দিনাজপুরে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে সতিনসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও একজনকে আমৃত্যূ কারাদণ্ড ও একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ মে) বিকেল ৩টার দিকে দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম রেজাউল বারী এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ সুজাপুর গ্রামের সাধনানন্দ চৌধুরীর স্ত্রী প্রতিমা রানী চৌধুরী (৪৫), তার ছেলে আকাশ চৌধুরী (২৭) এবং কাটাবাড়ী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র মহন্তের ছেলে কাজল মহন্ত (৩১)
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- সাধনানন্দ চৌধুরী (৬৩)। চকচকা গ্রামের রবীন্দ্রনাথ দাশের ছেলে জীবন চন্দ্র দাসকে (৩০) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার দক্ষিণ সুজাপুর গ্রামের সাধনানন্দ চৌধুরী তার প্রথম স্ত্রী তপতী রানী চৌধুরীর সঙ্গে সংসার করাকালীন তার বিনা অনুমতিতে প্রতিমা রাণী চৌধুরীকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রী তপতী রানীকে সাধনানন্দ চৌধুরী ভরণপোষণ দিতেন না। ফলে পরিবারে প্রতিনিয়িত কলহ লেগেই থাকত।
২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল রাত ৯টার পর থেকে স্বামী, সতিন ও সতিনের ছেলেসহ পাঁচজন মিলে তপতী রানীকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তারা। পরে উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রামের একটি বাঁশবাগানে নিয়ে মরদেহ আগুন ধরিয়ে দেন।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শুভনন্দ চৌধুরী বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগ দেন। মামলার চারজন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালতে মামলাটি চলাকালীন ২২ জন সাক্ষ্য দেন।
মামলার বাদী শুভনন্দ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর পর আমার মায়ের হত্যার ন্যায় বিচার পেলাম। আমি আশা করেছিলাম মামলার সব আসামির ফাঁসি হবে। কিন্তু দুজনের হয়নি, তারপরও এ রায়ে আমি খুশি। এই মামলায় যারা আইনি সহযোগিতা করেছেন সকলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়।