতে পার্টি
মাল আনলোড করার জন্য ফোন দিলে আসামি টিপু ঘুম থেকে হেলপার আকাশকে ডাকে। আকাশ ঘুম থেকে
উঠতে পারবে না বলে টিপুকে জানায়। আসামি রেগে গিয়ে আকাশকে গালি দেয়। জবাবে আকাশও গালি
দিলে টিপু আকাশকে ট্রাকের সিটের সাথে গলা চেপে ধরে হত্যা করে। এই অবস্থায় মৃতদেহ সিটের
পেছনে ঘুমানোর জায়গাতে শুইয়ে রেখে মাতুয়াইল গিয়ে মাল আনলোড করে। তারপর জুম্মার নামাজের
পূর্বে সুযোগ বুঝে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় মৃতদেহ ফেলে
দিয়ে চলে যায়।