আজঃ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : পানিতে ডুবে ৬ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৭ মে ২০২১ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মে ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদীর পানি বেড়ে গেছে। এ কারণে জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় পৃথক স্থানে পানিতে ডুবে মারা গেছে পাঁচ শিশু।

বুধবার (২৬ মে) ইয়াসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি। ডুবে গেছে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি।

১. বরিশালের বাকেরগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ডুবে ২ শিশু মারা গেছে। বুধবার (২৬ মে) উপজেলার পৃথক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত শিশুরা হলেন, সুমাইয়া আক্তার (৩) উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমারা গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে। আজওয়া আক্তার (৩) গারুরিয়া ইউনিয়নের রুনসী পশুরি গ্রামের আজগর আলীর মেয়ে ।

২. বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের খাউলিয়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৬ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার খাউলিয় ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত জিনিয়া আক্তার (৪) চালিতাবুনিয়ার নির্মাণ শ্রমিক কালাম গাজীর মেয়ে।

৩. নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে লিমা আক্তার (৭) নামের এক শিশু।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল পর্যন্ত নিখোঁজ শিশুটির কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন।

(৭) সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে।

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, এ সংবাদ পেয়ে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লিমাকে খোজা হচ্ছে।

৪. ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বিষখালী নদীর পানি বেড়ে গেছে। এ সময় পনি ডুবে মারা গেছে দুই শিশু। বুধবার (২৬ মে) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার মেডিকেল মোড় সংলগ্ন ও বড়ইয়া এলাকায় পৃথক এই ঘটনা ঘটে।

৫. রাজাপুরে ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিষখালী নদীতে বেড়িবাঁধ না থাকায় পানি ঢুকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের মাছ।

৬. মোংলায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আশপাশের উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পশুর নদীর বাঁধ সংলগ্ন কানাইনগর, চিলা ও জয়মনি এলাকার চারশতাধিক বসতঘর তলিয়ে গেছে। চিংড়িসহ অসংখ্য মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলের আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে কেউ আসেননি

অতি জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ২৭টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলো হলো- আশাশুনি, শ্যামনগর, দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা, মোংলা, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, বরগুনা সদর, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, আমতলী, পটুয়াখালী সদর, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ, কলাপাড়া, চরফ্যাশন, মনপুরা, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, ভোলা সদর, তজুমদ্দিন, হাতিয়া, কমলনগর ও রামগতি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকদের অনকূলে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী ও অর্থ বরাদ্দ দেয়া আছে।


আরও খবর
কপালের বলিরেখা দূর করার উপায়!

শুক্রবার ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

অভিযানেও স্বস্তি ফেরেনি চালের বাজারে

শুক্রবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৪




জলদস্যুর কবলে জাহাজ : জিম্মি ২৩ নাবিকের ১১ জনই চট্টগ্রামের

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুরা বাংলাদেশের পতাকাবাহী এম ভি আবদুল্লাহ নামের জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এটিকে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জিম্মি জাহাজের ক্রুদের পরিচয় জানা গেছে। এদিকে, পণ্যবাহী জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। মঙ্গলবার (মার্চ ১২) দুপুর ১টার দিকে জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠীটির কর্তৃপক্ষ।

আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে কয়লাবোঝাই জাহাজটির গন্তব্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে। ওই জাহাজের ক্রু লিস্ট থেকে জানা যায়, এম ভি আবদুল্লাহর মাস্টার বা ক্যাপ্টেন  হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের রাশেদ মোহাম্মদ আব্দুর, চিফ অফিসার হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রামের খান মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ এবং সেকেন্ড অফিসার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের চৌধুরী মাজহারুল ইসলাম।

সেই সঙ্গে থার্ড অফিসার হিসেবে রয়েছেন ফরিদপুরের ইসলাম মো. তারেকুল, ডেক ক্যাডেট হিসেবে আছেন টাঙ্গাইলের হোসাইন মো. সাব্বির।

চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে রয়েছেন নওগাঁর শাহিদুজ্জামান এ এস এম, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন খুলনার ইসলাম মো. তৌফিকুল, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন নেত্রকোণার উদ্দিন মো. রোকন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের আহমেদ তানভীর, ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসেবে আছেন লক্ষ্মীপুরের থান আইয়ুব, ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে আছেন উল্লাহ ইব্রাহিম খলিল, এবিল সি-ম্যান (নাবিক) হিসেবে আছেন নোয়াখালীর হক মোহাম্মদ আনোয়ারুল, চট্টগ্রামের রহমান মো. আসিফুর, চট্টগ্রামের হোসাইন মো. সাজ্জাদ, অর্ডিনারি সি-ম্যান (সাধারণ নাবিক) হিসেবে আছেন নাটোরের মোহাম্মদ জয়, সিরাজগঞ্জের হক মো. নাজমুল, ওয়লার হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের হক আইনুল, চট্টগ্রামের শামসুদ্দিন মোহাম্মদ, বরিশালের হোসাইন মো. আলী।

এছাড়া ফায়ারম্যান হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের শাকিল মোশাররফ হোসেন, চিফ কুক হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের ইসলাম মো. শফিকুল, জেনারেল স্টুয়ার্ড হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের উদ্দিন মোহাম্মদ নূর এবং ফাইটার হিসেবে আছেন নোয়াখালীর আহমেদ মোহাম্মদ সালেহ।

এদিকে, জিম্মি এক নাবিক জানিয়েছেন, জাহাজটিকে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নেয়া হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ার উপকূল থেকে জাহাজটি ৫০০ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।

জাহাজে থাকা ওই নাবিক আরও জানান, প্রায় শতাধিক সশস্ত্র জলদস্যু দ্রুতগতির ছোট ছোট বোটে করে প্রথমে এম ভি আবদুল্লাহকে ঘিরে ফেলে। পরে তারা জাহাজে উঠে এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ সময় নাবিক ও ক্রুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে জলদস্যুরা কোনো নাবিকের ওপর হামলা চালায়নি বলে জানান ওই নাবিক।

জাহাজটিকে সোমালিয়া উপকূলে নেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি নাবিকদের একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদকে দিয়ে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা কোনো ধরনের মুক্তিপণ দাবি করেনি বলেও জানান জিম্মি ওই নাবিক।

এ বিষয়ে কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জাহাজটি আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজের ২৩ জন নাবিক নিরাপদে আছেন।

ঘটনাটি জানার পর নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান ওই শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে যোগাযোগ না করেই কীভাবে  নাবিকদের অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।

গোল্ডেন হক নামের জাহাজটি কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং করপোরেশনের বহরে যুক্ত হওয়ার পরে এর নাম হয় এম ভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি ১৯০ মিটার লম্বা এই জাহাজটি গত বছর এসআর শিপিংয়ের বহরে যুক্ত হয়। এরপর সাধারণ পণ্য পরিবহন করে আসছিল জাহাজটি।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং ২০০৪ সালে তাদের প্রথম জাহাজ কেনে। এমভি ফাতেমা জাহান ছিল তাদের প্রথম জাহাজ। দেশে এখন নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ৫২। এগুলোর মধ্যে ২৩টি কেএসআরএম গ্রুপের। আর এক দশকেই সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে জাহাজ পরিচালনা ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে গ্রুপটি। কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের আরেকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কেএসআরএম।

এদিকে, ভারত মহাসাগরে কয়েক দশক ধরে বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এ কারণে এ জলপথ ব্যবহার করে পরিচালিত পণ্য পরিবহন ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে। তবে জলদস্যুদের কাছে বিষয়টি যতটা না ছিনতাই, তার চেয়ে বড় ধরনের আয়ের উৎস হিসেবে বিষয়টিকে দেখছে তারা। বিভিন্ন সময় দস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া নাবিকেরা এমনটাই জানিয়েছে।

এর আগে, ২০১১ সালের মার্চে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয় বাংলাদেশি ২৬ নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জাহান মনি। তিন মাস পর মুক্ত হয়ে জাহাজটি সোমালিয়া থেকে ওমানের সালালা বন্দরে যায়। একটি ছোট উড়োজাহাজে করে সোমালিয়ার জলদস্যুদের মুক্তিপণের টাকা পৌঁছে দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর তা টেলিফোনে জানান জাহাজটির ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফরিদ।


আরও খবর



প্রথমবারের মতো মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন সৌদি তরুণী

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

অতি রক্ষণশীল মুসলিম দেশ সৌদি আরবের এক তরুণী এবার ব্যতিক্রমী সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্ব সুন্দরী নির্বাচনের অন্যতম মর্যাদাকর প্রতিযোগিতা মিস ইউনিভার্সে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন তিনি। চলতি বছরের আসরে ২৭ বছর বয়সী সৌদি মডেল রুমি আলকাহতানি অংশ নেবেন। খবর ইন্ডিয়া টুডে।

আলোচিত এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় জাতীয় পতাকা নিয়ে অংশগ্রহণের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এই ঘোষণা দেন রুমি । সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সৌদি প্রতিনিধি হিসেবে ওই মডেল মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার মঞ্চে যাচ্ছেন।

রুমি এমন সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিষয়ে অভিজ্ঞ। অনলাইন এই ইনফ্লুয়েন্সারের ইনস্টাগ্রামে ১০ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি বলেছেন, এ বছর বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনি।

আরবি বর্ণমালাতে লেখা ইনস্টাগ্রাম পোস্টে আলকাহতানি বলেছেন, মিস ইউনিভার্স-২০২৪ প্রতিযোগিতায় সৌদি আরবের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। আর এর মাধ্যমে বিশ্বের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতায় সৌদি আরব প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছে।


সেই পোস্টের সাথে একটি ছবিও জুড়ে দিয়েছেন সৌদি তরুণী। বাম হাতে সৌদি আরবের পতাকা তুলে ধরা সেই ছবিতে তাকে ঝলমলে গাউন, মাথায় মুকুট এবং মিস ইউনিভার্স সৌদি আরব লেখা স্যাস পরা অবস্থায় দেখা যায়।

রাজধানী রিয়াদে জন্ম নেয়া আলকাহতানি এর আগেও সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিনি কয়েকটি বৈশ্বিক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর মধ্যে সর্বশেষ গত কয়েক সপ্তাহ আগে মালয়েশিয়ায় মিস এবং মিসেস গ্লোবাল এশিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।


আরও খবর



রমজানের প্রথম ১০ দিন যে দোয়া পড়বেন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

মাহে রমজানের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য হলো এ মাসের তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রত্যেক অংশেই আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের জন্য নিজের অনুগ্রহ নাজিল করেন। এ বিষয়ে হজরত সালমান ফারসি রা. থেকে বর্ণিত

তিনি বলেন, রাসূল সা. শাবান মাসের শেষ দিন আমাদের মাঝে খতিব হিসেবে দাঁড়ালেন, বললেন (মাহে রমজান) এমন একটি মাস যার প্রথম ভাগ রহমত, মধ্যবর্তী ভাগ মাগফেরাত বা ক্ষমা আর শেষ ভাগে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয়। অর্থাৎ রমজান মাসের ৩০ দিনের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাতের। (সহিহ ইবনে খুজাইমা, ১৮৮৭)

এ মাসে মুমিনকে যেসব বিষয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে তম্মধ্যে অন্যতম একটি হলো দোয়া কবুল। মহানবী সা. বলেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ন্যায়পরায়ণ বাদশা, রোজা পালনকারীযতক্ষণ না সে ইফতার করে এবং মজলুম। (তিরমিজি, হাদিস, ৩৫৯৮)

দোয়াকে ইবাদতের মূল বলা হয়েছে। এ কারণে দোয়া ছাড়া ইবাদত অসম্পূর্ণ থাকে। আর  বিশেষ সময়গুলোতে আল্লাহর কাছে উপযুক্ত দোয়া পড়া সুন্নত।

রমজানের প্রথম ১০ দিন যেহেতু রহমত নাজিল হয়, তাই এ সময় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি রহমত কামনা করে দোয়া করা যেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে কোরআনে বর্ণিত এই দোয়াটি পড়া যেতে পারে।দোয়াটি হলো-

وَقُل رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

উচ্চারণ: ওয়া কুর রব্বিগফির ওয়ার হাম ওয়া আনতা খইরুর র-হিমীন।

অর্থ: আর বলুন, হে আমার রব! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আর আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সূরা মুমিনুন, আয়াত, ১১৮)

অথবা এই দোয়াটিও পড়া যেতে পারে

رَبَّنَاۤ اٰتِنَا مِنۡ لَّدُنۡکَ رَحۡمَۃً وَّ هَیِّیٴۡ لَنَا مِنۡ اَمۡرِنَا رَشَدًا

উচ্চারণ: রব্বানা আ-তিনা মিল্লাদুনকা রহমাহ, ওয়াহায়্যিলানা মিন আমরিনা রশাদা।

অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আপনার পক্ষ থেকে আমাদের অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন। (সূরা কাহফ, আয়াত, ১০)


আরও খবর
ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




ছাত্রকে গুলি করা সেই শিক্ষকের বাসা ‘মিনি অস্ত্রাগার’

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে এক শিক্ষার্থীকে গুলিবিদ্ধ করার পর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে শিক্ষক রায়হান শরীফের নানা অপকর্মের তথ্য। তিনি নিজের কাছে রেখেছেন দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র। এসব অস্ত্র দিয়েই তিনি মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের ভীতি প্রদর্শন করতেন এমন অভিযোগ রয়েছে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের। শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর রায়হান শরীফের বাসায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

সিরাজগঞ্জ জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন বলেন, রায়হান শরীফের বাসা থেকে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হবে।

গতকাল সোমবার (৪ মার্চ) বিকালে মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ। ঘটনাস্থল থেকে তাকে অস্ত্রসহ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটি কোর্সের ভাইভা চলছিল। তখন শ্রেণিক্ষকে ৪৫ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। হঠাৎ সেখানে ঢুকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গুলি ছুড়লে তা তমালের ডান পায়ে বিদ্ধ হয়।

রাত সোয়া ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা মো. আবদুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার ছেলের সহপাঠীরা জানায় আমার ছেলের আইটেম পরীক্ষা কলেজের একাডেমি ভবনের চতুর্থ তলায় ডা. সামাউন নূরের কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। পরীক্ষা চলাকালে বিকাল ৩টার দিকে আসামি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের অহেতুক বকাবকি করেন। একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। গুলিটি আমার ছেলের ডান পায়ের ঊরুর ওপরের অংশে লেগে গুরুতর জখম হয়। সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে আসামি অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলেন, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস, তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। তৎক্ষণাৎ ছেলের বন্ধুরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিকে অস্ত্রশস্ত্রসহ থানায় নিয়ে যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অস্ত্র উদ্ধার : মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একাধিক শিকার্থী জানিয়েছেন, রায়হান শরীফের নানা অপকর্ম নিয়ে আগেও একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তিনি কলেজের ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়েছেন, ছাত্রদের প্রায়ই ভয়ভীতি দেখিয়ে আসতেন। এমনকি রায়হান শরিফ কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বে নিজস্ব ক্ষমতা দেখিয়ে ফরেনসিক বিভাগে তিনি ক্লাস নিয়ে থাকেন। তিনি প্রায়ই ক্যাম্পাসে পিস্তল নিয়ে চলাফেরা করেন।

ডিবি জানায়, মঙ্গলবার সকালে রায়হান শরীফকে নিয়ে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও একটি পিস্তল তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা দুটি পিস্তল অবৈধ। এছড়া রায়হান শরীফের বাসা থেকে ৮১ রাউন্ড গুলি, চারটি ম্যাগাজিন, দুইটি বিদেশি কাতা না, দশটি অত্যাধুনিক বারমিস ছুরি উদ্ধার করেছে ডিবি।

সহপাঠীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রায়হান শরীফের বিচার দাবিতে ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তারা আবার আন্দোলনে নামেন। কলেজের সামনের রাস্তা বন্ধ করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

শিক্ষার্থীকে গুলি করার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রের বাবা একটি মামলা দায়ের করেছেন। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে আরও একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরপর তাকে আদালতে পাঠানো হবে।


আরও খবর



আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

এ দিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাত্তরের ৭ মার্চ দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণ পরবর্তীতে স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজমন্ত্র হয়ে পড়ে। একইভাবে এ ভাষণ শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় বিধানের সম্ভাবনাও তৈরি করে। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের আহ্বানেই মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে বাঙালি।

২৫ মার্চের কালরাতে নৃশংস গণহত্যা শুরু করে পাকবাহিনী। পরে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ।

২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।

একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাক্সিক্ষত মুক্তির লক্ষ্যে।

১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চিন্তা, সাম্প্রদায়িকতার মানসিকতা ও দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের ভিত রচিত হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর তারই চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র-কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে গর্জে ওঠে উত্তাল জনসমুদ্র। লাখ লাখ মানুষের গগনবিদারী শ্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় সেদিন পত্ পত্ করে ওড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজের পতাকা। লক্ষ শপথের বজ্রমুষ্টি উত্থিত হয় আকাশে।

সেদিন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে। ফাগুনের সূর্য তখনো মাথার ওপর। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন। তিনি দরাজ গলায় তার ভাষণ শুরু করেন, ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি...।

এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতার মহাকাব্যের কবি ঘোষণা করেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম..., এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণ। এই স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি তার ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকান্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রীত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। আজো আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, আমি বলে দিতে চাই, আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোন কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।

বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সর্বশেষ দুটি বাক্য, যা পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধীনতার চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিক-নির্দেশনা ও প্রেরণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেন, রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয়বাংলা

ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তার একটি লেখায় বলেছেন, সাতই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক চিন্তাধারার পরিচয় দিয়েছেন। রণকৌশলের দিক থেকে এই ভাষণ অসাধারণ। এই বক্তৃতা এখনো মানুষকে শিহরিত করে।

তিনি বলেন, এই বক্তৃতার আগে রাজনৈতিক কর্মী ও জনসাধারণ স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা ঘোষণা করলে যে পাকিস্তানি সেনা শাসকরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তাঁদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়ে যাবে, সে বিষয়েও তিনি অবহিত ছিলেন।

আনিসুজ্জাামান বলেন, স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন কি না, এমন এক প্রশ্নর জবাবে বঙ্গবন্ধু নিউজউইকের এক সাংবাদিককে বলেছিলেন আমরাতো সংখ্যাগরিষ্ঠ। পশ্চিমাদের উপর নির্ভর করছে তারা বিচ্ছিন্ন হতে চায় কি না।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং সেই সভায় উপস্থিত তোফায়েল আহমেদ তার একটি লেখায় বলেন, বঙ্গবন্ধু তার চশমাটা সেদিন ডায়াসের উপর রেখে ১৯ মিনিটের যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তার পুরোটাই অলিখিত। একদিকে তিনি পাকিস্তানিদের প্রতি চারদফা শর্ত আরোপ করলেন, অন্যদিকে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলতে বললেন। ভাতে মারার কথা বললেন, পানিতে মারার কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাতই মার্চের আগে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম। একজন তাকে বললেন জনগণ কিন্তু সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা ছাড়া মানবে না। বঙ্গবন্ধু তাকে বললেন, তুমি তোমার কাজ কর। আমি তাদের নেতা, আমি তাঁদের পরিচালিত করবো, তারা আমাকে নয়।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরে ইতিহাসের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের পর গোটা বাংলাদেশে পাকিস্তনীদের পরিবর্তে বাঙালিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকে বিভিন্ন জায়গায় পূর্ব পাকিস্তান শব্দ মুছে বাংলাদেশ লিখে। তিনি বলেন, এ ভাষণের পর গোটা দেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় চলতে থাকে। এ ভাষণ গুটি কয়েক রাজাকার ছাড়া গোটা বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো।

রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু বাঙালি জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান নয়। এটি সব জাতির মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পরার দিক-নির্দেশনা।

দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

এছাড়াও এদিন বিকাল ৪ টায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে (তেজগাঁও) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


আরও খবর