বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে হত্যা করে তার পেট চিরে বাচ্চা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে আরেক নারীর বিরুদ্ধে। খুন হওয়া ওই ৩৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সান্তা ক্যাটারিনা প্রদেশের ক্যানেলিনহা শহরে।
জানা যায়, ২৭ বছর বয়সী রোজালবার সঙ্গে ২৪ বছর বয়সী ফ্ল্যাভিয়া গোডিনহো মাফরার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। একটি স্কুলে পড়াতেন নিহত মাফরা। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট তাকে শহরের এক প্রান্তে একটি পুরাকীর্তির স্থানে ঘুরতে যেতে প্রলুব্ধ করেন রোজালবা। সেখানে যাওয়ার পর একটি নির্জন স্থানে মাথায় একের পর এক ইটের আঘাতে মাফরাকে হত্যা করেন তিনি।
আঘাতের পর আঘাতে মাফরা নিস্তেজ হয়ে পড়লে একটি ধারালো
ছুরি বের করেন রোজালবা। পরে সেই ছুরি দিয়ে তিনি মাফরার পেট চিরে ফেলেন এবং পেটের ভেতর
থেকে ৩৬ সপ্তাহের নবজাতকটিকে বের করে আনেন। পরে মাফরার মরদেহটি একটি চুল্লির ভেতর লুকিয়ে
বাচ্চাটি নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
নৃশংস এ ঘটনার পর রোজালবা তার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে
নবজাতকটির প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতালে যান। এর কিছুদিন আগেই প্রেমিককে রোজালবা
জানিয়েছিলেন, তিনি সন্তানসম্ভবা। তাই প্রেমিকও নবজাতকটিকে নিজের সন্তান ভেবেছিলেন।
হাসপাতালে গিয়ে কর্মীদের কাছে রোজালবা দাবি করেন, একটু আগেই তিনি বাচ্চাটির জন্ম দিয়েছেন। এখন এই বাচ্চার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু রোজালবার আচরণ ও শারীরিক সামর্থ্য দেখে সন্দেহ হয় হাসপাতালের কর্মীদের। তাই তারা ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে পুলিশে খবর দেয়। সম্প্রতি হত্যাকাণ্ড ও বাচ্চা চুরির ঘটনায় রোজালবা মারিয়া গ্রিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই নারীকে ৫৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ব্রাজিলের একটি আদালত।
অন্যদিকে এ ঘটনার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র না থাকায়
সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হওয়া রোজালবার প্রেমিককে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
১৫ ঘণ্টার শুনানিতে আদালতকে রোজালবা জানান, মাফরাকে হত্যা পরিকল্পনাই শুধু নয়, হত্যার পর বাচ্চাটিকে কিভাবে পেট থেকে বের করে আনবেন তা নিয়েও বিস্তর পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। অপেক্ষা করছিলেন, মায়ের গর্ভে বাচ্চাটি পরিণত হওয়ার জন্য।