বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো থেকে বেশিরভাগ দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। এমনকি অবরোধে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখার ঘোষণা দেওয়া পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহর মালিকানাধীন এনা পরিবহনের বাসগুলোও মহাখালী টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সারিবদ্ধভাবে বাসগুলো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এদিকে সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ অবরোধে বাস চলাচল সচল রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু অবরোধের প্রথম দিন অন্যান্য বাসের সঙ্গে এনায়েত উল্যাহর এনা পরিবহনের অসংখ্য বাস মাহাখালী বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহাখালী বাস টার্মিনালের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এনা পরিবহনের কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। শুধু এনা পরিবহন না, যাত্রী না পেলে লস দিয়ে, ঝুঁকি নিয়ে কোনো পরিবহনই চালাতে চান না মালিকরা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় সড়কে গাড়ির সংখ্যাও কম ছিল। বুধবারও দূরপাল্লার গাড়ি চলবে। আমরা অবরোধ মানি না।
তিনি দাবি করেন, ঢাকার মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের সবগুলো রুটেই দূরপাল্লার বাস চলছে।
তবে সায়েদাবাদ, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া, টিটিপাড়া ও আরামবাগ থেকেও দূরপাল্লার বেশিরভাগ বাসই ছেড়ে যায়নি বলে জানা গেছে। এদিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ টার্মিনালেও সুনসান নীরবতা দেখা গেছে। অন্য দিনের মতো হাঁকডাক চোখে পড়েনি।
সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে ইউনিক পরিবহন, হানিফ পরিবহন, ফাল্গুন পরিবহন, শ্যামলীসহ বেশ কিছু পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ দেখা গেছে। কিছু কাউন্টারে শাটার অর্ধেক নামানো দেখা গেছে। আর কিছু কিছু কাউন্টার খোলা থাকলেও বাস বন্ধ ছিল।
কোনো যাত্রী না থাকলেও একটি পরিবহনের কাউন্টারে দুজন টিকিট বিক্রেতাকে বসে থাকতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, মালিকের নির্দেশ কোনো গাড়ি ছাড়া হবে না। ভোর থেকে একটি বাসও এখান থেকে ছেড়ে যায়নি। এত দামি গাড়ি রাস্তায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় নেবে কে? তাই ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।
অন্যদিকে সড়কে যানবাহন কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অবরোধের সমর্থনে কাউকে জোরালো মিছিল ও পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে চিরচেনা যানজটও ছিল না। সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি ছিল রিকশা ও সিএনজির আধিক্য।