বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় ও প্রযুক্তির বিকাশে ফলে ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে জনপ্রিয় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা। একটা সময় ছিল গ্রাম থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত শিশু ও যুবকরা পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অভ্যস্থ ছিল। একটু অবসরেই দলবেঁধে খেলতো নানা প্রকারের খেলা। বাড়ির উঠান থেকে শুরু করে রাস্তার আনাচে-কানাচে, খোলা মাঠে কম পরিসরেই খেলা যেত।
বর্তমান সময়ে শহরের শিশুরা ঘরের এক কোণে বসে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইজে ভিডিও গেম, কার্টুন নিয়ে সময় পার করে থাকে। এর ফলে তাদের মেধার বিকাশও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এক সময় গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা ও বয়স্ক ব্যক্তিরা তাদের নানান কর্মব্যস্ততার ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের খেলা করে সময় কাটাতেন। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কানামাছি, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুটি, ঘোড়া দৌড়, রুমাল চুড়ি, ফুটবল, নৌকা বাইচ, লবণ কোঠা, বরফ পানি, কানামাছি, গোল্লাছুট, চারগুটি, লাঠি খেলা, দীর্ঘ লাফ, সাত পাতা, ফুল টোক্কা, মোরগ যুদ্ধ, খেলা ছিল অন্যতম বিনোদনমূলক, স্বাস্থ্য সচেতনমূলক ও প্রতিভা বিকাশের অন্যতম। এসকল খেলা আমাদের সংস্কৃতি হিসাবেও বিশেষ পরিচিত। এসব খেলার কথা এখন শুধু মুখে মুখেই শোনা যায়।
পটুয়াখালীর বাউফল সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক প্রভাষক শিখা ব্যানার্জি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ফলে দিন দিন খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে গ্রামের মানুষ বেকারত্ব ফলে প্রতিনিয়ত শহর বসবাসের বাধ্য হচ্ছে শহরে খেলার মাঠ গ্রামের তুলনায় আনেক কম, শিশুদের নানান ইলেকট্রিক ডিভাইজ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, স্কুল কলেজগুলো বছরের কোন এক সময় কয়েকদিনের জন্য ক্রীড়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে, এরপরে সারা বছরে আর তাদের কোন খেলার আয়োজন চোখে পরে না। শিখা ব্যানার্জি আরো বলেন, বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানো যায় এসব খেলাধুলায় যুক্ত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে পরিবারের উচিত তাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলা এসব খেলার প্রতি উৎসাহিত করা।
দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা ও এবং আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রযুক্তির দাপটে গ্রামীণ এসব খেলাধুলার দিন দিন বিলুপ্ত হতে হতে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বায়নের এযুগে প্রযুক্তির কল্যাণে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের গোটা বিশ্ব। কিন্তু হারিয়ে গিয়েছে বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যবাহী বিনোদনমূলক এসব খেলা।