দেশে পেঁয়াজ সংকটকালিন সময়ে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সফলতা পেয়েছে মেহেরপুর জেলার চাষীরা। অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়াই গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে চাষীরা। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বারি-৫ জাতের নতুন উদ্ভাবিত এ জাতের পেঁয়াজ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে পেঁয়াজের ঘাটতি দূর করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক লাভবান হবেন এ জেলার চাষীরা।
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আশার আলো দেখাচ্ছে এ জেলার চাষীদেরকে। জেলায় কৃষি বিভাগ থেকে প্রায় ১৭০০ জন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য সরকারিভাবে বিনামূল্যে বীজসহ নানা উপকরণ বিতরণ করেন। ইতিমধ্যে চাষীরা বীজতলা শেষে পেঁয়াজ রোপন করেছে। বর্তমানে পেঁয়াজের গুটি নেওয়া শুরু হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে চাষীরা পেঁয়াজ উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করতে পারবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ২৩০হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন বারি-৫ জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। চলতি বছর জেলায় ৬৯০০টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১২২ কোটি টাকা।
তবে কৃষকরা বলছে, পেঁয়াজের চারা রোপনের তিন মাসের মধ্যে পেঁয়াজ বাজারজাত করা যায়। গ্রীষ্মকালীন বারি-৫ জাতের পেঁয়াজে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ১২০ থেকে ১৩০ মন পেঁয়াজ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সকল খরচ বাদ দিয়ে দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবেন বলেও জানান তারা।
মেহেরপুর সদর উপজেলার পেঁয়াজ চাষী জানান, গতবার পরীক্ষামূলক ভাবে এক বিঘা জমিতে বারি-৫ চাষ করেছিলাম। তাতে আমার ১০০ মন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল। এবার আমি তিনবিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি দাম ভালো থাকলে অনেক লাভবান হবো।
একই উপজেলার আরেক চাষী বলেন, এই পেঁয়াজ চাষটা অসময়ের চাষ আমাদের গ্রামে গতবার অনেকেই পেঁয়াজ চাষ করেছিলো তারা ভালো লাভবান হয়েছে। তাই এবার আমি এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। চাষ থেকে শুরু করে সমস্ত খরচ বিঘাতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। আশা করি এবছরে আমিও ভালো লাভবান হব।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শামসুল আলম জানান, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে চাষীদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনটি ধাপে জেলায় ১৭০০ চাষীদের মাঝে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। আশা করি প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫ থেকে ৩০ টন ফলন পাব। জেলা চাহিদা মিটিয়েও বাইরের জেলার চাহিদা মেটাতে সম্ভব হবে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে আশার আলো হয়ে এসেছে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে নানা মুখে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার এমনটাই মনে করে কৃষকরা।