
গাজীপুর মেট্রোপলিটন
বাসন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী ব্যাবসায়ী
রকিব সরকার দুই মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে পবিত্র ওমরা পালন শেষে রোববার দেশে ফিরেছেন।
সকাল পৌনে দশটার দিকে তিনি ঢাকায় হযরত শাহজালাল (রাঃ) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তিনি
নামেন। সেখান থেকে ঢাকায় তার বাস ভবনে চলে যান। তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রকিব সরকার
বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো আইনিভাবেই
মোকাবেলা করবো। সত্যের জয় হবে। আমি কোন অপরাধ করিনি। সকালে স্বামীকে ফুল দিয়ে বরণ করে
নেয়ার একটি ছবি মাহি তার ফেসবুকে দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ লিখে পোষ্ট করেন।
এই বিষয়ে জানতে
চাইলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি দেশে এসেছেন
কিনা বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তার বিরুদ্ধে যেহেতু মামলা আছে সেহেতু আইনানুগ ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।
এর আগে শনিবার
সকালে ওমরা পালন শেষে ঢাকায় আসেন তার স্ত্রী মাহিয়া মাহি। বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর
মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে বাসন থানায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে কারাগারে
পাঠানো হয়। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে তাকে গাজীপুর
জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। পরে বিকাল ৫ টার দিকে মাহিয়া মাহির আইনজীবীরা আদালতে তার জামিন
আবেদন করলে আদালত মাহিয়া মাহিকে জামিন প্রদান করেন। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি কারাগার
থেকে মুক্তি লাভ করেন।
কারামুক্ত হয়ে
তিনি তাদের ফারিশতা রেষ্টুরেন্টের সামনে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। সেখানে তিনি বলেন,
তাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ তার সঙ্গে মানবিক আচরণ করেনি। তিনি এক গ্লাস পানি চাইলেও
পুলিশ তাকে এক ঘন্টা পর পানি দেয়।
তিনি পুলিশকে
বলেছেন, নয় মাসের অন্তঃসত্তা এবং অসুস্থ্য প্রচন্ড গরমে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তখন পুলিশ
তাকে বলছিল এভাবে যেতে হবে। তারপরও তার প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়। বিমান বন্দরে কারো
সাথে কথা পর্যন্ত বলতে দেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, ফেসবুক লাইভে তিনি পুলিশ প্রশাসন
নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি। তিনি একজন ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি আশংকা প্রকাশ
করে বলেন, পুলিশ তার সঙ্গে যে আচরণ করেছে তার স্বামী দেশে আসলে তার সঙ্গে আরো বেশি
খারাপ আচরণ ও হয়রানি করা হতে পারে। ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলার কারণে তিনি ক্ষমা চেয়ে
দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকে সরে যাননি। সুষ্ঠু
তদন্ত সাপেক্ষে তিনি এসব ঘটনার বিচার দাবি করেন। তিনি দাবি করেন অন্যায়ভাবে তাদের গাড়ির
শোরুমে হামলা ও ভাংচুর করা হলো অথচ পুলিশ উল্টো আমাদের এবং আমাদের কর্মচারীদের নামে
মামলা দিয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তবে তিনি কারা কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদ
জানান। কারাকর্তৃপক্ষ তাকে অনেক সম্মান দেখিয়ে মানবিক আচরণ করেছেন বলেও জানান।
রকিব সরকারের
পুরাতন তিন মামলা সচল হচ্ছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম
শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংএ বলেন, রকিব সরকারের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলা রয়েছে।
মামলা গুলির ঘটান সত্য কিন্তু ওইসব মামলার স্বাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়া সেসব মামলা পুলিশ
ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছিল। পুলিশ যে কোন সময় মামলাগুলি সচল করতে পারে স্বাক্ষ্য প্রমাণের
ভিত্তিতে। আমরা মামলাগুলি খতিয়ে দেখছি। মামলা গুলির কিছু স্বাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
মামলা গুলি হচ্ছে- জয়দেবপুর থানার মামলা নং ৭১, তারিখ ১২-১০-২০১৭, জয়দেবপুর থানার মামলা
নং ৫৯, তারিখঃ ০১-১০-২০১৭ ও জয়দেবপুর থানার মামলা নং ১৪৭, তারিখঃ ২৭-০৪-২০১৭।