ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগে সিলেট নগরের জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন রোগীর স্বজনরা। এ সময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে স্বজনদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার বিকেলে রাগীব রাবেয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নাফিসা বেগম নামে ১০ বছরের এক শিশু। সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানার মীরের গাঁওয়ের শিশু নাফিসাকে সকালেই ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নাফিসার মামা আবুল খায়ের জানান, সপ্তাহখানেক আগে নাফিসার পায়ে লোহা ঢুকেছিল। সম্প্রতি তাতে পুঁজ হয়েছে। চিকিৎসার জন্য বুধবার সকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করে দেন। এরপর দুপুরে নাফিসার পায়ে চেনতানাশক ইনজেকশন দিয়ে পুঁজ বের করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই নাফিসার কথা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিকেল ৪টার দিকে সে মারা যায়।
ভুল চিকিৎসায় নাফিসার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে খায়ের বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ চিকিৎসকরা নাফিসার পায়ে ভুল ইনজেকশন পুশ করেছেন। এ জন্য সুস্থ একটা মেয়ে হঠাৎ করেই মারা গেছে। ’
হামলা প্রসঙ্গে আবুল খায়েরের বন্ধু যুবরাজ দাস বলেন, ‘নাফিসার এমন মৃত্যুতে তার স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতালে হালকা ভাঙচুর করেন। রাতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমরা হাসপাতালে যাই। কিন্তু এ সময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে নিয়ে আমি এখন ওসমানী হাসপাতালে এসেছি।
তবে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আওলাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওই শিশুকে ঠিকঠাক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে দুপুরে খাবারের পর তার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হয়। এরপর সে মারা যায়। ’ খাবারে কোনো সমস্যা হয়েছিল কী না তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
স্বজনদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালালে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের থামাতে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী আহতও হয়েছেন। ’
এ বিষয়ে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। মারা যাওয়া শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’