বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদী বাংলাদেশের মেজরকার্প জাতীয় মাছের (রুই-Labeo rohita, কাতলা-Catla catla, মৃগেল- Cirrhinus mrigala, কালিবাউশ- Labeo calbasu) একটি অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। হালদায় চলছে কার্পজাতীয় মাছের ভরা প্রজনন মৌসুম।
শনিবার হালদা নদীর মদুনাঘাট থেকে শুরু করে সাত্তারঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন স্পনিং গ্রাউন্ডের অর্থাৎ ডিম ছাড়ার স্থান যেমন মদুনাঘাট, রামদাশমুন্সির ঘাট, মাছুয়াঘোনা, নোয়াহাট, কান্দরআলীহাট ও সাত্তারঘাট এলাকায় পানির নমুনা সংগ্রহ করে সরাসরি হালদা নদীতে বসে পরীক্ষা করে দেখা যায়, পূর্ণজোয়ারের সময় হালদা নদীতে গড়ে ০.৫ পিপিটি লবণাক্ততার উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছে। স্বাদুপানিতে লবণাক্ততা স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে ০.৫ পিপিটি বা তার কম। হালদার পানির বর্তমান লবণাক্ততা আদর্শ মানের মধ্যে রয়েছে।
হালদা নদী গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। পানির পিএইচ এর গড়মান ৭.৬ আদর্শ মানের (৬.৫-৮.৫) মধ্যে রয়েছে। তবে পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। হালদায় আজকের পানির গড় তাপমাত্রা ৩১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় (২২ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বাড়ায় পানির তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা বেড়েছে। বর্তমানে চতুর্থ জোঁ অর্থাৎ অমাবস্যার জোঁ চললেও বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল নেমে না আসায় হালদায় বর্তমানে মা মাছের ডিম ছাড়ার অনুকুল পরিবেশ নেই। অনুকূল পরিবেশ না পেলে এই জোঁ'তে মা মাছ পূর্নাঙ্গ ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা নেই।
পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢল নামলে হালদার জলজ বাস্তুতন্ত্রে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং আগামী মাসের অর্থাৎ জুনের প্রথম সপ্তাহে (১ থেকে ৬ জুন) পূর্ণিমার জোঁ অথবা সর্বশেষ অমাবস্যার জোঁ'তে (১৫ থেকে ২০ জুন) পুরাদমে ডিম ছাড়বে কার্পজাতীয় মা মাছ।